স্কুল-শিক্ষার্থীদের ওপর হোমওয়ার্কের চাপ কমাতে চীনে নতুন শিক্ষা আইন
অত্যাধিক হোমওয়ার্ক এবং স্কুল-পরবর্তী টিউটরিংয়ের চাপ কমানোর লক্ষ্যে একটি শিক্ষা আইন পাস করেছে চীন। শনিবার এই আইন পাস করে দেশটির স্থায়ী আইনসভা সংস্থা ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেস স্ট্যান্ডিং কমিটি।
এছাড়া, অভিভাবকদেরকে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে যাতে তারা শিশুদের বিশ্রাম এবং ব্যায়ামের জন্য যথাযথ সময় নিশ্চিত করে। এমনকি অনলাইনে যাতে তারা খুব বেশি সময় ব্যয় না করে, সে বিষয়েও লক্ষ্য রাখতে বলা হচ্ছে।
এর আগে এ বছরের আগস্টে ৬ ও ৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের লিখিত পরীক্ষা নিষিদ্ধ করে চীন। শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি হচ্ছে বলে সে সময় সতর্ক করেছিলেন কর্মকর্তারা। তাছাড়া, ইন্টারনেট এবং পপ কালচারের প্রতি শিশুদের 'আসক্তি' নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে গত বছর বেশ কিছু ব্যবস্থা নেয় চীন।
তবে, নতুন আইনের বিস্তারিত বিবরণ এখনও প্রকাশিত হয়নি। বিভিন্ন মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, অভিভাবকদেরকে নিজেদের সন্তানের নৈতিকতা, বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশ এবং সামাজিক অভ্যাস লালনে উৎসাহিত করতে নেওয়া হয়েছে এই পদক্ষেপ। দেশটির স্থানীয় সরকার এই আইনটি বাস্তবায়নে কাজ করবে। উল্লেখ্য, 'পাঠ্যক্রম বহির্ভূত কার্যক্রম' নিশ্চিতের জন্য তহবিল সরবরাহ করবে তারা।
এদিকে, সোশ্যাল মিডিয়া সাইট উইবোতে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পেয়েছে নতুন আইনটি। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বা অভিভাবকরা নিজেরাই এটি বাস্তবায়নে কাজ করবে কিনা সে বিষয়ে সন্দিহান অনেকেই।
"আমি সপ্তাহে ছয় দিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা অব্দি কাজ করি। এখন রাতে বাসায় আসার পর পারিবারিক শিক্ষা দেওয়ার কাজ করতে হবে আমাকে?" বলেন একজন ব্যবহারকারী। "কর্মচারীদের শোষণ করার পর তাদেরকে সন্তান নিতে বলতে পারবেন না আপনি," যোগ করেন তিনি।
জুলাই মাসে, টিউটরিংয়ের মাধ্যমে মুনাফা অর্জনকারী অনলাইন টিউটরিং সংস্থাগুলোর কার্যক্রম কঠোর নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে চীন। এছাড়া, টিউটরিং শিল্পে বিদেশী বিনিয়োগকেও সীমাবদ্ধ করেছে দেশটি। চীনের প্রাইভেট টিউটরিং সেক্টরটি প্রায় ১২০ বিলিয়ন ডলার সমমূল্যের।
সেসময় ধারণা করা হয়েছিল, সন্তানদের লালন-পালনের আর্থিক চাপ কমানোর লক্ষ্যে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। দেশটিতে গত বছর জন্মহার ছিল রেকর্ড পরিমাণে কম।
এছাড়া, শিক্ষাক্ষেত্রে বৈষম্যও একটি সমস্যা। সাধারণত, ধনী অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের শীর্ষ বিদ্যালয়ে ভর্তি করার জন্য হাজার হাজার অর্থ খরচ করে থাকে।
- সূত্র- বিবিসি