হাসিনা-শ্রিংলা বৈঠকে দুই বছরের রোডম্যাপ নিয়ে আলোচনা
দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে গত মঙ্গলবার বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে আলোচনা হয়েছে।
এদিন সফররত ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে এক বৈঠকে অংশ নেন। সেখানে উভয় দেশের সম্পর্ক আরও দৃঢ় করার উদ্যোগ হিসেবে দুই বছরের এক রোডম্যাপ নিয়ে- তাদের মধ্যে আলোচনা হয়।
ভারতের শীর্ষস্থানীয় দৈনিক- দ্য হিন্দু সূত্রে এব্যাপারে জানা গেছে।
ইতোপূর্বে, বাংলাদেশে রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করা শ্রিংলা বর্তমানে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর এক বিশেষ বার্তা নিয়ে দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে বাংলাদেশ এসেছেন।
হাসিনা-শ্রিংলা বৈঠকে, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে নানা অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা হয়।
সাম্প্রতিক সময়ে উভয় দেশ তাদের আন্তঃনদী পণ্য পরিবহন চুক্তি নবায়ন করেছে। এর আওতায় ত্রিপুরাকে অন্তর্ভুক্ত করে পণ্যবাহী নৌযান চলাচলও শুরু হয়েছে দু'দেশের মধ্যে। এ প্রেক্ষিতে সৌহার্দ্যের নিদর্শন স্বরূপ বাংলাদেশকে ১০টি রেলইঞ্জিন (লোকোমোটিভ) উপহার দিয়েছে ভারত। এছাড়া, উভয় দেশ আখাউড়া ও আগরতলার মধ্যে একটি রেল সংযোগ পরিকল্পনা চূড়ান্ত করার ব্যাপারেও আশা প্রকাশ করেছে।
অচিরেই খুলনার রামপালে ভারতীয় সহযোগিতায় নির্মিত ১৩২০ মেগাওয়াটের কয়লা ভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রও-আগামী বছর দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের অর্ধশত বার্ষিকী এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত-বার্ষিকী উদযাপনের ধারাবাহিকতায় উদ্বোধন করা হবে।
শেখ হাসিনাকে নরেন্দ্র মোদির বার্তা পৌঁছে দেন শ্রিংলা। এসময় তিনি জানান, ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী কোভিড-১৯ সঙ্কটের মধ্যেও বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সরাসরি সংযোগ অব্যাহত থাকুক, এমনটাই নিশ্চিত করতে চান। উচ্চ পর্যায়ের একটি সূত্রের বরাতে বার্তার বিষয়টি নিশ্চিত করে- দ্য হিন্দু।
সূত্রটি আরও জানায়, বৈঠকে কোভিড-১৯ মোকাবিলায় প্রতিষেধক এবং চিকিৎসা পদ্ধতি সহযোগিতার বিষয়টিও প্রাধান্য পেয়েছে।
মহামারির মধ্যেও উভয় দেশের ব্যবসায়ী, সরকারি কর্মকর্তা এবং চিকিৎসা কর্মীদের চলাচলে বিশেষ সংযোগ চালু বা 'ট্রাভেল বাবল' স্থাপনের প্রস্তাব দেন শ্রিংলা। অন্যদিকে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দুর্দশার কথা তুলে ধরেন। এবং 'অচিরেই তিনি মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসন' দেখতে আগ্রহী বলে জানিয়েছেন।
ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে বাংলাদেশি প্রধানমন্ত্রীর আলোচনায়, দুই দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট নিরাপত্তা সহযোগিতার বিষয়টিও উঠে আসে।
দ্য হিন্দু তাদের সূত্রটির বরাতে জানায়, মহামারির মধ্যে দীর্ঘদিন ভারতের কোনো কূটনৈতিকের সঙ্গে দেখা করেননি শেখ হাসিনা। তাই শ্রিংলার সঙ্গে বৈঠকের মাধ্যমে তিনি একটি বিশেষ সৌজন্যের নিদর্শন স্থাপন করেছেন।