বাইডেন মনে করেন, ইউক্রেনে ‘ঢুকে পড়তে পারে’ রাশিয়া
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মতে, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনের দিকে অগ্রসর হলেও 'পূর্ণ যুদ্ধের' দিকে এগোবেন না।
এক সংবাদ সম্মেলনে ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের হুমকি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে বাইডেন বলেন, "আমার অনুমান তিনি (ভ্লাদিমির পুতিন) অগ্রসর হবেন; কারণ তাকে কিছু একটা করতে হবে।"
তবে তিনি এ ব্যাপারে তার রুশ প্রতিপক্ষ পুতিনকে সতর্ক করে বলেছেন, পশ্চিমা শক্তিকে 'পরীক্ষা' করার জন্য রাশিয়াকে 'চরম মূল্য' দিতে হবে।
অন্যদিকে, মস্কো যেকোনো ধরনের আক্রমণ বা আক্রমণের পরিকল্পনার কথা অস্বীকার করলেও, তারা বাহিনী প্রস্তুত করছে বলে জানা গেছে। ইউক্রেন সীমান্তের কাছাকাছি প্রায় ১ লাখ সেনার উপস্থিতি রয়েছে বলে অনুমান করছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো।
সংবাদিকদের প্রশ্নে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের মন্তব্যের পর, ইউক্রেনের বিষয়ে মার্কিন অবস্থান সম্পর্কে এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দিয়েছে হোয়াইট হাউস। রাশিয়ার অবস্থান অনুমানের পর যুক্তরাষ্ট্রেরও ইউক্রেনে ছোট পরিসরে বাহিনী পাঠানোর পরিকল্পনা আছে কিনা জানতে চেয়েছিলেন গণমাধ্যমকর্মীরা।
এ ব্যাপারে বুধবার রাতে জারি করা এক বিবৃতিতে হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি জেন সাকি বলেছেন, "যদি রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর কোনো সদস্য ইউক্রেনের সীমান্ত পেরিয়ে ভিতরে চলে যায়, তবে এটি একটি নতুন আগ্রাসন হিসেবে বিবেচিত হবে। এ ধরনের আগ্রাসন জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র এবং আমাদের মিত্ররাষ্ট্রগুলোর কাছ থেকে দ্রুতই তীব্র এবং ঐক্যবদ্ধ প্রতিক্রিয়ার মুখোমুখি হবে।"
পশ্চিমা দেশগুলোর কাছে নানান ধরনের দাবি রেখেছে রাশিয়া। এরমধ্যে ইউক্রেনকে যেন কখনই ন্যাটোতে যোগদানের সুযোগ দেওয়া না হয়, এমন একটি দাবিও রয়েছে। সেইসঙ্গে দেশটি আরও জানিয়েছে, পশ্চিমাদের প্রতিরক্ষা জোটের সামরিক কার্যক্রমকে পোল্যান্ডসহ কেবল সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ করে রাখা উচিত।
এগুলোর মধ্যে বেশকিছু দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে পশ্চিমারা। এ কারণে গত সপ্তাহে পশ্চিমাদের সঙ্গে রাশিয়ার আলোচনাও ব্যর্থ হয়েছে বলে জানা গেছে।
২০১৩ বা ২০১৪ সালের দিকে ইউক্রেনের রুশপন্থী সরকারের বিরুদ্ধে জন সাধারণের প্রচণ্ড বিক্ষোভ দেখা দেয়। সেই বিক্ষোভে ইউক্রেনের তৎকালীন সরকারের পতন হয়, এবং তার জায়গায় ক্ষমতায় আসে তীব্র রুশবিরোধী ও পশ্চিমাপন্থী সরকার। ইউক্রেনে রুশ ভাষা নিষিদ্ধকরণসহ নানাধরণের রুশবিরোধী পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায় ২০১৪ সালের মার্চে ক্রিমিয়া দখল করে নেয় রাশিয়া।
পূর্ব ইউক্রেনের একাংশ নিয়ন্ত্রণকারী রুশপন্থী বিদ্রোহীরা ক্রিমিয়া দখলের ব্যাপারটিকে সমর্থন করে।
২০১৪ সালে ক্রিমিয়া অধিভুক্তির সময় রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর প্রকাশ্য হস্তক্ষেপে অন্তত ১৩ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছিল এবং কমপক্ষে ২ মিলিয়ন মানুষ তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছিল। সেই সংঘাত আবারও শুরু হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
- সূত্র: বিবিসি