শত কোটি টাকার রাশিয়ান খাবার ফেলে আসছে ম্যাকডোনাল্ড'স
রাশিয়া থেকে ম্যাকডোনাল্ড'স সরিয়ে নেওয়ায় মোটা অংকের ব্যবসায়িক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। একই সাথে নষ্ট হচ্ছে প্রচুর খাবার।
ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের প্রতিবাদে সাময়িকভাবে রাশিয়ায় নিজেদের রেস্টুরেন্টগুলো বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয় আমেরিকান মাল্টিন্যাশনাল ফাস্ট ফুড প্রতিষ্ঠানটি।
গত মাসে এ ঘোষণা দেওয়ার পর তারা ইউক্রেনেও নিজেরদের রেস্টুরেন্ট বন্ধ রেখেছে। দুই দেশে রেস্টুরেন্ট বন্ধ করে দেওয়ায় তিন মাসে ১২৭ মিলিয়ন ডলার ক্ষতি হবে ম্যাকডোনাল্ড'স এর।
তবে গেল মার্চে ম্যাকডোনাল্ড'স জানায়, দেশজুড়ে রেস্টুরেন্ট বন্ধ থাকলেও ৬২,০০০ রুশ কর্মীকে বেতন দেওয়া অব্যহত রাখবে তারা। বৃহস্পতিবার কোম্পানির সিইও ক্রিস কেম্পজিনস্কি আরো জানান, ম্যাকডোনাল্ড'স তাদের ইউক্রেনীয় কর্মীদেরও সহায়তা করছে। তিনি বলেন, "দুটি দেশেই আমরা কর্মীদের বেতন দিয়ে যাবো এবং বাড়তি সহায়তাও দিবো।"
কর্মীদের বেতন-ভাতা এবং বাড়তি সহায়তা দিতে ম্যাকডোনাল্ড'স এর খরচ হবে ২৭ মিলিয়ন ডলার। আর রেস্টুরেন্টে রয়ে যাওয়া খাবারদাবার এবং অন্যান্য উপকরণ ফেলে দেওয়ায় ক্ষতি হবে বাকি ১০০ মিলিয়ন ডলার।
এক বিবৃতিতে প্রতিষ্ঠানটি জানায়, "হিসাবে দেখা গেছে... রেস্টুরেন্ট সাময়িকভাবে বন্ধ থাকায় কোম্পানির সাপ্লাই চেইনে যেসব বস্তু রয়েছে সেগুলো ফেলে দেওয়ায় ক্ষতি হবে ১০০ মিলিয়ন ডলার।"
বছরের পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে ইউক্রেন ও রাশিয়ায় ম্যাকডোনাল্ড'স এর ভবিষ্যত পরিকল্পনা সম্পর্কে আপডেট জানানো হবে জানিয়েছেন সিইও কেম্পজিনস্কি।
একটি বিনিয়োগকারী নথি অনুযায়ী, গত বছর পর্যন্ত রাশিয়ায় ম্যাকডোনাল্ডসের রেস্টুরেন্ট সংখ্যা ৮৪৭টি এবং ইউক্রেনে ছিল ১০৮টি। সব মিলিয়ে ২০২১ সালে কোম্পানির মোট আয়ের ৯ শতাংশ এসেছে এই দুটি দেশ থেকে। ফলে রেস্টুরেন্ট বন্ধ করে দেওয়ার প্রভাব পড়েছে ম্যাকডোনাল্ডসের নেট আয়ের উপর। গত তিন মাসে ম্যাকডোনাল্ডসের নেট আয় কমেছে ২৮ শতাংশ।
এছাড়া অন্য সব জায়গায়ই ম্যাকডোনাল্ডসের বিক্রয় বৃদ্ধি পেয়েছে।
বৈশ্বিক পর্যায়ে গত ১৩ মাসে যেসব রেস্টুরেন্ট খোলা ছিল, তা থেকে গত তিন মাসে বিক্রি বেড়েছে ১১ দশমিক ৮ শতাংশ। তবে যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যবৃদ্ধির কারণে ম্যাকডোনাল্ডসের বিক্রয় কমেছে ৩ দশমিক ৫ শতাংশ।
বছরের প্রথম তিন মাসে ম্যাকডোনাল্ডসের পণ্যের দাম বেড়ে গিয়েছিল ৮ শতাংশ। সিইও কেভিন ওজান বলেন, "ভোক্তারা এই মুদ্রাস্ফীতি নিয়ে খুব চিন্তিত ছিল। তারা এনার্জি ও গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে চিন্তা করছিল।"
কিন্তু কেভিনের ভাষ্যে, মুদি দ্রব্যের দামও অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে, তাই ম্যাকডোনাল্ডসের এখানে কমই লাভ হয়েছে।
কেভিন বলেন, "আমরা এখনো অপেক্ষাকৃত নিম্ন শ্রেণীর ভোক্তাদের দিকে নজর রাখছি, যারা একটু কম দামে খাবার চান। খেয়াল রাখছি যে আমরা এখনো সঠিক দামে জিনিস দিতে পারছি কিনা।"
সূত্র: সিএনএন