মোজাম্বিকে সরকার ও বিরোধী দলের মধ্যে যুগান্তকারী শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর
মোজাম্বিকের প্রেসিডেন্ট ফিলিপ নিউসি ও রিনামো বিরোধী দলীয় নেতা ওসুফো মোমেদ দেশটিতে কয়েক দশক ধরে চলা সামরিক লড়াইয়ের আনুষ্ঠানিকভাবে অবসানের লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার একটি যুগান্তকারী চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন একথা জানায়। খবর এএফপি’র।
মোজাম্বিকের কেন্দ্রস্থলের গোরোনগোসা জাতীয় উদ্যানে চুক্তিটি স্বাক্ষর হয়।
সরাসরি সম্প্রচার করা এ অনুষ্ঠানে দেখা যায়, গোরোনগোসা উদ্যানে করা মঞ্চে শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর করার পর দুই নেতা পরস্পরকে জড়িয়ে ধরেন। সেখানে একটি সাদা কাপড়ে লেখা রয়েছে ‘শান্তি : সামরিক লড়াই অবসানের চূড়ান্ত চুক্তি।’
বৃহস্পতিবারের চুক্তি স্বাক্ষরের মধ্যদিয়ে রিনামোর মহান নেতা আফোনসো ধলাকামার উদ্যোগে শুরু হওয়া দীর্ঘ শান্তি আলোচনা প্রক্রিয়ার অবসান ঘটলো। মোজাম্বিকে সাধারণ নির্বাচনের মাত্র কয়েকমাস আগে এটা করা হলো। আগামী অক্টোবরে দেশটিতে নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। উল্লেখ্য, গত বছরের মে মাসে ধলাকামা ইন্তেকাল করেন।
ধলাকামার উত্তরসূরি রিনামোর নতুন নেতা মোমেদ বলেন, ‘আমরা আমাদের দেশের জনগণ ও বিশ্বকে এই মর্মে আশ্বস্ত করতে চাই যে আমাদের মতপার্থক্য দূর করার একটি উপায় হিসেবে সংঘাতের মানসিকতাকে আমরা কবর দিয়েছি।’
অপরদিকে নিউসি বলেন, ‘এই চুক্তি আমাদের দেশের ইতিহাসে নতুন যুগের সূচনা করেছে। এতে বলা হয়েছে সংঘাত নিরসনে মোজাম্বিকের জনগণের অস্ত্র ব্যবহার করা উচিত হবে না।’
নিউসি আরো বলেন, ‘এই চুক্তি অনুযায়ী আমরা দেশের স্থায়ী শান্তির ব্যাপারে করা আমাদের প্রতিশ্রুতি মেনে চলবো।’
তিনি বলেন, ‘১ আগস্ট এক নতুন শিশুর জন্ম হলো।’
উল্লেখ্য, ১৯৭৫ সালে পর্তুগালের কাছ থেকে মোজাম্বিকের স্বাধীনতা লাভের পরপরই রিনামো ফ্রিলিমো সরকারের বিরুদ্ধে দীর্ঘ ১৬ বছর গৃহযুদ্ধ করেন। ১৯৯২ সালে এ গৃহযুদ্ধ অবসানের আগে দীর্ঘ এ লড়াইয়ে প্রায় ১০ লাখ লোক প্রাণ হারায়।
১৯৯২ সালে রোমে শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরের পর বিদ্রোহীরা দেশের রাজনীতিতে প্রবেশ করে। এরফলে ১৯৯৪ সালে বহু-দলীয় নির্বাচনের পথ সুগম হয়।
ওই নির্বাচনে রিনামো (মোজাম্বিক ন্যাশনাল রিসিস্ট্যান্স মুভমেন্ট) হেরে যায়। পরবর্তীতে তারা আনুষ্ঠানিকভাবে দেশের বিরোধী দলের দায়িত্ব পালন করে।