এফএ কাপ জিতে ফিলিস্তিনের পতাকা ওড়ালেন ‘বাংলাদেশি’ হামজা
মাথা ভর্তি কোঁকরা চুল, চেহরায় সব সময় হাসি লেগেই থাকে। নামটা হামজা চৌধুরী হওয়ায় অনেকেই অনুমান করে নেন, তিনি বাংলাদেশি। হ্যাঁ, তিনি বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক। ২৩ বছর বয়সী এই তরুণ পেশায় ফুটবলার, খেলেন ইংলিশ ক্লাব লেস্টার সিটির হয়ে। দলটির ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এফএ কাপ জয়ের অংশীদার হয়েছেন হামজা।
যদিও লেস্টার সিটির এফএ কাপ জয়ে বিশেষ অবদান নেই হামজার। ম্যাচের একবারে শেষের দিকে (৮২তম মিনিটে) বদলি খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে নামেন তিনি। কয়েক মিনিট পর নিশ্চিত হয় তাদের শিরোপা। সতীর্থদের সঙ্গে উল্লাসে মাতেন হামজা।
বাংলাদেশের প্রথম ফুটবলার হিসেবে ফুটবল দুনিয়ার প্রাচীনতম টুর্নামেন্টের শিরোপা জিতলেন তিনি। হামজাকে নিয়ে আলোচনার বিষয়বস্তু অবশ্য এটা নয়। এফএ কাপের ফাইনালে পর উদযাপন করে অনেকের মন জয় করে নিয়েছেন ডিফেন্সিভ এই মিডফিল্ডার।
ফাইনাল জয়ের পর ফিলিস্তিনিদের প্রতি প্রকাশ্যে সমর্থন জানিয়েছেন লেস্টার সিটির যে দুজন ফুটবলার, তাদের একজন হলেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত হামজা চৌধুরী। ম্যাচের পর মুসলিম সতীর্থ ফরাসি ডিফেন্ডার ওয়েসলি ফোফানার সঙ্গে ফিলিস্তিনের পতাকা নিয়ে গোটা ওয়েম্বলি প্রদক্ষিণ করেন হামজা।
শেষ বাঁশি বাজার সঙ্গে সঙ্গে তারা ফিলিস্তিনি পতাকা ওড়াতে শুরু করেন। চেলসিকে ১-০ গোলে হারিয়ে শিরোপা জয়ের পর পুরষ্কার নেওয়ার সময়ও হামজার কাঁধে ছিল ফিলিস্তিনের পতাকা।
ইসরায়েলের চলমান ভয়াবহ আক্রমণের মুখে থাকা ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানাতে এই উদ্যোগ নেন হামজা ও ফোফানা। ইসরায়েলের আক্রমণে এখন পর্যন্ত ১৪০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন।
হামজার জন্ম ইংল্যান্ডে। স্বাভাবিকভাবেই ফুটবলের হাতখড়ি সেখানেই। দারুণ সম্ভাবনাময় এই ফুটবলার ইংল্যান্ডের হয়ে অনূর্ধ্ব-২১ ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপে খেলেছেন। লেস্টার সিটিতে অবশ্য আরও আগেই নাম লেখান তিনি। ২০১১ সাল থেকে লেস্টারের হয়ে বয়সভিত্তিক ফুটবল খেলা হামজা ২০১৫ সালে মূল দলে জায়গা করে নেন। মাঝে কয়েক বছর লোনে ইংল্যান্ডের তৃতীয় সারির ক্লাব বার্টন অ্যালবিয়নের হয়ে খেলেন হামজা।
ইংলিশ ফুটবলার হিসেবে পরিচিত হামজার নানা বাড়ি বাংলাদেশের হবিগঞ্জের বাহুবল থানার স্নানঘাট গ্রামে। তার মা রাফিয়ার জন্ম এই গ্রামে। বেড়ে ওঠা ইংল্যান্ডে হলেও বাংলাদেশের আলো-বাতাসের সঙ্গে পরিচিত তিনি। ছয় মাস বয়স থেকে বাংলাদেশে যাতায়াত শুরু হামজার। ২৩ বছরে ২০ বার বাংলাদেশে এসেছেন তরুণ এই ফুটবলার। সর্বশেষ গত বছর বাংলাদেশ ঘুরে গেছেন হামজা।