কে কীভাবে বিশ্বকাপ দলে, ব্যাখ্যা দিলেন প্রধান নির্বাচক
বৃহস্পতিবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দল ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। সংবাদ সম্মেলন করে ১৫ সদস্যের মূল দল ও স্ট্যান্ড বাই থাকা দুই ক্রিকেটারের নাম ঘোষণা করেন নির্বাচকরা। এর মধ্যে বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার আছেন, যারা বিভিন্ন মেয়াদে টি-টোয়েন্টি খেলেননি। তাদেরকে কেন বিশ্বকাপের দলে নেওয়া হয়েছে, সেই ব্যাখ্যা দিয়েছেন প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু।
ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়া সিরিজের কোনো ম্যাচে সুযোগ পাননি তাসকিন আহমেদ। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেও ডানহাতি এই পেসারকে বিবেচনা করা হয়নি এখন পর্যন্ত। তরুণ পেসার শরিফুল ইসলাম অজিদের বিপক্ষে খেললেও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে এখনও মাঠে নামেননি। ম্যাচ খেলার সুযোগ পাননি তরুণ অলরাউন্ডার শামীম হোসেন পাটোয়ারীও।
কী বিবেচনায় এই তিন ক্রিকেটারকে বিশ্বকাপের দলে নেওয়া হয়েছে? এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধান নির্বাচক বলেন, '১৫ জনের দলের মধ্যে সবাইকে খেলানো সম্ভব হয় না। দলের ধারাবাহিক পারফরম্যান্সও খুব গুরুত্বপূর্ণ। সেই হিসাবে সবাই একটা প্রক্রিয়ার মধ্যেই আছে, কেউ টিম ম্যানেজমেন্টের বাইরে নেই। সবাই প্রায় প্রস্তুত আছে, যখন যাকে দরকার হবে খেলানো হবে। আশা করি সবার থেকে একই রকম পারফরম্যান্স পাওয়া যাবে।'
দল বাছাইয়ে ম্যানেজমেন্ট থেকে কোনো চাপ নেই জানিয়ে মিনহাজুল আবেদীন বলেন, 'এখানে কোনো চাপ নেই। ক্রিকেটারদের যেভাবে পাচ্ছি, অনুশীলনে দেখছি; আমরা যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী এই ক্রিকেটারদের নিয়ে। আমরা মনে করছি ওরা তৈরি। ঘরের মাটিতে যেমন উইকেটে খেলি, বাইরে কিন্তু সে রকম উইকেটে খেলি না। প্রত্যেক সিরিজে কিন্তু একেকটা পরিকল্পনা থাকে।'
'ওই পরিকল্পনা মতোই যাওয়া হয়। এর বাইরে কিন্তু যাওয়া হয় না। যেখানে আমরা হোমে দুজন পেসার নিয়ে খেললে বাইরে কিন্তু তিনজন নিয়েও খেলি। এসব মাথায় রেখে কিন্তু আগাতে হয়। সেই হিসাবে যেকোনো ক্রিকেটরকে কিন্তু ওই পরিকল্পনায় রেখেই তৈরি করতে হয়। যদি সুযোগ আসে, যেকোনো ক্রিকেটারকে খেলানোর ব্যাপারে আমরা আত্মবিশ্বাসী।' যোগ করেন তিনি।
ম্যাচ অনুশীলন ছাড়াই ক্রিকেটারদের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী থাকার কারণ জানতে চাওয়া হলে মিনহাজুল আবেদীন বলেন, 'প্রস্তুতি ছাড়া কীভাবে, ওরা তো প্রস্তুতির মধ্যে আছে। তাসকিন জিম্বাবুয়ে সিরিজ খেলেছে। দলের সঙ্গে আছে, ইনজুরি নেই। পেস বোলিং কোচ তাদের তত্ত্বাবধানে আছে। আমাদের একজন কোচ আছেন, তিনি ওদের দেখছেন।'
বিশ্বকাপ দলে আছেন শামীম হোসেন পাটোয়ারী। অস্ট্রেলিয়া সিরিজে চারটি ম্যাচ খেলা তরুণ এই অলরাউন্ডার চলতি সিরিজে এখনও সুযোগ পাননি। তাকে দলে নেওয়ার ব্যাখায় প্রধান নির্বাচক বলেন, 'জিম্বাবুয়ে সিরিজ থেকে সে আছে। সে অনূর্ধ্ব-১৯ দলের ক্রিকেটার, এইচপিতে তার যথেষ্ট নার্সিং হয়েছে। আমরা আত্মবিশ্বাসী ও যে স্টাইলে খেলে, টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে যথেষ্ট ভালো খেলবে।'
জিম্বাবুয়ে সফর থেকে দলের সঙ্গে আছেন রুবেল হোসেন। ডানহাতি এই পেসারকে একটি ম্যাচেও খেলানো হয়নি। সর্বশেষ গত এপ্রিলে নিউজিল্যান্ড সফরে টি-টোয়েন্টি খেলেছেন রুবেল। একইভাবে আমিনুল ইসলাম বিপ্লবকেও সুযোগ দেওয়া হয়নি কোনো ম্যাচে। তরুণ এই লেগ স্পিনার তার শেষ ম্যাচ খেলেছেন গত বছরের মার্চে। এই দুই ক্রিকেটারকে রাখা হয়েছে স্ট্যান্ড বাই হিসেবে।
না খেলিয়েও দীর্ঘদিন রুবেলকে দলের সঙ্গে রাখা হচ্ছে। এ বিষয়টির ব্যাখায় প্রধান নির্বাচকের ভাষ্য, 'দলে যখন ৫-৬ জন পেসার থাকে, সবাইকে কিন্তু ১১ জনের মধ্যে খেলানো মুশকিল। আর দল যখন ভালো খেলতে থাকে, তখন টিম ম্যানেজমেন্ট একাদশ বদল করতেও চায় না। ধারাবাহিকভাবে ওই ১১ জনের ওপরই বিশ্বাস রাখা হয়। সেই হিসাবে রুবেল ম্যাচ পায় না। কিন্তু রুবেল আমাদের অভিজ্ঞ ও সিনিয়র ক্রিকেটার। আমি মনে করি ও নিজেকে যেভাবে তৈরি করে রেখেছে, যখন দরকার হবে আমরা ওর সেরা সার্ভিসটা পাব।'
এখন পর্যন্ত দল ঘোষণা করা দেশগুলোর বেশিরভাগ স্কোয়াডে লেগ স্পিনার আছেন। বাংলাদেশ আমিনুল ইমলাম বিপ্লবকে রেখেছে স্ট্যান্ড বাই হিসেবে। তার মূল স্কোয়াডে না থাকার কারণ ব্যাখ্যায় মিনহাজুল আবেদীন বলেন, 'লম্বা সময় কিন্তু সে অসুস্থতায় ছিল, এখান থেকে সে ফিরে এসেছে। তারপরও ওকে আমরা নিয়ে যাচ্ছি। দুর্ভাগ্যবশত আমরা যে পরিকল্পনায় খেলব, সেখানে সে পরছে না। তাই তাকে মূল দলে রাখা যায়নি।'