নিলামে তোলা হচ্ছে মুশফিকের ডাবল সেঞ্চুরির ব্যাট
করোনাভাইরাসের প্রকোপ বেড়েই চলেছে। হুহু করে বাড়ছে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুর মিছিলও। এমন অবস্থায় করোনার বিস্তাররোধে বিশ্বের প্রায় সব দেশেই চলছে লকডাউন। বাংলাদেশেও একই চিত্র। কিন্তু লকডাউনে তৈরি হচ্ছে স্থবিরতা, আর তাতে কর্মহীন হয়ে পড়ছেন অনেক মানুষ। এসব মানুষদের সাহায্যে এগিয়ে আসছেন অনেকেই।
বাংলাদেশের অনেক ক্রিকেটারই নিজ নিজ জায়গা থেকে দুস্থ-অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। সাহায্যের ক্ষেত্রটা বড় করতে দুদিন আগে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের পরামর্শ দেন সাকিব আল হাসান। বাংলাদেশ অলরাউন্ডার জানান, দুস্থ মানুষদের সাহায্যে ক্রিকেটাররা তাদের ব্যাট, জার্সি, ক্রিকেট সামগ্রী নিলামে তুলতে পারে।
এর একদিন পরই নিজের ব্যাট নিলামে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মুশফিকুর রহিম। বাংলাদেশের অভিজ্ঞ এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান তার সবচেয়ে প্রিয় ব্যাটটা নিলামে তোলার কথা ভাবছেন। যে ব্যাটটি দিয়ে বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরি করেন মুশফিক, দুস্থ মানুষদের সাহায্যে সেই ব্যাটটি নিলামে তোলার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করে ফেলেছেন তিনি। নিলাম থেকে পাওয়া পুরো অর্থ দুস্থ-অসহায় মানুষদের সাহায্যে খরচ করা হবে।
বাংলাদেশে নিলামের কোনো প্ল্যাটফর্ম না থাকায় বিষয়টি এখনও চূড়ান্ত হয়নি বলে জানিয়েছে মুশফিকের বিভিন্ন বিষয় তদারকি করা স্পোর্টস ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি নিবকো। নিবকোর একজন কর্মকর্তা দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে জানিয়েছেন, কীভাবে নিলামে তুললে প্রক্রিয়াটা ভালো হবে, সেটা নিয়ে কাজ করছেন তারা। ব্যাটটির ভিত্তিমূল্য রাখারও চিন্তা-ভাবনা করছেন তারা।
বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ একটা অংশ লেখা হয়েছে যে ব্যাট দিয়ে, এমন একটি ব্যাটের প্রত্যাশিত মূল্য নিশ্চিত করতেই ভিত্তিমূল্য রাখার চিন্তা করছে কোম্পানিটি। কোম্পানিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কেবল মুশফিকই নন, আরও কয়েকজন ক্রিকেটার তাদের ক্রিকেট সামগ্রী নিলামে তোলার চিন্তা-ভাবনা করছেন।
কোম্পানিটির একজন কর্মকর্তা বলেন, 'মুশফিকের ব্যাট নিলামে ওঠার সম্ভাবনা খুব বেশি। আমরা সেই চেষ্টা করছি। তবে এটা এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে। শুধু মুশফিকই নন, আরও কয়েকজন ক্রিকেটার আছেন এখানে। তাদের সাথে আমাদের কথাবার্তা চূড়ান্ত। ই-কমার্স যারা করে, তাদের সাথে যুক্ত হয়ে আমরা এটা করতে চাচ্ছি।'
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, 'ভালো একটা সুযোগ পেলেই এই কার্যক্রম শুরু করব। মুশফিকের ব্যাটটির মূল্য প্রত্যাশিত না হলে ব্যাটটির গাম্ভীর্য থাকে না। এ কারণেই আমরা ভাবছি উন্মক্ত মূল্য রাখব নাকি ভিত্তিমূল্য রাখব। এটা নিয়ে আমরা কাজ করছি। তবে আমরা যে এটা করতে যাচ্ছি, সেটা মোটামুটি চূড়ান্ত।'
এই ব্যাটটি দিয়ে ক্যারিয়ারের এবং বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরি করেন মুশফিক। ২০১৩ সালে গলে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২০০ রানের ইনিংস খেলে আউট হন বাংলাদেশ ক্রিকেটের রেকর্ড বইয়ে নতুন পাতা যোগ করা ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। করোনাভাইরাস মোকবিলায় শুরু থেকেই কাজ করে আসছেন মুশফিক। সর্বশেষ বগুড়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২০০ পিপিই (পার্সোনাল প্রোটেকশন ইকুইপমেন্ট), হ্যান্ড গ্লাভস ও মাস্ক দিয়েছেন দিয়েছেন তিনি।
করোনা মোকাবিলায় এরআগে নিজের বিশ্বকাপ ফাইনালের জার্সি নিলামে তোলেন ইংল্যান্ডের ক্রিকেটার জস বাটলার। উইকেটরক্ষক এই ব্যাটসম্যানের জার্সিটি ৬৫ হাজার পাউন্ডে (৬৮ লাখ ৭ হাজার টাকা) বিক্রি হয়।