ভেবেছিলেন জিতে গেছেন তিনি!
অলিম্পিকে স্বর্ণপদক জিতেছেন ভেবে আনন্দের অভিব্যক্তি নিয়ে শূন্যে দু'হাত তুলেছিলেন ডাচ সাইক্লিস্ট অ্যানেমিক ভ্যান ভ্লুটেন। কিন্তু বিধি বাম! মহার্ঘ্য সেই সোনার মেডেল গেছে অস্ট্রিয়ান প্রতিযোগী অ্যানা কিসেনহফারের গলায়।
কিন্তু এহেন বিভ্রান্তির কারণ কী?
টোকিও অলিম্পিক আসরে রোববার নারীদের রোড রেসে চোখ ধাঁধানো পারফরম্যান্সে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন কিসেনহফার। মাত্র চার ঘণ্টায় দৌড় শেষ করে সম্ভবত নিজের জীবনের সেরা খেলাটাই খেলেছেন তিনি।
শেষ সীমারেখায় পৌঁছাতে ৪০ কিলোমিটার বাকি থাকতেই মূল দল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যান ৩০ বছর বয়সী এই অস্ট্রিয়ান। প্রচণ্ড গরমের মধ্যেই ১৪৭ কিলোমিটার সাইক্লিং করে সেরার মুকুট নিজের মাথায় তুলে নেন তিনি। সেইসঙ্গে ১৯৮৬ সালের পর অস্ট্রিয়াকে প্রথমবারের মতো সাইক্লিংয়ে সোনার মেডেল এনে দিলেন।
বাকি সব প্রতিযোগীর চেয়ে কিসেনহফার এতটাই এগিয়েছিলেন, এক সময় তিনি অন্য সাইক্লিস্টদের চোখের আড়ালেই চলে যান।
৩৮ বছর বয়সী ডাচ নারী, ভ্যান ভ্লুটেন এই বিভ্রান্তির পেছনে এয়ারপিস ছাড়াই সাইক্লিং আয়োজন করাকে দায়ী করেছেন।
ভ্লুটেনের ভাষ্যে, 'যখন সীমানা রেখা পার হয়ে গেলাম, ভেবেছিলাম আমিই প্রথম হয়েছি। আপনি যখন কোনোরকম যোগাযোগ ছাড়াই এ ধরনের একটি গুরুত্বপূর্ণ দৌড় খেলবেন, তখন এরকম সমস্যা হবে। সব ওয়ার্ল্ড ট্যুর রেসেই যোগাযোগের ব্যবস্থা থাকে। আর এখানে আমরা তিনজন (বাকি দুই সঙ্গী মারিয়ানা ভোস ও অ্যানা ভ্যান ডার ব্রেগান) দাঁড়িয়ে ভাবছি, কে আসলে জিতেছে।'
তবে স্বর্ণ জয় করা না হলেও অলিম্পিকে রূপা জিতেছেন ভ্লুটেন। আর এজন্য তিনি দারুণ খুশি। ২০১৬ সালের রিও অলিম্পিকে এক বিভীষিকাময় দুর্ঘটনায় আহত হওয়ার পরও এতদূর আসতে পেরে গর্ববোধ করছেন এই ডাচ অ্যাথলেট।
'আমার এর আগে কোনো অলিম্পিক পদক ছিল না, তাই রূপা জিততে পেরেও অসম্ভব খুশি। আমার লক্ষ্য ছিল এখানে নিজের সেরাটা দেওয়া। অবশ্যই এই ফলাফল আমরা প্রত্যাশা করিনি; তবে ব্যক্তিগতভাবে আমার মনে হয় আমরা চমৎকার খেলেছি।'
অন্যদিকে, স্বর্ণজয়ী কিসেনহফারের এই মুহূর্তে কোনো পেশাদার চুক্তি নেই হাতে। ২০১৪ সালে ক্যারিয়ার শুরু করা এই অস্ট্রিয়ান মাত্র তিন বছরের মাথায়ই পেশাদার বনে যান।
কিসেনহফার শুধু যে একজন প্রতিষ্ঠিত সাইক্লিস্ট, তা নয়; ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণিতে মাস্টার্স ডিগ্রি এবং স্পেনের বার্সেলোনার কাতালোনিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফলিত গণিতে পিএইচডি ডিগ্রি রয়েছে তার।
অলিম্পিকে সোনা জয়ের পর অনুভূতি জানিয়েছেন কিসেনহফার, 'আমার পা জোড়া একদম ফাঁকা মনে হচ্ছিল; মনে হচ্ছিল আমি আর সাইকেল চালাতে পারব না। আমার শক্তি পুরোপুরি শেষ হয়ে গিয়েছিল। যখন রেখাটা পার হলাম, আমার বিশ্বাসই হচ্ছিল না আমি সত্যিই জয়ী হয়েছি। অবিশ্বাস্য অনুভূতি ছিল এটা!'
- সূত্র: সিএ
নএন