রাজস্থানের জয়ে দুর্বার মুস্তাফিজ
প্রথমে জস বাটলারের ব্যাটিং তাণ্ডব, পরে বল হাতে মুস্তাফিজুর রহমানের গতিময় ঘূর্ণি। সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিপক্ষে রাজস্থান রয়্যালসের বাকি ক্রিকেটারদের খুব বেশি ঘাম ঝরাতে হলো না। বাটলার ও মুস্তাফিজই পার্থক্য গড়ে দিলেন। তাতে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) দাপুটে এক জয় তুলে নিলো রাজস্থান।
রোববার দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে সানরাইজার্স হায়দরাবাদকে ৫৫ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে রাজস্থান। এই জয়ে স্বস্তির হাওয়াই বয়ে গেলো রাজস্থান শিবিরে। ৬ ম্যাচে ২ জয় নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের তলানিতে ছিল দলটি, ক্রমেই প্লে অফ খেলার পথ কঠিন হচ্ছিল তাদের। এই জয়ে টেবিলের ৫ নম্বরে উঠে এলো সঞ্জু স্যামসনের দল।
টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নামে রাজস্থান। ইনিংস উদ্বোধন করতে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নেওয়া জস বাটলার ১৯ ওভার পর্যন্ত ব্যাট হাতে তাণ্ডব চালিয়ে গেছেন। ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতা ডানহাতি এই ব্যাটসম্যানের ৬৪ বলে ১১টি চার ও ৮টি ছক্কায় খেলা চোখ ধাঁধানো ১২৪ ও স্যামসনের ৪৮ রানের সুবাদে ৩ উইকেটে ২২০ রানের বিশাল সংগ্রহ গড়ে রাজস্থান।
জবাবে দারুণ শুরুর পরও মুস্তাফিজের বোলিংয়ে হঠাৎ-ই দিক হারায় হায়দরাবাদ। এরপর মুস্তাফিজের সুরে সুর মিলিয়ে ক্রিস মরিস, কার্তিক ত্যাগীরাও আগুন ঝরা বোলিং করতে শুরু করেন। সানরাইজার্সের ইনিংস থেমে যায় ৮ উইকেটে ১৬৫ রানেই।
রাজস্থানের হয়ে সব ম্যাচ খেলে এলেও সেভাবে জ্বলে উঠতে পারছিলেন না মুস্তাফিজ। এই ম্যাচে বাংলাদেশের বাঁহাতি পেসারকে চেনা ছন্দে দেখা গেলো। মারকাটারি ফরম্যাটেও ৪ ওভারে মাত্র ২০ রান খরচায় ৩টি উইকেট তুল নেন মুস্তাফিজ। ৩ উইকেটের দুটিই স্লোয়ার ডেলিভারি থেকে পেয়েছেন তিনি।
মুস্তাফিজের বোলিং ফিগারই বলে দেয় তার বোলিংয়ের বিপক্ষে সবচেয়ে বেশি ধুঁকেছে হায়দরাবাদের ব্যাটসম্যানরা। মারকুটে ব্যাটিংয়ে ৬.১ ওভারে ৫৭ রান তুলে ফেলেন হায়দরাবাদের দুই ওপেনার মনিষ পাণ্ডে ও জনি বেয়ারস্টো। মনিষ পাণ্ডের স্টাম্প উপড়ে এই জুটি ভাঙেন মুস্তাফিজ।
ছয় নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছিলেন হায়দরাবাদের আফগানি অলরাউন্ডার মোহাম্মদ নবী। অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনকে এক পাশে রেখে ঝড় তুলেছিলেন তিনি। মাত্র ৫ বলে একটি চার ও ২টি ছক্কায় ১৭ রান করা নবীকে দারুণ এক অফ কাটারে ফিরিয়ে দেন মুস্তাফিজ। তার তৃতীয় শিকার আরেক আফগান ক্রিকেটার রশিদ খান।
ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে বোলিংয়ে আসেন মুস্তাফিজ। এই ওভারে ৬ রান খরচা করেন তিনি। নিজের দ্বিতীয় ওভারে দুর্বার হয়ে ওঠেন দ্য ফিজ। প্রথম বলেই মনিষের স্টাম্প ভেঙে দেন তিনি। এই ওভারে তার খরচা মাত্র ৪ রান।
দারুণ বোলিংয়ের ধারাবাহিকতা তৃতীয় ওভারেও ধরে রাখেন বাংলাদেশ পেসার। নবীকে ফেরানোর ওভারে মাত্র ৩ রান দেন তিনি। ৩ ওভারে ১৩ রানে ২ উইকেট নেওয়া মুস্তাফিজকে দিয়ে ১৮তম ওভারটি করার রাজস্থানের অধিনায়ক সঞ্জু স্যামসন। এই ওভারে ৭ রান খরচা করে নিজের বোলিং কোটা শেষ করেন মুস্তাফিজ।
রাজস্থানের জয়ে দারুণ বোলিং করেছেন ক্রিস মরিসও। ডানহাতি এই প্রোটিয়া পেসার ৪ ওভারে ২৯ রান খরচায় ৩টি উইকেট নেন। এ ছাড়া কার্তিক ত্যাগী ও রাহুল দেওয়াটিয়া একটি করে উইকেট পান।