রিংয়ে মোহাম্মদ আলী ছিলেন জঘন্য এক মানুষ: মাইক টাইসন
বক্সিং জগতের 'আয়রন মাইক' হিসেবে খ্যাত, আশির দশকের অন্যতম হেভিওয়েট সুপারস্টার মাইক টাইসন বরাবরই সর্বকালের সেরা বক্সার, মোহাম্মদ আলীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ। ৫৫ বছর বয়সী টাইসনের কাছে আলী এমন একজন 'হিরো', যার সান্নিধ্য ছাড়া তিনি হয়তো বক্সিংয়ের গ্লাভসজোড়া হাতেই তুলতেন না।
দুটি আলাদা যুগের দুই তারকার মধ্যে প্রায়ই তুলনা করা হলেও টাইসন এবং আলী দুজনেই একে অপরের প্রতি সম্মান দেখিয়েছেন সব সময়। এমনকি নিজের জীবনের শেষ দিনগুলোতে যখন আলীর বাকশক্তি অনেকটাই লোপ পেয়েছিল, তখনও বন্ধুর মতো টাইসন তার পাশে ছিলেন।
সম্প্রতি মোহাম্মদ আলী সম্পর্কে আবারও মুখ খুলেছেন 'দ্য ব্যাডেস্ট পারসন অন দ্য প্লানেট'। আর তাতে দেখা যাচ্ছে সম্পূর্ণ উল্টো দৃশ্য; যা মোহাম্মদ আলীকে এক 'জঘন্য' মানুষরূপে তুলে ধরেছে!
কিন্তু এতদিনের সুহৃদ সম্পর্কে কি এমন বলেছেন টাইসন? 'হটবক্সিং' নামক একটি টিভি প্রোগ্রামে ক্লারেসা শিল্ডসের সাথে আলাপচারিতায় মোহাম্মদ আলীর মনস্তত্ত্ব বিশ্লেষণ করেছেন টাইসন। ক্লারেসা আলীকে তার আদর্শ ও অনুপ্রেরণা মানেন, এমনটা জানার পরই এ প্রসঙ্গ তোলেন টাইসন।
'মোহাম্মদ আলী আমার দেখা সবচেয়ে আত্মবিশ্বাসী এক বক্সার। আমি তাকে নিয়ে অনেক পড়াশোনা করেছি। তার বক্সিং লড়াইগুলো এবং একটু বৃদ্ধ হওয়ার পর তার মনমানসিকতাও বোঝার চেষ্টা করেছি। রিংয়ে তিনি প্রতিপক্ষকে কাবু করার জন্য তাদের মা-বোনকে নিয়ে অশালীন ইঙ্গিত করতেন। এভাবেই, লড়াইয়ের সময় একটা জঘন্য মানুষ হয়ে উঠতেন তিনি। এত আজেবাজে কথা বলতেন যে রেফারি বলেছিলেন সেগুলো ভাষায় প্রকাশ করার মতো না।' বলেন টাইসন।
টাইসন নিজে মোহাম্মদ আলীর বক্সিং উন্মাদনাকে গ্রহণ করেন এবং তা নিজের প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে দেন। কিন্তু সেই পথটা তিনি আপন উপায়ে তৈরি করে নিয়েছিলেন।
বলা হয়ে থাকে, 'দ্য ইস্টঅন অ্যাসাসিন' খ্যাত আমেরিকান বক্সার, ল্যারি হোমসের কাছে মোহাম্মদ আলীর পরাজয়ের প্রতিশোধ নিয়েছিলেন খোদ টাইসন। ১৯৮৮ সালে তিনি হোমসকে পরাজিত করেন। আর এভাবেই টাইসন-আলীর সম্পর্ক গভীর হয় এবং তা বক্সিং জগত ছাড়িয়ে ব্যক্তিগত সম্পর্কে গড়ায়।
এর আগে মাইকেল র্যাপোপোর্টের সাথে আলাপচারিতার সময় নিজের জীবনে মোহাম্মদ আলীর প্রভাবের কথা স্মরণ করে আবেগাপ্লুত হয়ে কান্না করেন টাইসন। অতীতে তিনি আলীকে 'সকল মানুষের চাইতে বড়' বলে আখ্যা দিয়েছিলেন।
মোহাম্মদ আলীর সাথে অসংখ্য অন্তরঙ্গ মুহূর্ত কাটানোর ফলে মাইক টাইসনই এই মুহূর্তে একমাত্র জীবিত ব্যক্তি, যিনি সত্যিই এই কিংবদন্তির জীবনাদর্শ সম্পর্কে জানেন।
- সূত্র: এসেনশিয়ালি স্পোর্টস