ভুল থেকে কবে শিখবেন ক্রিকেটাররা, প্রশ্ন সুজনের
জিম্বাবুয়ে সফরে টি-টোয়েন্টি সিরিজ থেকে সিনিয়রদের বিশ্রাম দিয়ে তারুণ্যে আস্থা রেখেছিল বাংলাদেশ। লক্ষ্য ছিল নতুন ও তরুণদের পরখ করা। এই পরীক্ষিা-নিরীক্ষার পর্বে 'ফেইল' করেছে বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্টের পরিকল্পনা। ২-১ ব্যবধানে সিরিজ হেরেছে বাংলাদেশ। এই ফরম্যাটে প্রথমবারের মতো জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ হারলো দলটি।
সফরে যাওয়ার আগে বিসিবির নীতি-নির্ধারকদের মধ্য থেকে যারা বলেছিলেন, এই দল ৩-০ ব্যবধানে হারলেও হতাশ হবেন না; তাদের মুখেই এখন 'ছি, ছি' রব! এই তালিকায় আছেন বিসিবি পরিচালক ও জাতীয় দলের টিম ডিরেক্টরের খালেদ মাহমুদ সুজনও। সফরের আগে হতাশ না হওয়ার কথা জানালেও সুজনের কণ্ঠেই এখন সবচেয়ে বেশি হতাশা ঝরছে।
দলের সঙ্গে জিম্বাবুয়েতে থাকা জাতীয় দলের সাবেক এই অধিনায়ক বাংলাদেশের এমন পারফরম্যান্স কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না। এই সিরিজ হারের দায় সবটা ক্রিকেটারদের দিয়ে সুজন প্রশ্ন রেখেছেন, বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা ভুল থেকে কবে শিক্ষা নেবেন, 'আমি খুব হতাশ। আমরা বারবার বলি নিজেদের ভুল থেকে শিক্ষা নিতে। কিন্তু আমরা কবে সে শিক্ষাটা নেব। আমি পুরোপুরি ক্রিকেটারদের দোষ দেব। তাদের প্রয়োগ সম্পূর্ণ ভুল ছিল।'
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ হারকে অস্বাভাবিক বলছেন সুজন। এ পথে ব্যাটিং ব্যর্থতাকেই কারণ হিসেবে দেখছেন তিনি। তার মতে কোনো ক্রিকেটার ছক্কা মারার চেষ্টাই করেননি। দুই দলের ব্যাটসম্যানদের স্ট্রাইক রেটের পার্থক্যের কথাও উল্লেখ করেছেন তিনি। সুজন বলেন, 'এখানে আমাদের জেতাটাই স্বাভাবিক ছিল। হারটা ছিল অস্বাভাবিক। আমরা জানি যে ওভারে আমাদের ১০-১২ করে লাগবে। কেউ দেখলাম যে একটা ছয় মারার চেষ্টা করছে। সবাই ২-১ করে নিচ্ছে।'
'আমি একটা স্কোর করে নিজের জায়গাটা ঠিক রাখলাম, এটা ওই ধরনের কিছু কিনা, আমি ঠিক জানি না। আপনি যদি ১০০ স্ট্রাইক রেটে খেলেন, তাহলে এখানে রান তাড়া করে জিততে পারবেন না। একজন-দুজনকে তো শট খেলতে হবে। ওদের দুজন ব্যাটসম্যানের স্ট্রাইক রেট দেখুন। এখানে ভিন্ন কিছু করার প্রয়োজন ছিল না। শর্ট বলকে যদি পুল করে ছক্কা মারার আত্মবিশ্বাস না থাকে, তাহলে তো মুশকিল।' যোগ করেন তিনি।
ঘরোয়া ক্রিকেটে পারফর্ম করা ক্রিকেটারদের নিয়েই দল গড়া হয়েছিল। কিন্তু তারা যদি পারফর্ম না করতে পারেন, তাহলে কিছু করার থাকে না বলে জানান সুজন। তার ভাষায়, 'যাদের নেওয়া হয়েছে, তারা ঘরোয়া ক্রিকেটে ভালো করা ক্রিকেটার। সবাই পারফর্ম করেই এখানে এসেছে। মুনিম শাহরিয়ার, পারভেজের কথা যদি বলেন, দুজনই লোকাল টি-টোয়েন্টিতে পারফর্ম করা ক্রিকেটার। আপনি সেরা পারফর্মারদেরই তো নিয়ে এসেছেন। তারা যদি পারফর্ম না করে, তাহলে কী আর করার থাকে!'
এখান থেকে বেরিয়ে আসতে কী করণীয়, সেটা ক্রিকেটারদেরই জানা উচিত বলে মনে করেন সুজন। তিনি বলেন, 'করণীয়টা কী, এটা ক্রিকেটাররাই বলতে পারবে। এমন না যে ছেলেরা এখন দলে আসছে, আর যাচ্ছে। তারা একটা সময়ের জন্য সুযোগ পাচ্ছে। তারা জানে যে তাদের জায়গা নিয়ে এত কাড়াকাড়ি নেই। তাদের ঠিকঠাক সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। এমন অবস্থায় তো মন খুলে খেলা উচিত। আমি ওই মন খুলে খেলাটা দেখতে পাচ্ছি না।'