‘উনার কী যোগ্যতা আছে আমার ব্যাপারে কথা বলার’- বুলবুলের উদ্দেশ্যে সুজন
এশিয়া কাপে ম্যাচের আগে কথার লড়াইয়ে মেতেছিল বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা। লঙ্কান অধিনায়ক দাসুন শানাকার এক মন্তব্যে কড়া ভাষায় জবাব দেন বাংলাদেশের টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন। জাতীয় দলের সাবেক এই অধিনায়ক এবার তার এক সময়ের সতীর্থ আমিনুল ইসলাম বুলবুলকে এক হাত নিলেন। প্রশ্ন তুললেন বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিয়ানের যোগ্যতা নিয়েও।
দীর্ঘদিন ধরে আইসিসির ডেভেলপমেন্ট অফিসার হিসেবে কর্মরত আছেন বুলবুল। এশিয়া কাপ চলাকালীন সংযুক্ত আরব আমিরাতে ছিলেন তিনি। সেখানে বাংলাদেশি কয়েকটি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বুলবুল জানান, টিম ডিরেক্টর হিসেবে সুজন ব্যর্থ। পারফরম্যান্স খারাপ হলে ক্রিকেটারদের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হলে সুজনকে কেন নয়। তার মতে, সুজনের কথাবার্তা দলকে বিরক্ত করে।
সোমবার থেকে মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ম্যাচের আবহে অনুশীলন শুরু হয়েছে বাংলাদেশ দলের। প্রথম দিনের অনুশীলনের শেষ দিকে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে দলের অনেক বিষয় নিয়ে কথা বলেন সুজন। এ সময় তাকে নিয়ে করা বুলবুলের মন্তব্য সম্পর্কে জানতে চাইলে বিসিবির এই পরিচালক প্রশ্ন রাখেন, তাকে নিয়ে মন্তব্য করার কী যোগ্যতা আছে বুলবুলের!
গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর থেকে টিম ডিরেক্টরের দয়িত্ব পালন করে আসা সুজন বলেন, 'আমার যোগ্যতা... আমি বিসিবিতে আছি, আমি তো নির্বাচিত পরিচালক। ওখান থেকে আমাদের টিম ডিরেক্টর করা হয়েছে। বোর্ডের প্রেসিডেন্ট আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন, উনি কেনো আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন বলতে পারব না। এটা তো আমি চেয়ে নিইনি। আমি তো বাচ্চা না। আমি তো কাঁদবো না যে এটা লাগবে।'
'উনার কী যোগ্যতা আছে আমার ব্যাপারে কথা বলার, সেটাই আমি জানি না আসলে। উনার যোগ্যতা নিয়ে আমার প্রশ্ন আছে। খেলা ছাড়ার পর থেকে আমি ক্রিকেটের সঙ্গেই আছি। ন্যূনতম একটা বেতনে সাড়ে ৪ বছর বিসিবিতে কাজ করেছি।' যোগ করেন সুজন।
সংবাদমাধ্যমে বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়ে কাজ করার আগ্রহের কথা জানালেও প্রকৃতপক্ষে বুলবুলের মধ্যে সেই আগ্রহ দেখেননি সুজন। তিনি বলেন, 'আপনাদের মাধ্যমে সব সময় শুনি, উনি বাংলাদেশে কাজ করতে চান। আমার তো এগুলো সম্পর্কে অনেক অভিজ্ঞতা। আমি নিজেই উনাকে অফার দিয়েছি বাংলাদেশে কাজ করতে। উনি কোনোদিনই আমাকে জানাননি যে কাজ করতে চান। উনি প্রতিবারই এ রকম হাইপ তোলেন।'
বুলবুলের যোগ্যতার প্রশ্ন তুলে তার সঙ্গে নিজের তুলনাও দেন সুজন। তার ভাষায়, 'উনি কোন আন্তর্জাতিক খেলোয়াড়ের সঙ্গে কাজ করেছেন? উনি আন্তর্জাতিক খেলোয়াড়দের সঙ্গে একবারই কাজ করেছেন, যেবার আবাহনীতে কাজ করেছেন। এ ছাড়া উনি চীন, ব্যাংকক, ফিলিপাইন... ওখানে অনূর্ধ্ব-১৩, অনূর্ধ্ব-১৫ ছেলে মেয়েদের সঙ্গে কাজ করেছেন। ওখানে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কোথায় পেলেন। সুতরাং ওনার যোগ্যতাটা কোথায়? আমি অনেক আন্তর্জাতিক ম্যাচ করেছি। বাংলাদেশের হেড কোচও ছিলাম।'
সুজন মনে করেন, অন্যের যোগ্যতা নিয়ে কথা বলার আগে নিজের যোগ্যতা নিয়ে চিন্তা করা উচিত। বুলবুলকে সেই পরামর্শই দিয়েছেন তিনি, 'একটা মানুষকে নিয়ে যখন বলব, তখন নিজের যোগ্যতা নিয়েও চিন্তা করা উচিত যে আমি কতটুকু পারি না পারি। কে ভালো, কে খারাপ; এটা জাস্টিফাই করার অধিকার তার যেমন নেই, আমারও নেই। তাই এটা নিয়ে আমি বলতেও চাই না। উনি বড়, উনাকে সেই শ্রদ্ধাটা আমি সব সময় করি, করব।'
দূরে থেকে এভাবে সমালোচনা না করে বুলবুলকে বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়ে কাজ করার আহ্বান জানান সুজন। ভালো পরিকল্পনা দিলে সেই অনুযায়ী কাজ করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, 'উনি যেভাবে কথা বলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট নিয়ে, উনি আসুক; আমাদের সঙ্গে বসুক। বাংলাদেশ দলকে বদলানোর কোনো পরিকল্পনা থাকলে আমাদেরকে দিক, আমরাও যেন তেমন পরিকল্পনা করতে পারি।'