মাহমুদউল্লাহকে ছাড়াই বিশ্বকাপ দল, ফিরলেন লিটন-রাব্বি
তেমন কোনো পারফরম্যান্স না থাকলেও বাঁহাতি ব্যাটসম্যান সৌম্য সরকারকে বিশ্বকাপ দলে নেওয়ার আলোচনা চলছিল বেশ কিছুদিন ধরে। তবে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দলে থাকা না থাকা নিয়ে ছিল ধোঁয়াশা, আলোচনা-সমালোচনা। অবশেষে থামলো সেই আলোচনা, কেটে গেল ধোঁয়াশাও। সৌম্যকে স্ট্যান্ড বাই হিসেবে রাখা হলেও মাহমুদউল্লাহকে ছাড়াই অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠেয় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য দল ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।
বিশ্বকাপের দল ঘোষণার শেষ সময় ১৫ সেপ্টেম্বর। এর একদিন আগে বুধবার মিরপুর স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে ১৫ সদস্যের দল ঘোষণা করলেন জাতীয় দলের প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু। এই দলটিই দেশের বাইরের প্রস্তুতি ক্যাম্প শেষে দেশে ফিরে নিউজিল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলতে যাবে। এরপর সেখান থেকে অস্ট্রেলিয়া যাবে বিশ্বকাপে অংশ নিতে।
বিশ্বকাপ স্কোয়াড দিয়ে বাংলাদেশ দলে ফিরলেন দীর্ঘদিন ইনজুরিতে থাকা লিটন কুমার দাস ও ইয়াসির আলী রাব্বি। চোট নিয়ে জিম্বাবুয়ে সফর থেকে দেশে ফিরে এসেছিলেন লিটন। চোটের কারণে এশিয়া কাপে খেলা হয়নি তার। গত জুনের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে চোটে পড়ার পর থেকে দলের বাইরে ছিলেন রাব্বি। এশিয়া কাপ দিয়ে দীর্ঘদিন পর বাংলাদেশ দলে ফেরা সাব্বির রহমানকেও বিশ্বকাপের স্কোয়াডে নেওয়া হয়েছে। কোথাও পারফরম্যান্স না করেই সুযোগ পেয়েছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। অথচ এশিয়া কাপের দলেও ছিলেন না বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান।
দলে আছেন চোটের কারণে এশিয়া কাপে খেলতে না পারা নুরুল হাসান সোহান। চোট নিয়ে জিম্বাবুয়ে সফর থেকে ফেরেন তিনি। এশিয়া কাপের দলে তাকে রাখা হলেও শেষ মুহূর্তে গিয়ে সিদ্ধান্ত বদলায় বিসিবি। স্ট্যান্ড বাই হিসেবে রাখা হয়েছে ৪ জনকে। তারা হলেন রিশাদ আহমেদ, শরিফুল ইসলাম, সৌম্য সরকার ও শেখ মেহেদি হাসান।
স্ট্যান্ড বাই হিসেবে থাকা সৌম্য দীর্ঘদিন ধরে কোনো পর্যায়েই রানের দেখা পাননি। সব ধরনের ক্রিকেট মিলিয়ে সর্বশেষ ১০ ইনিংসের মধ্যে বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যানের সর্বোচ্চ রানের ইনিংস ৫৯। 'এ' দলের হয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে তিন ওয়ানডেতে সৌম্য রান করেন মাত্র ৫১। বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান জাতীয় দলের হয়ে সর্বশেষ ম্যাচ খেলেছেন ২০২১ সালের নভেম্বরে, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে।
দীর্ঘদিন ধরে রান নেই মাহমুদউল্লাহর ব্যাটেও। টি-টোয়েন্টিতে সর্বশেষ ৪২ ইনিংসে দুটি হাফ সেঞ্চুরি করেছেন তিনি। গত জুলাইতে তাকে ছাড়াই জিম্বাবুয়ে সফরের টি-টোয়েন্টি দল ঘোষণা করা হয়। বিশ্রাম বলা হলেও আদতে সেটা ছিল বাদ দেওয়া। পরে অবশ্য নুরুল হাসান সোহানের চোটে এক ম্যাচ খেলেন তিনি। এশিয়া কাপে দুই ম্যাচে টি-টোয়েন্টিসুলভ ব্যাটিং করতে না পারায় বিশ্বকাপ দলে তার জায়গা পাওয়া নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। সেই প্রশ্নের উত্তরে মাহমুদউল্লাহকে দল থেকে বাদ দিলো বিসিবি।
বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ১২১টি টি-টোয়েন্টি খেলেছেন মাহমুদউল্লাহ, যা বিশ্বের চতুর্থ সর্বোচ্চ। অধিনায়ক হিসেবেও সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলেছেন তিনি। অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটারের নেতৃত্বে ৪৩ টি-টোয়েন্টি খেলে ১৬ ম্যাচে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। সংক্ষিপ্ততম এই ফরম্যাটে ১২১ ম্যাচে ছয়টি হাফ সেঞ্চুরিসহ ২৩.৫৭ গড় ও ১১৭.৩০ স্ট্রাইক রেটে ২ হাজার ১২২ রান করেছেন মাহমুদউল্লাহ, যা বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সর্বোচ্চ।
বাংলাদেশের বিশ্বকাপ দল: সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক) লিটন কুমার দাস, আফিফ হোসেন ধ্রুব, মেহেদী হাসান মিরাজ, নুরুল হাসান সোহান, ইয়াসির আলী রাব্বি, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, সাব্বির রহমান, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, নাজমুল হোসেন শান্ত, নাসুম আহমেদ, তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান, এবাদত হোসেন ও হাসান মাহমুদ।
স্ট্যান্ড বাই: রিশাদ আহমেদ, শরিফুল ইসলাম, সৌম্য সরকার ও শেখ মেহেদি হাসান।