শেষ ষোলোয় ক্রোয়েশিয়া, ২৪ বছর পর প্রথম রাউন্ড থেকে বিদায় বেলজিয়ামের
ড্র হলেই চলতো ক্রোয়েশিয়ার, কিন্তু জয়ের বিকল্প ছিলো না বেলজিয়ামের। এমন ম্যাচে প্রথমার্ধে বিশেষ সুবিধা করতে পারলেন না কেভিন ডি ব্রুইনে-এডেন হ্যাজার্ডরা। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে গোলের খোঁজে মরিয়া বেলজিয়াম মুহুর্মুহু আক্রমণ সাজিয়ে গেল, তৈরি হলো গোলের সম্ভাবনাও। যদিও রোমেলু লুকাকুর চরম ব্যর্থতায় জালের দেখা মিললো না। কঠিন লড়াইয়ে এলো ড্র, যা যথেষ্ট হলো না।
বৃহস্পতিবার কাতারের আহমেদ বিন আলী স্টেডিয়ামে 'এফ' গ্রুপের ম্যাচে গোলশূন্য ড্র করেছে বেলজিয়াম-ক্রোয়েশিয়া। এই জয়ে তিন ম্যাচে ৫ পয়েন্ট নিয়ে রানার্স-আপ হিসেবে দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠলো ক্রোয়েশিয়া। ৭ পয়েন্ট নিয়ে এই গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন হয়ে পরের রাউন্ডে গেছে আফ্রিকার দেশ মরক্কো। একই সময়ে শুরু হওয়া আরেক ম্যাচে কানাডাকে ২-১ গোলে হারায় তারা।
একটি করে জয়, ড্র ও হারে ৪ পয়েন্ট নিয়েও বিদায় নিলো গত আসরের সেমি-ফাইনালিস্ট বেলজিয়াম। ২৪ বছর পর গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিলো বেলজিয়াম, সর্বশেষ ১৯৯৮ বিশ্বকাপে প্রথম রাউন্ড পেরোতে ব্যর্থ হয় তারা। অবশ্য মাঝে দুটি বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি দেশটি।
ম্যাচে দাপট দেখিয়েছে বেলজিয়াম, কিন্তু সহজ সহজ সুযোগ নষ্ট করায় জালের ঠিকানা খুঁজে পায়নি তারা। ৫২ শতাংশ সময় বল নিজেদেরে পায়ে রাখে দেশটি। গোলমুখে তাদের নেওয়া ১৬টি শটের ৩টি ছিল লক্ষ্যে। বিশ্বকাপের বর্তমান রানার্স-আপ ক্রোয়েশিয়ার নেওয়া ১১টি শটের ৪টি ছিল লক্ষ্যে।
ম্যাচ শুরু হতেই আক্রমণ সাজায় ক্রোয়েশিয়া। ১০ সেকেন্ডের মাথায়ই ডি-বক্সের বাইরে থেকে আচমকা শট নেন ক্রোয়েশিয়ার ফরোয়ার্ড ইভান পেরিসিচ। কিন্তু পোস্টের সামান্য বাইরে দিয়ে যায় বল। ১৩তম মিনিটে সহজ সুযোগ নষ্ট করেন বেলজিয়ামের ড্রিস মের্টেন্স। মাঝমাঠ থেকে বল নিয়ে এগিয়ে কেভিন ডে ব্রুইনে পাস দেন বক্সে। ফাঁকায় পেয়ে বল উড়িয়ে মারেন মের্টেন্স।
দুই মিনিট পর ইয়ানিক কারাসকো ডি-বক্সে ক্রোয়েশিয়ার ক্রামারিচকে ফাউল করলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। তবে আক্রমণের শুরুতে ক্রোয়েশিয়ার একজন অফসাইডে থাকায় ভিএআরের সাহায্যে সিদ্ধান্ত পাল্টান তিনি। প্রথামার্ধে গোলমুখে বেলজিয়াম শট নেয় পাঁচটি, ক্রোয়েশিয়া ছয়টি। তবে দুই দলের কারও কোনো শটই লক্ষ্যে ছিল না।
দ্বিতীয়োর্ধের শুরুতেই পরিবর্তন আনে বেলজিয়াম। পুরোপুরি ফিট না থাকলেও লুকাকুকে নামানো হয়। ৪৯তম মিনিটে সুযোগ পান ইন্টার মিলানের এই ফরোয়ার্ড, কিন্তু গোলরক্ষক বরাবর হেয করেন তিনি। এরপর কয়েকটি পাল্টা আক্রমণ করে ক্রোয়েশিয়া, কিন্তু তাদের সবগুলো আক্রমণ রুখে দেন বেলজিয়ামের গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়া।
৬০তম মিনিটে দারুণ সুযোগ নষ্ট করে বেলজিয়াম। ডি ব্রুইনের পাস ধরে বক্সে ঢুকে শট নেন কারাসকো, প্রতিপক্ষের এক ডিফেন্ডারের পায়ে বাধা পাওয়া বল পেয়ে যান লুকাকু। কিন্তু তার ডান পায়ের শট লাগে পোস্টে। দুই মিনিট পর ব্রুইনের ক্রসে হেড নেন লুকাকু, একটুর জন্য উপর দিয়ে চলে যায়।
নির্ধারিত সময়ের শেষ মিনিটে আবারও হতাশ করেন লুকাকু। ডান দিক থেকে তোরগ্যান আজারের ক্রস দূরের পোস্টে বুক দিয়ে নামিয়ে নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার চেষ্টা করেন তিনি, কিন্তু বল হারিয়ে ফেলেন। যোগ করা এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পায় বেলজিয়াম। কিন্তু ছোট বক্সে আলগা বলে শট নেওয়ার আগেই দলকে বিপদমুক্ত করেন ইয়োস্কো গাভারদিওল।