স্পেন বাধা পেরিয়ে আরব বসন্ত বাঁচিয়ে রাখতে পারবে মরক্কো?
কাতার বিশ্বকাপে স্বপ্নের মতো সময় কাটছে মরক্কোর। আফ্রিকা-আরব অঞ্চলের দেশটি 'এফ' গ্রুপের সেরা দল হিসেবে শেষ ষোলোর টিকেট কাটে। প্রথম ম্যাচে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে ড্র করা দলটি পরের দুই ম্যাচে চমক নিয়ে হাজির হয়। দারুণ ফুটবলে বেলজিয়াম ও কানাডাকে হারিয়ে সাত পয়েন্ট নিয়ে পরের রাউন্ডে যায় তারা। এবার তাদের সামনে সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়ন স্পেন। আত্মবিশ্বাসে টইটুম্বুর মরক্কো এবার স্পেন বাধাও ডিঙিয়ে যেতে চায়।
কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে ৬ ডিসেম্বর কাতারের এডুকেশন সিটি স্টেডিয়ামে স্পেনের মুখোমুখি হবে মরক্কো। গ্রুপ পর্বে নিজেদের দারুণ ছন্দ ও প্রতিপক্ষ স্পেনের হোঁচট খাওয়া, দুইয়ে মিলিয়ে জয়ে দৃষ্টি দিচ্ছে মরক্কো। স্পেনের চাপে থাকার ব্যাপারটি কাজে লাগাতে চায় তারা। কারণ ফেবারিট হয়ে বিশ্বকাপে অংশ নিলেও স্পেন দাপুটে ফুটবল খেলতে পারেনি। জাপানের বিপক্ষে হারা স্প্যানিশরা ৪ পয়েন্ট নিয়ে রানার্স-আপ হিসেবে শেষ ষোলোতে ওঠে।
সেনেগালের পর দ্বিতীয় আফ্রিকান দল হিসেবে এবারের আসরের দ্বিতীয় রাউন্ড উঠেছে মরক্কো। ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে গোলশূন্য ড্র দিয়ে আসর শুরু করা দলটি বেলজিয়ামকে ২-০ ও কানাডাকে ২-১ গোলে হারায়। এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপের নক আউট পর্বে উঠেছে মরক্কো। এর আগে ১৯৮৬ বিশ্বকাপে দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠেছিল তারা।
স্পেনের বিপক্ষে ম্যাচের আগে বিশ্বকাপে দারুণ পারফরম্যান্স ছাড়াও আরও একটি রেকর্ড থেকে আত্মবিশ্বাস নিতে পারে মরক্কো। এবারের বিশ্বকাপে টিকে থাকা এবং কোনো ম্যাচ না হারা চার দলের একটি মরেক্কো। এ ছাড়া সব ধরনের প্রতিযোগিতা মিলিয়ে টানা আট ম্যাচে অপরাজিত অ্যাটলাস লায়ন্সরা। হার না মানা এই ম্যাচগুলোতে মাত্র দুটি গোল হজম করেছে তারা।
স্পেনের এদিক থেকে কিছুটা এলোমেলো। লুইস এনরিকের দল গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে জাপানের বিপক্ষে হারে। সমীকরণ মিলিয়ে পরের রাউন্ডে উঠতে হয় তাদের। গ্রুপের দ্বিতীয় দল হিসেবে শেষ ষোলোয় উঠেছে ২০১০ বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়নরা। এটা অবশ্য তাদের জন্য কিছুটা ভালোই হয়েছে। গ্রুপ সেরা হলে শেষ ষোলোয় তাদের প্রতিপক্ষ হতো ক্রোয়েশিয়া। বিশ্বকাপের বর্তমান রানার্স-আপরা যে মরক্কোর চেয়েও শক্তিশালী প্রতিপক্ষ হতো, তা বলাই বাহুল্য।
এবারের বিশ্বকাপটা স্পেনের জন্য বিশেষ মিশনের। ২০১৮ বিশ্বকাপে দ্বিতীয় রাউন্ড থেকেই বিদায় নেয় তারা। এবার যেন একইভাবে বিশ্বকাপ যাত্রা না থেমে যায়, তা নিয়ে অতি সতর্ক স্প্যানিশরা। শুরুটা প্রত্যাশা মতোই হয়েছিল তাদের। গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে কোস্টারিকার জালে গোল উৎসব করে স্পেন, তুলে নেয় ৭-০ গোলের বিশাল জয়। পরের ম্যাচে জার্মানির বিপক্ষে ১-১ গোলে ড্র করা স্পেন শেষ ম্যাচে জাপানের বিপক্ষে ২-১ গোলে হারে। এবারে আসরের গ্রুপ পর্বে ইংল্যান্ডের সমান সর্বোচ্চ ৯ গোল করেছে তারা।
এদিকে মরক্কো দলে চোট নিয়ে চিন্তা রয়েই গেছে। গোঁড়ালিতে চোট পাওয়া আচরাফ হাকিমির ফিটনেস ফিরে পাওয়া নিয়ে আশার কথা জানালেও শনিবার দলের পূর্ণাঙ্গ অনুশীলনে ছিলেন না এই রাউটব্যাক। জিয়েচের মতো সোফিয়ান আমবারাত ও সোফিয়ানে বুফালকেও অনুশীলনে বিশ্রাম দেয়া হয়। স্পেনের বিপক্ষে ম্যাচের আগে এই তিনজনের ফিটনেস নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় মরক্কো। যদিও চোট নিয়ে না ভেবে স্পেনকে হারিয়ে শেষ আটের টিকেট কাটার পাশাপাশি বিশ্বকাপে আরব বসন্ত বাঁচিয়ে রাখতে চায় তারা।