দীর্ঘ ৬০ বছর ধরে পেলের চুল কাটতেন সাও পাওলোর যে নাপিত!
কিংবদন্তি ব্রাজিলিয়ান ফুটবলার ও ফুটবলের রাজা পেলের প্রয়াণে পুরো ফুটবল বিশ্বজুড়ে চলছে শোকের মাতম। একই সাথে মৃত্যুর পর ব্রাজিলের এ মহাতারকার জীবন সম্পর্কে জানা যাচ্ছে একের পর এক চমকপ্রদ তথ্য। চরম দারিদ্র থেকে উঠে এসে ফুটবল বিশ্ব শাসন করা পেলের চুল কাটা সম্পর্কেও অবাক এক তথ্য জানা গেছে সম্প্রতি। ফুটবল ক্লাব সান্তোসে কিশোর বয়সে যোগদানের পর থেকে আমৃত্যু এক নাপিত বন্ধুর কাছেই চুল কেটেছেন এ কিংবদন্তি ফুটবলার, খবর রয়টার্সের।
সম্প্রতি পেলের প্রয়াণে নিজের কষ্টের কথা জানিয়েছেন নাপিত জোয়াও আরাউহো। প্রায় দীর্ঘ ৬০ বছর ধরে পেলের চুল কেটেছেন তিনি। পেলের মৃত্যুর পর নিজের সেলুনের সামনে পেলের জার্সি পরে বসে আরাউহো বলেন, ''আমরা একজন কিংবদন্তিকে হারিয়েছি। ব্রাজিল হারিয়েছে। গোটা বিশ্ব হারিয়েছে। আমি এক জন বড় ক্রেতা হারিয়েছি। সেই সঙ্গে হারিয়েছি একজন ভাল বন্ধুকে।"
নাপিত আরাউহো সব মিলিয়ে প্রায় এক হাজার বার পেলের চুল কেটেছেন। তিনি জানান, ১৯৫৬ অথবা ১৯৫৭ সালে পেলের সাথে তার প্রথম পরিচয়। সেসময় পেলের বয়স ছিল ১৬ বছর, আর আরাউহোর বয়স ছিল ১৮ বছর। পেলে তখন মাত্র সান্তোসে সুযোগ পেয়েছেন। সান্তোসের ভক্ত এ নাপিত বলেন, ''পেলে যখন প্রথম এখানে এল তখন ও বাচ্চা ছেলে। তখন কেউ ভাবেনি ও এত বড় একজন ফুটবলার হবে। আমরা জানতাম ও ভাল ফুটবলার। কিন্তু ফুটবলের রাজা হবে সেটা বুঝতে পারিনি।"
ফুটবল থেকে অবসর নেওয়ার পর পেলের সাথে আরাউহোর বন্ধুত্ব আরও ঘনিষ্ঠ হয়। মৃত্যুর আগপর্যন্ত তার কাছেই চুল কাটতে যেতেন মিলিয়ন ডলারের মালিক পেলে। এছাড়াও অবসর সময় সুযোগ পেলেই গল্প করতে আরাউহোর সেলুনে চলে আসতেন ব্রাজিলের এ কিংবদন্তি।
পেলে আদর করে আরাউহোর নাম দিয়েছিলেন 'দিদি'। আর এই নাপিতও পেলেকে নিজের বন্ধুর মতোই মনে করতেন। তাই অন্য সবার মতোই পেলের কাছ থেকেও মজুরি হিসেবে মাত্র ৭ ডলার নিতেন তিনি। কিন্তু গত ২৯ ডিসেম্বর পেলের মৃত্যু কোনভাবেই মানতে পারছেন না আরাউহো।
শুধু সাও পাওলোর নাপিত আরাউহো নয়, পেলের প্রয়াণে সাও পাওলোর একটি বড় অংশ জুড়ে চলছে শোক। ব্রাজিলে বহু ভক্ত দুঃখে কাতর হয়ে নিজেদের দোকান ও বাজার বন্ধ রাখছেন। এছাড়াও ব্রাজিলের বাইরে পুরো বিশ্বে 'কালো মানিক' খ্যাত কিংবদন্তি পেলেকে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার সাথে মাঠ ও মাঠের বাইরে স্মরণ করা হচ্ছে।