‘১৫ হাজার রান করার পর এটা শোনা দুর্ভাগ্যজনক’
গত কয়েক মাসে বিশ্বকাপসহ অন্যান্য সিরিজ মিলিয়ে টি-টোয়েন্টি বেশি খেলেছে বাংলাদেশ। এই ফরম্যাট থেকে অবসর নেওয়ায় খেলা হয়নি তামিম ইকবালের। ঘরের মাঠে ভারতের বিপক্ষে সিরিজে খেলতে পারেননি চোটের কারণে। সব মিলিয়ে সাত মাস পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার অপেক্ষায় অভিজ্ঞ এই ওপেনার। কিন্তু ফেরার আগে চোটে পড়া নিয়ে তাকে এমন প্রশ্ন শুনতে হলো, যেখানে জড়িয়ে থাকলো অবিশ্বাস, সন্দেহ। প্রশ্নকর্তার সুর বুঝতে পেরে আক্ষেপের কথাই জানালেন বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক।
সর্বশেষ গত বছরের আগস্টে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন তামিম। গত ডিসেম্বরে ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডে দিয়ে ফেরার কথা ছিল তার। প্রস্তুতি ম্যাচে দারুণ ব্যাটিংয়ে করেন সেঞ্চুরি, কিন্তু ওই ম্যাচেই পড়েন কুঁচকির চোটে। ওয়ানডে সিরিজ থেকে ছিটকে যান তিনি, খেলতে পারেননি টেস্ট সিরিজও। বিপিএল দিয়ে ফিরলেও আবারও চোট সঙ্গী হয়। সতর্কতা হিসেবে পরে আর ম্যাচ খেলেননি।
তিনটি করে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি খেলতে বাংলাদেশে এসেছে ইংল্যান্ড। প্রত্যাশা মতো সব কিছু যাচ্ছে, দীর্ঘদিন পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার অপেক্ষায় তামিম। কিন্তু এই সিরিজের আগে তার সামর্থ্য, মনোবল নিয়ে উঠলো প্রশ্ন। 'বড় সিরিজের আগে তামিমের ইনজুরি হয়'- এমন আলোচনা আছে বলে রোববারের সংবাদ সম্মেলনে তামিমকে জানানো হয়।
নিজের সম্পর্কে এমন আলোচনা আছে জেনে আক্ষেপই করলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। দেশসেরা এই ওপেনার বলেন, 'আমি ১৫ হাজার রান করার পরও যদি এই কথা শুনতে হয়, তাহলে এটা খুবই দুঃখজনক। খুবই দুর্ভাগ্যজনক। ১৭ বছর ধরে খেলছি। আমার ধারণা, দলের ৯০ শতাংশ ম্যাচ খেলেছি। হয়তো ১০ শতাংশ ম্যাচ খেলতে পারিনি চোটের কারণে। আমার গড় যদি ৯০ শতাংশ হয়, তাহলে আমার মনে হয় এটা দারুণ। যেহেতু ১৭ বছর ধরে খেলছি।'
এমন আলোচনা দুর্ভাগ্যজনক জানিয়ে তামিম আরও বলেন, 'সব ফরম্যাট মিলিয়ে ১৫ হাজারের কাছাকাছি রান করার পর যদি এটা শুনতে হয়, বা যে কেউ এটা বলছে বা লিখছে, খুবই দুর্ভাগ্যজনক। এটাই বলতে পারি। কোনো ক্রিকেটারই কোনো ম্যাচ মিস করতে চায় না। আপনি যেটা বললেন, তা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। এর চেয়ে বেশি আমার আসলে কিছু বলার নেই।'
সাফল্য, খেলার ধরনসহ আরও অনেক কিছু বিবেচনায় বর্তমান সময়ের সবচেয়ে শক্তিশালী দল ইংল্যান্ড। ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি; দুই ফরম্যাটেরই বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংলিশরা। সেটাই মনে করাতে চাইলেন তামিম, 'ইংল্যান্ড সিরিজও বড় সিরিজ। আমি কেন খেলছি? ওদের পেস বোলিং আক্রমণ আরও ভালো আছে। তাহলে আমি কেন খেলছি?'
২০০৭ সালে জাতৗয় দলে অভিষেক হওয়া তামিম তিন ফরম্যাট মিলিয়ে ৩৭৪ ম্যাচে ১৪ হাজার ৮৫৭ রান করেছেন, সেঞ্চুরি করেছেন ২৫টি। রান ও সেঞ্চুরিতে তিনিই সবার উপরে। আর কারও ১৫টি সেঞ্চুরিও নেই। বাংলাদেশের একমাত্র ব্যাটসম্যান হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে সেঞ্চুরি করেছেন তিনি। তামিমের অভিষেকের পর বাংলাদেশ খেলেছে ২৫৮টি ওয়ানডে, তিনি খেলেছেন ২৩১টি ম্যাচ। তার অভিষেক থেকে বাংলাদেশ খেলেছে ৮৭ টেস্ট, তামিম খেলেছেন ৬৯টি। অভিষেকের পর বাংলাদেশের খেলা ৯৪ টি-টোয়েন্টির মধ্যে তামিম খেলেছেন ৭৪টি ম্যাচ।