মিরাজ ভেল্কিতে অল্পেই শেষ ইংল্যান্ড, সিরিজ জয়ের হাতছানি
সুযোগটাকে কীভাবে কাজে লাগাতে হয়, করে দেখালেন মেহেদী হাসান মিরাজ। শামীম হোসেন পাটোয়ারীর জায়গায় একাদশে সুযোগ পেয়েই বল হাতে দলের ত্রাতা হয়ে উঠলেন বাংলাদেশের এই অলরাউন্ডার। তার ভুবন ভোলানো বোলিংয়ের সঙ্গে থাকলো সাকিব আল হাসান, হাসান মাহমুদ, মুস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদদের দাপট। তাতে দিশেহারা ইংল্যান্ড বড় সংগ্রহ গড়তে পারলো না, প্রথমবারের মতো তাদের বিপক্ষে সিরিজ জেতার সম্ভাবনা যেন বাংলাদেশের আরও বাড়লো!
রোববার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে শেষ বলে শেষ উইকেট হারানো ইংল্যান্ড ১১৭ রান তুলেছে। বাংলাদেশের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে এটাই তাদের সর্বনিম্ন সংগ্রহ, পুরো ২০ ওভার ব্যাটিং করে ইংল্যান্ডের এটা সর্বনিম্ন সংগ্রহ। দলটির কোনো ব্যাটসম্যান ৩০ রানও পেরোতে পারেননি। সর্বোচ্চ ২৮ রানের ইনিংস খেলেন বেন ডাকেট। সফরকারীদের ছয়জন ব্যাটসম্যান দুই অঙ্কের রান করতে পারেননি।
টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নেমে শুরুটা ভালো করতে পারেনি ইংল্যান্ড। শুরুতেই তাসকিনের বোলিং তোপে দিগ হারায় তারা। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে ইংলিশ ওপেনার ডেভিড মালানকে ফিরিয়ে দেন বাংলাদেশের এই পেসার। থার্ড ম্যানে হাসান মাহমুদের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে ৮ বলে ৫ রান করেন মালান।
দ্বিতীয় উইকেটে চাপ কাটিয়ে তোলেন ফিল সল্ট ও মঈন আলী। টি-টোয়েন্টির মেজাজে রান না তুলতে পারলেও তারা শুরুর ধাক্কা সামলে নেন এ দুজন। ইংল্যান্ডের ইনিংস যখন অনেকটাই গোছালো, তখনই আঘাত হানেন সাকিব আল হাসান। বাংলাদেশ অধিনায়ক নিজের বলেই ক্যাচ নিয়ে সল্টকে বিদায় করে দেন। ১৯ বলে ৩টি চার ও একটি ছক্কায় ২৫ রান করেন সল্ট।
দ্বিতীয় উইকেট হারানো ইংলান্ডের চাপ আরও বাড়িয়ে দেন হাসান মাহমুদ। আগের ম্যাচে দুর্দান্ত বোলিং করা ডানহাতি এই তরুণ পেসার ইংলিশ অধিনায়ক জস বাটলারকে উইকেটে টিকতেই দেননি। দারুণ এক ডেলিভারিতে ৪ রান করা বাটলারের স্টাম্প উপড়ে নেন হাসান। এ সময় তোপ দাগেন মেহেদী হাসান মিরাজও। ডানহাতি এই স্পিনার ১৫ রান করা মঈন আলীকে ফেরান।
এই চাপ সামলে ইংল্যান্ডকে পথ দেখাতে থাকেন বেন ডাকেট ও স্যাম কারান। পঞ্চম উইকেটে ৩২ বলে ৩৪ রানের জুটি গড়ে তোলেন এ দুজন। ১৫তম ওভারে এই জুটি ভাঙেন মিরাজ, এক বলের ব্যবধানে তার শিকারে পরিণত হন কারান ও ক্রিস ওকস। কারান ১৬ বলে ১২ রান করেন, ওকস দুই বল খেলে রানের খাতা খুলতে পারেননি।
নিজের শেষ ওভার করতে এসে আরেকটি উইকেট নেন মিরাজ, এবার তার শিকার ক্রিস জর্ডান। ৪ ওভারে মাত্র ১২ রানে ৪ উইকেট, যা টি-টোয়েন্টিতে তার ক্যারিয়ার সেরা বোলিং। এর আগে আরব আমিরাতের বিপক্ষে ১৭ রানে নেওয়া ৩ উইকেট ছিল ক্যারিয়ার সেরা বোলিং। ৯১ রানে ৬ উইকেট হারানো ইংল্যান্ড শেষ পর্যন্ত ১১৭ রানে পৌঁছায় ডাকেট ও রেহান আহমেদের ব্যাটে।
ডাকেট ২৮ বলে ২টি চারে ইনিংস সেরা ২৮ রান করে মুস্তাফিজুর রহমানের শিকারে পরিণত হন। রেহান ১১ বলে ১১ রান করেন। তাসকিন ৪ ওভারে ২৭ রান একটি উইকেট নেন। ৩.৫ ওভারে ১৯ রানে একটি উইকেট পান মুস্তাফিজ। ৩ ওভারে ১৩ রানে সাকিবের শিকার এক উইকেট। ২ ওভারে ১০ রানে এক উইকেট পান হাসান।