লিটন-রনি তাণ্ডবের পর সাকিব-হৃদয় ঝড়, বাংলাদেশের বিশাল সংগ্রহ
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রতিটা ইনিংসই হয়ে উঠেছে হাইলাইটসের মতো। শুরু থেকে না দেখলে বোঝার উপায় নেই যে, এটা হাইলাইটস নাকি ইনিংস চলছে। ওয়ানডে সিরিজে দলগত, ব্যক্তিগত অনেক মাইলফলক গড়া বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি সিরিজেও আছে একই ছন্দে। রান পাহাড় গড়ে প্রথম টি-টোয়েন্টি জেতা সাকিব আল হাসানের দল দ্বিতীয় ম্যাচেও ব্যাট হাতে শাসন করলো।
দ্রুততম হাফ সেঞ্চুরির রেকর্ড লিটন কুমার দাস ও রনি তালকুদার আবারও তাণ্ডব চালালেন, শেষটা সামলালেন সাকিব আল হাসান ও তাওহিদ হৃদয়। তাতে ফের ফুলেফেঁপে উঠলো বাংলাদেশের ইনিংস। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ৩ উইকেটে ২০২ রান তুলেছে বাংলাদেশ। ২০ ওভারে নয়, ১৭ ওভারে এই রান তুলেছে ঘরের মাঠের দলটি। বৃষ্টির কারণে ম্যাচের দৈর্ঘ্য কমিয়ে আনা হয়।
প্রথম টি-টোয়েন্টিতেও ঝড় তুলেছিলেন লিটন ও রনি। উদ্বোধনী জুটিতে ৭.১ ওভারে ৯১ রান তোলেন তারা। এর মাঝে হয়ে যায় নিজেদের সর্বোচ্চ রানের পাওয়ার প্লের রেকর্ড। ১৯.২ ওভারে ৫ উইকেটে ২০৭ রান তোলে বাংলাদেশ। ইনিংসে ছিল ১৭টি চার ও ৯টি ছক্কা। আজ ১৭ ওভারেই ২০০ রান পূর্ণ করা বাংলাদেশের ইনিংসে ছিল ১৯টি চার ও ৮টি ছক্কা।
উইকেটে নেমেই আয়ারল্যান্ডের বোলারদের ওপর দিয়ে ঝড় বইয়ে দেন লিটন ও রনি। দুজনই খেলতে থাকেন খুন মেজাজে। কয়েকটি শট খেলে উইকেটে মানিয়ে নেওয়া বাংলাদেশের এই ব্যাটসম্যান চোখের পলকে স্কোরকার্ডের চেহারা পাল্টে ফেলেন। পাওয়ার প্লের ৫ ওভার থেকেই ৭৩ রান তোলেন লিটন-রনি। বেশিরভাগ ফিল্ডার ৩০ গজে থাকার সুবিধা কাজে লাগিয়ে মারকুটে ব্যাটিংই করে যেতে থাকেন তারা।
উদ্বোধনী জুটিতে ৫৬ বলে ১২৪ রানের অসাধারণ জুটি গড়েন লিটন-রনি। এর মাঝে মাত্র ১৮ বলে ৫টি চার ও ৩টি ছক্কায় হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন লিটন। যা বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি ইতিহাসের দ্রুততম হাফ সেঞ্চুরির রেকর্ড। দীর্ঘদিন ধরে এই রেকর্ডটি ছিল মোহাম্মদ আশরাফুলের দখলে। ২০০৭ বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ২০ বলে হাফ সেঞ্চুরি করেন সাবেক এই অধিনায়ক। লিটনের হাফ সেঞ্চুরিটি টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে যৌথভাবে সপ্তম দ্রুততম।
বাংলাদেশের উদ্বোধনী জুটি ভাঙে রনির বিদায়ে। বিপিএল দিয়ে প্রায় আট বছর জাতীয় দলে জায়গা করে নিয়মিত পারফর্ম করে যাওয়া ডানহাতি এই ওপেনার ২৩ বলে ৩টি চার ও ২টি ছক্কাসহ ১৯১.৩০ স্ট্রাইক রেটে ৪৪ রান করেন। ১৪ রান পরে গিয়ে থামেন লিটন। খুনে ব্যাটিং করার দিনে লিটন থামেন ১২তম ওভারের শেষ বলে।
সংক্ষিপ্ততম ফরম্যাটের দশম হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেওয়ার দিনে ৪১ বলে ১০টি চার ও ৩টি ছক্কাসহ ২০২.৪৩ স্ট্রাইক রেটে ৮৩ রান করের ঝলমলে ইনিংস খেলেন ক্ল্যাসিক এই ব্যাটসম্যান। এটাই তার ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস। তার আগের সর্বোচ্চ ছিল ৭৩ রানের ইনিংস। এরপর বাংলাদেশের স্কোরকার্ড ঝলমলে করে তোলেন সাকিব ও হৃদয়। সাকিব ২৪ বলে ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় ৩৮ রানে অপরাজিত থাকেন। ১৩ বলে ৩টি চার ও একটি ছক্কায় ২৪ রান করেন হৃদয়। আয়ারল্যান্ডের বেন হোয়াইট ২টি ও মার্ক এডেয়ার একটি উইকেট পান।