রশিদের হ্যাটট্রিক ম্লান করে ইতিহাস গড়ে কলকাতাকে জেতালেন রিংকু
স্বীকৃত টি–টোয়েন্টিতে এত দিন যা কেউ দেখেনি, এবার সেটিই করে দেখালেন কলকাতা নাইট রাইডার্সের রিংকু সিং। গুজরাট টাইটানসের বিপক্ষে ম্যাচের শেষ ৫ বলে ৫ ছক্কা মেরে কলকাতাকে ৩ উইকেটের অবিশ্বাস্য জয় এনে দিয়েছেন রিংকু।
দুই দলের হয়ে বিজয় শঙ্কর আর ভেঙ্কটেশ আইয়ারের ঝোড়ো ব্যাটিং, সঙ্গে রশিদ খানের হ্যাটট্রিক মিলিয়ে নাটকীয়তা কম ছিল না গুজরাট–কলকাতা ম্যাচটিতে। তবে সব ছাপিয়ে ক্রিকেট ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে রিংকুর এই কান্ড!
প্রথমে ব্যাট করে বিজয় শঙ্করের ২৪ বলে ৬৩ রানের ঝড়ো ইনিংস আর সাই সুদর্শনের ৩৮ বলে ৫৩ রানের ইনিংসে ৪ উইকেট হারিয়ে ২০৪ রান তোলে গুজরাট। গুজরাটের দেওয়া ২০৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে কলকাতার জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়ে তোলেন ভেঙ্কটেশ আইয়ার। ৮ চার ৫ ছয়ে ৪০ বলে ৮৩ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলে যান ভেঙ্কটেশ। অধিনায়ক নীতিশ রানা খেলেন ২৯ বলে ৪৫ রানের ইনিংস।
এ দুজনের বিদায়ের পর রশিদ খান টানা তিন বলে আন্দ্রে রাসেল, সুনীল নারাইন ও শার্দুল ঠাকুরকে তুলে নিলে বিপদে পড়ে যায় কলকাতা। রশিদের হ্যাটট্রিকই শিরোনামে জায়গা করে নেবে বলে মনে হচ্ছিল।
শেষ ওভারে ২৮ রান নেওয়া তখন অসম্ভবই মনে হচ্ছিল। সেখান থেকে ২১ বলে ৪৮ রানের অবিশ্বাস্য ইনিংসে কলকাতাকে জিতিয়ে দেন রিংকু।
শেষ ওভারে কলকাতার জয়ের জন্য দরকার ছিল ২৮ রান। ইয়াশ দয়ালের করা প্রথম বলে উমেশ যাদব সিঙ্গেল নিয়ে স্ট্রাইক দেন রিংকুকে। বাঁহাতি দয়ালের দ্বিতীয় বলটি ছিল অফসাইডে ফুল টস, যেটি এক্সট্রা কাভার দিয়ে বাউন্ডারি পার করেন রিংকু। পরের বলও ছিল ফুল টস। প্যাডে আসা এই বলটি রিংকু উড়িয়ে দেন ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার দিয়ে।
তখনও জিততে হলে কলকাতার তিন বলে ১৬ রান দরকার বলে খুব একটা দুশ্চিন্তা ছিল না গুজরাটের। এরপর দয়াল চতুর্থ বলটিও ফুল টস দিলে লং অফ দিয়ে ছয় মারেন রিংকু। টানা তিন ছয়ে নড়েচড়ে বসে কলকাতার ডাগআউট। জয় তখন দুই বলে দশ রানের ব্যাপার!
সতীর্থদের সঙ্গে শলা–পরামর্শের পর পঞ্চম বলে স্লোয়ার মারেন দয়াল, লেন্থও ছিল কম, রিংকু এবার ছয় মারেন লং অন দিয়ে। শেষ বলে চার হলেই চলতো কলকাতার।
অফ স্টাম্পের বাইরে পড়া এই বলও সোজা বোলারের মাথার ওপর দিয়ে পাঠান রিংকু। বল বাউন্ডারি পার হওয়ার আগেই অসম্ভবকে সম্ভব করার আনন্দে উদ্বেলিত হয়ে ওঠেন রিংকু। ডাগআউট থেকে বেরিয়ে আসা কলকাতার খেলোয়াড় ও কোচিং স্টাফরা তখন অবিস্মরণীয় এক জয়ের উদযাপনে ব্যস্ত।