তাওহিদের হৃদয় জুড়ানো ব্যাটিংয়ে কুমিল্লার জয়, খাদের কিনারে ঢাকা
সিলেট সিক্সার্সের হয়ে গত বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) দুর্বার ছিলেন তাওহিদ হৃদয়। চোখ ধাঁধানো সব ইনিংসে আসরের তৃতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। এবারের বিপিএলে সেই হৃদয়ের দেখা মিলছিল না। এমন ম্যাচে তিনি রুদ্ররূপ নিলেন, যেখানে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের সামনে ছিল বড় লক্ষ্য। তিনে নেমে ব্যাট হাতে রাজত্ব কায়েম করলেন হৃদয়, বাংলাদেশের ষষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে বিপিএলে সেঞ্চুরি করে কুমিল্লাকে এনে দিলেন দারুণ এক জয়।
শুক্রবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দুর্দান্ত ঢাকাকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। ম্যাচসেরা হৃদয়ের বীরত্বগাঁথা ব্যাটিংয়ে আসরের পঞ্চম জয় পেল কুমিল্লা। সাত ম্যাচে পাঁচ জয়ে ১০ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার দুই নম্বরে আছে তারা। বিপিএলের উদ্বোধনী ম্যাচে এই কুমিল্লাকেই হারানো ঢাকা টানা সাত ম্যাচ হারলো। এক জয়ে দুই পয়েন্ট নিয়ে তালিকার তলানির দল তারা। এই হারে প্লে-অফে ওঠার পথ প্রায় বন্ধ হয়ে গেল ঢাকার।
টসে জিতে আগে ব্যাটিং করতে নামে ঢাকা। ১৬ ওভারের পর রান তোলার গতি কমে গেলেও শেষ পর্যন্ত ৪ উইকেটে ১৭৫ রানের লড়াকু সংগ্রহ গড়ে দলটি। সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় এখন পর্যন্ত সবার উপরে থাকা নাঈম শেখ ও সাইফ হাসান করেন হাফ সেঞ্চুরি। জবাবে দ্বিতীয় ওভারে ব্যাটিংয়ে নামা হৃদয় দলের জয় নিশ্চিত হওয়া পর্যন্ত ব্যাট হাতে ছড়ি ঘোরান হৃদয়। তার হৃদয় জুড়ানো ব্যাটিংয়ে পাঁচ বল হাতে রেখেই জয় তুলে নেয় কুমিল্লা।
বড় লক্ষ্য তাড়ায় টিকতে পারেননি উইল জ্যাকস ও অধিনায়ক লিটন কুমার দাস। এরপর উইকেটে যাওয়া হৃদয় একাই কুমিল্লাকে এগিয়ে নিয়ে যান। মাঝে শুধু ব্রুক গেস্টের সঙ্গ পেয়েছেন তিনি। হৃদয়ের সঙ্গে ৬৮ রানের জুটি গড়া গেস্ট ১৪তম ওভারে আউট হন। কুমিল্লার হয়ে প্রথম ম্যাচ খেলতে নামা ইংল্যান্ডের ডানহাতি এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান ৩৫ বলে ৪টি চার ও একটি ছক্কায় ৩৪ রান করেন।
দলীয় ১০৭ রানে গেস্ট আউট হলেও দলকে কোনো চাপই বুঝতে দেননি হৃদয়। অন্য প্রান্তে উইকেট পড়তে থাকলেও সেদিকে দৃষ্টি না দিয়ে একই ছন্দে খেলে যান তিনি। ৩২ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করা এই ব্যাটসম্যান পরের ৫০ রান তোলেন স্রেফ ২১ বলে। ৫৩ বলে সেঞ্চুরি ছোঁয়া হৃদয় শেষ পর্যন্ত ৫৭ বলে ৮টি চার ও ৭টি চারে ১০৮ রানে অপরাজিত থাকেন, টি-টোয়েন্টিতে এটাই তার প্রথম সেঞ্চুরি। ঢাকার শরিফুল ইসলাম ২টি এবং আরফাত সানি, মোহাম্মদ ইরফান ও চতুরঙ্গ ডি সিলভা একটি করে উইকেট পান।
হৃদয়ের আগে বিপিএলে সেঞ্চুরি করা পাঁচ বাংলাদেশি হলেন শাহরিয়ার নাফিস, মোহাম্মদ আশরাফুল, সাব্বির রহমান, তামিম ইকবাল ও নাজমুল হোসেন শান্ত। হৃদয়ের সেঞ্চুরিটি অবশ্য বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সপ্তম। বিপিএলে বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে সেঞ্চুরি করেন নাফিস, একমাত্র বাংলাদেশি হিসেবে বিপিএলে দুটি সেঞ্চুরির মালিক তামিম।
এর আগে ঢাকার পক্ষে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস খেলেন নাঈম। বাঁহাতি এই ওপেনার ৪৫ বলে ৯টি চার ও একটি ছক্কায় ৬৪ রান করেন। ৪২ বলে ৪টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৫৭ রান করেন সাইফ। এ ছাড়া চতুরঙ্গ ১৪, অ্যালেক্স রস ২১ ও মেহরব হোসেন ১১ রান করেন। কুমিল্লার ক্যারিবীয় পেসার ম্যাথু ফোর্ড ৩টি এবং আলিস আল ইসলাম একটি উইকেট পান।