লিটনের দুর্বার ইনিংসের পরও সিলেটের বিপক্ষে হার কুমিল্লার
বড় লক্ষ্যে ব্যাটিং করতে নেমে শুরুটা ঠিকঠাক ছিল না কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের। তাই রান তোলার গতিও ঠিক থাকেনি। ৯ ওভারে ২ উইকেটে ৫৭ রান তোলে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। এরপরও লিটন কুমার দাসের ব্যাটে ঠিক পথেই থাকা কুমিল্লা। আরিফুল হকের করা দশম ওভার থেকে ২২ রান তোলা লিটন শেষ ওভার পর্যন্ত ব্যাটিং করে খেলেন দুর্বার এক ইনিংস। শেষে নেমে চালান আন্দ্রে রাসেলও। কিন্তু তাদের চেষ্টা কাজে আসেনি, দারুণ জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে সিলেট স্ট্রাইকার্স।
সোমবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে ১২ রানে হারিয়েছে সিলেট স্ট্রাইকার্স। এই জয় অবশ্য কাজে আসছে না তাদের, প্লেঅফের দৌড় থেকে আগেই ছিটকে গেছে সিলেট। ১১ ম্যাচে চার জয়ে আট পয়েন্ট নিয়ে তালিকার ছয় নম্বরে বর্তমান রানার্সআপরা। শেষ ম্যাচে জিতে ১০ পয়েন্ট করলেও বিদায় নিয়ে নিতে হবে সিলেটকে। ১০ ম্যাচে সাত জয়ে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে প্লেঅফ নিশ্চিত করা কুমিল্লা আছে তালিকার দুই নম্বরে। টানা পাঁচ ম্যাচ জেতার পর হারলো লিটনের দল।
টস জিতে ব্যাটিং করতে নামে সিলেট। শুরুর ব্যাটসম্যানরা সেভাবে ব্যাটিং না করতে পারলেও ছয়ে নেমে সিলেটকে ঠিক পথে রাখেন ম্যাচ সেরা বেনি হাওয়েল। ব্যাটে-বলে আলো ছড়ানো ইংলিশ এই অলরাউন্ডারের ঝড়ো ইনিংসে ৫ উইকেটে ১৭৭ রান তোলে সিলেট। অবদান রাখেন কেনার লুইস, মোহাম্মদ মিথুনরা। বড় লক্ষ্য তাড়ায় লিটন ছাড়া কুমিল্লার কেউ-ই সেভাবে লড়াই করতে পারেননি। অধিনায়কের ৮৫ রানের ঝলমলে ইনিংসের পরও কুমিল্লার ইনিংস শেষ হয় ৮ উইকেটে ১৬৫ রানে।
লক্ষ্য তাড়ায় দলীয় ১৬ রানেই বিদায় নেন ইমরুল কায়েস। ভালো শুরু করে ঠিকতে পারেননি তাওহিদ হৃদয়ও। দলীয় ৩৯ রানে আউট হওয়ার আগে ১৫ বলে ১৭ রান করেন তিনি। ৯ ওভারে ২ উইকেটে কুমিল্লার স্কোরকার্ডে জমা হয় ৫৭ রান। এরপর মুহূর্তেই দৃশ্যপট পাল্টে দেন লিটন। সিলেট পেসার আরিফুলের করা দশম ওভারে তিনটি চার, একটি ছক্কা ও দুটি ডাবলে ২২ রান তোলেন তিনি।
ছন্দ পেয়ে যাওয়া লিটন এরপর জনসন চার্লসের সঙ্গে তৃতীয় উইকেটে ৫৬ বলে গড়েন ৭৯ রানের জুটি। এই জুটির পুরো কৃতিত্বই লিটনের। জুটি গড়ার পথে ৩৫ বলে ৬০ করেন তিনি। চার্লস রান তুলতে সংগ্রাম করছিলেন। ক্যারিবীয় এই ব্যাটসম্যান ২১ বলে ১২ রান করে আউট হন। মঈন আলী পারেননি টিকতে, ৫ বল খেলেও রানের খাতা খুলতে পারেননি ইংলিশ এই অলরাউন্ডার।
শেষ ওভার পর্যন্ত কুমিল্লার আশা বেঁচে থাকে লিটন ও রাসেলের ব্যাটে। জয়ের জন্য শেষ ৬ বলে কুমিল্লার দরকার ছিল ২৫ রান, কিন্তু ২ উইকেট হারিয়ে দলটি তোলে ১২ রান। এই ওভারের প্রথম বলে আউট হওয়ার আগে ৫৮ বলে সাতটি চার ও তিনটি ছক্কায় ৮৫ রানের অসাধারণ এক ইনিংস খেলেন লিটন। শেষ বলে আউট হওয়া রাসেল ১৪ বলে তিনটি চার ও একটি ছক্কায় ২৩ রান করেন। সিলেটের তরুণ পেসার তানজিম হাসান সাকিব ৩টি উইকেট নেন। একটি উইকেট পাওয়া শফিকুল ইসলাম দারুণ বোলিং করেন। বাঁহাতি এই পেসার ৪ ওভারে মাত্র ১৮ রান খরচা করেন। একটি করে উইকেট পান সামিত প্যাটেল ও ম্যাচ সেরা বেনি হাওয়েল।
এর আগে ব্যাট হাতেও সিলেটকে পথ দেখান হাওয়েল। ডানহাতি এই অলরাউন্ডার ৩১ বলে ছয়টি চার ও চারটি ছক্কায় ৬২ রানের খুনে ইনিংস খেলেন। দুটি করে চার ও ছক্কায় ২৫ বলে ৩৩ রান করেন কেনার লুইস। এ ছাড়া জাকির হাসান ১৮, পুরো আসরে নিজের ছায়া হয়ে থাকা নাজমুল হোসনে শান্ত ১২ ও অধিনায়ক মিথুন ২৮ রান করেন। কুমিল্লার দুই স্পিনার সুনীল নারাইন ও রিশাদ হোসেন ২টি করে উইকেট নেন। একটি উইকেট পান পেসার মুশফিক হাসান।