জিতেও ব্যাটিং নিয়ে দুশ্চিন্তায় বাংলাদেশ
সিরিজের চতুর্থ টি-টোয়েন্টিতে জিম্বাবুয়েকে ৫ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। এতে টানা চার ম্যাচ জিতে ৪-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল স্বাগতিকরা। সিরিজের আরেকটি ম্যাচ বাকি, সেটা জিতলে জিম্বাবুয়েকে হোয়াইটওয়াশের স্বাদ দেবে নাজমুল হাসান শান্তর দল।
সিরিজে ৪-০ ব্যবধানে এগিয়ে থাকলেও বাংলাদেশ চিন্তামুক্ত থাকতে পারছে না। আর তাদের মাথাব্যথার কারণ ব্যাটসম্যানদের ফর্ম। সিরিজের চার ম্যাচের কোনোটিতেই বলার মতো ব্যাটিং করতে পারেননি বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। দলীয় সংগ্রহও আটকে গেছে ছোট থেকে মাঝারি রানে। বর্তমান সময়ের টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের সঙ্গে যা বড্ড বেমানান।
বিশ্বকাপের আগে ব্যাটসম্যানদের এমন ফর্মহীনতা বাংলাদেশের জন্য দুশ্চিন্তার কারণই বটে। সঙ্গে রয়েছে ফিল্ডিংয়ে ক্যাচ ছাড়ার সমস্যাও। জিম্বাবুয়ের মতো দলের বিপক্ষে বিশ্বকাপের আগে খেলা প্রস্তুতিতে কতটুকু সহায়তা করবে, সেটিও অনেক বড় প্রশ্ন।
স্বাগতিকদের দেওয়া ১৪৪ রানের ছোট লক্ষ্যও তাড়া করতে ব্যর্থ হয়েছে জিম্বাবুয়ে। ১৩৮ রান তুলেই নিজেদের সবকটি উইকেট হারায় দলটি। ম্যাচ হারে মাত্র পাঁচ রানের ব্যবধানে। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩১ রান করেন জোনাথন ক্যাম্পবেল। শেষ ওভারের তৃতীয় বলে মুজারাবানি সাকিব আল হাসানের বলে ছয় মারলেও পরপর দুই বলে শেষ দুই উইকেট তুলে নেন বাংলাদেশের বাঁহাতি অলরাউন্ডার। ৩৫ রান দিয়ে চারটি উইকেট শিকার করেছেন তিনি। এছাড়া আইপিএল খেলে এসে দলে ফেরা মুস্তাফিজুর রহমান তিনটি ও তাসকিন নিয়েছেন দুটি উইকেট।
এর আগে মিরপুরে সিরিজের চতুর্থ টি-টোয়েন্টিতে জিম্বাবুয়েকে মাত্র ১৪৪ রানের লক্ষ্য দেয় বাংলাদেশ। অথচ উদ্বোধনী জুটিতে দলকে দুর্দান্ত শুরু এনে দেন দুই ওপেনার সৌম্য সরকার ও তানজিদ হাসান তামিম। ১১.২ ওভার খেলে ১০১ রানের জুটি গড়েন দুজনে।
সৌম্য ও তানজিদের গড়ে দেওয়া ভিত্তিও দলের খুব বেশি কাজে আসেনি পরবর্তী ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায়। আগের তিন ম্যাচেও বাংলাদেশের ব্যাটিং পারফরম্যান্স বলার মতো কিছু ছিল না। বিশ্বকাপ যত এগিয়ে আসছে, দলের দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে ব্যাটসম্যানদের ফর্ম।
মিরপুরে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে দুই ওপেনার সৌম্য সরকার ও তানজিদ হাসান তামিম বাংলাদেশকে এনে দেন দারুণ এক শুরু। টি-টোয়েন্টিতে উদ্বোধনী উইকেটে দুজনে গড়েন বাংলাদেশের তৃতীয় সেরা জুটি, মিরপুরে যেটি সর্বোচ্চ। ৬৮ বলে ১০১ রান যোগ করেন দুই বাঁহাতি ওপেনার।
তানজিদ নিজের হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ৩৪ বলে। সাত চার ও এক ছয়ে ৩৭ বলে ৫২ রান করে ফেরেন তানজিদ। এরপর সৌম্যও আউট হন দ্রুতই। ৩৪ বলে ৪১ রান করেছেন তিনি। সৌম্য আউট হওয়ার পরই মূলত ধ্বস নামে বাংলাদেশের ইনিংসে। এর মধ্যে ১২১ থেকে ১৩২, এই ১১ রান তুলতে ছয় উইকেট হারায় নাজমুল হাসান শান্তর দল।
শেষ আট উইকেটর পতন ঘটে মাত্র ২২ রানের ব্যবধানে। আসা-যাওয়ার মিছিলে দুই ওপেনারের এনে দেওয়া শুরুকে বড় সংগ্রহে রূপান্তর করতে পারেননি বাকি ব্যাটসম্যানরা। প্রায় এক বছর পর দলে ফেরা সাকিব আল হাসান তিন বল খেলে মাত্র এক রান করতে পেরেছেন।
জিম্বাবুয়ের বোলারদের মধ্যে ২০ রানে তিন উইকেট শিকার করেছেন লুক জংউয়ি, দুটি করে উইকেট পেয়েছেন বেনেট ও এনগারাভা। পুরো ২০ ওভারও ব্যাট করতে পারেনি বাংলাদেশ। অলআউট হয়েছে এক বল বাকি থাকতেই।
সব মিলিয়ে গোটা সিরিজ জুড়েই বাংলাদেশের ব্যাটিং দিশা খুঁজে পায়নি। আজ দারুণ শুরুর পরও ১৪৩ রানে অলআউট হওয়া তো আছেই, এই সিরিজে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ মাত্র ১৬৫। দুটি ম্যাচে রান তাড়া করেছে নাজমুল হাসান শান্তর দল। সেখানেও লক্ষ্য তাড়ায় তুলনামূলক বেশি ওভার খেলেছেন ব্যাটসম্যানরা। মারকাটারি টি-টোয়েন্টি ব্যাটিংয়ের যুগে যা কতটা চলনসই, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে।