শ্রীলঙ্কাকে সর্বনিম্ন রানে গুটিয়ে দিয়ে জিতল দক্ষিণ আফ্রিকা
দুই দলেরই ব্যাটিং দুর্দশা দেখা গেল, ছড়ি ঘোরালেন কেবল বোলাররা। এর মাঝেও অবশ্য ব্যতিক্রম থাকলো, দক্ষিণ আফ্রিকা চাপে পড়লেও তা কাটিয়ে উঠলো। সেটাই তাদের জন্য হলো জয়ের সহায়ক। ম্যাচসেরা আরনিখ নরকিয়া, কাগিসো রাবাদা, কেশব মহারাজদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে শ্রীলঙ্কাকে অল্প রানে আটকে সহজ জয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ মিশন শুরু করলো প্রোটিয়ারা।
সোমবার নিউ ইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে গ্রুপ 'ডি' এর প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ৬ উইকেটে হারিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। শ্রীলঙ্কা তাদের দ্বিতীয় ম্যাচে আগামী ৮ জুন বাংলাদেরে বিপক্ষে লড়বে। একই দিনে দক্ষিণ আফ্রিকা পরের ম্যাচ খেলবে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে।
টস জিতে আগে ব্যাটিং করতে নামা শ্রীলঙ্কা শুরুতে ধীর গতির থাকলেও উইকেট হারায়নি। কিন্তু চতুর্থ ওভার থেকে যে উইকেট বৃষ্টি শুরু হয়, তা আর থামেনি। নরকিয়া, ইয়ানসেন, মহারাজদের বিপক্ষে দলটির কেউ-ই সুবিধা করতে পারেননি। ১৯.১ ওভারে ৭৭ রানে অলআউট হয় শ্রীলঙ্কা, যা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তাদের সর্বনিম্ন দলীয় সংগ্রহ। তিনজন ব্যাটসম্যান কেবল দুই অঙ্কের রান করেন, সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস ১৯ রানের। দলটির চারজন শূন্য রানে আউট হন।
জবাবে দক্ষিণ আফ্রিকাকেও বেগ পেতে হয়। লঙ্কান বোলারদের সামনে তাদের ব্যাটসম্যানরা রান তুলতে পারছিলেন না, হারাতে হচ্ছিল উইকেটও। পাঁচ নম্বরে নেমে প্রোটিয়াদের জয়ের পথ সহজ করেন হেনরিখ ক্লাসেন। ডেভিড মিলারকে সঙ্গে নিয়ে ম্যাচ শেষ করেন জয় তুলে নেওয়ার কাজ। ৭৮ রানের লক্ষ্য পাড়ি দিতেই দক্ষিণ আফ্রিকাকে ১৭ ওভার পর্যন্ত ব্যাটিং করতে হয়।
ছোট লক্ষ্য তাড়ায় সাবলীল শুরুর ইঙ্গিতই দিয়েছিল প্রোটিয়ারা। কিন্তু দ্বিতীয় ওভারে রিজা হেনড্রিকসকে লঙ্কান পেসার নুয়ান থুসারা ফিরিয়ে দিলে চাপে পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। রান তুলতে সংগ্রাম করার পাশাপাশি দলীয় ২৩ রানে হারায় অধিনায়ক এইডেন মার্করামকে, ১৪ বলে ১২ রান করেন তিনি। কুইন্টন ডি কক একপাশ আগলে রাখলেও টি-টোয়েন্টি মেজাজে ব্যাটিং করতে পারছিলেন না।
দলীয় সংগ্রহ ৫০ পেরোনোর পর থামেন তিনি, বাঁহাতি এই ওপেনার ২৭ বলে একটি ছক্কায় ২০ রান করেন। ভোগেন ট্রিস্টান স্টাবসও, ২৮ বলে করেন ১৩ রান। মারতে পারেনি কোনে চার-ছক্কা। খুনে মেজাজের ক্লাসেনও আজ ধীর-স্থির ছিলেন, ২২ বলে একটি করে চার ও ছক্কায় অপরাজিত ১৯ রান করেন তিনি। শ্রীলঙ্কার ভানিন্দু হাসারাঙ্গা ২টি এবং থুসারা ও শানাকা একটি করে উইকেট নেন।
এর আগে ব্যাট হাতে অসহায় আত্মসমর্পণ করা শ্রীলঙ্কার পক্ষে কেউ-ই ২০ রানের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। ৩০ বলে একটি চারে সর্বোচ্চ ১৯ রান করেন ওপেনার কুশল মেন্ডিস। অভিজ্ঞ অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস ১৬ বলে ১৬ রান করেন। এর বাইরে শুধু কামিন্দু মেন্ডিস দুই অঙ্কের ররান করেন, ১১ রান আসে তার ব্যাট থেকে। আগুনে বোলিংয়ে ম্যাচসেরার পুরস্কার জেতা নরকিয়া ৪ ওভারে মাত্র ৭ রানে ৪টি উইকেট নেন, যা তার ক্যারিয়ার সেরা বোলিং। রাবাদা ও মহারাজ ২টি করে উইকেট নেন। একটি উইকেট পান বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচ খেলতে নামা ডানহাতি পেসার ওটনেইল মার্টম্যান।