পুরস্কারের অর্থ আন্দোলনে নিহত রিকশাচালকের পরিবারকে দিলেন মিরাজ
এবারের পাকিস্তান সফরে দুই হাত ভরে পেল বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। প্রথম টেস্ট জয়ের পর পরের টেস্টেও চলে বাংলাদেশের দাপট। রেকর্ডের মালা গেঁথে দ্বিতীয় টেস্টে ৬ উইকেটের জয় তুলে নিয়েছে তারা। প্রথমবারের মতো টেস্টে পাকিস্তানকে হারানোর অধ্যায়ে তাদের বিপক্ষে ২-০ ব্যবধানে সিরিজও জিতেছে বাংলাদেশ, মিলেছে হোয়াইটওয়াশ করার তৃপ্তি।
সিরিজ জয়ের পথে বড় অবদান রেখেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ডানহাতি এই অলরাউন্ডার ব্যাটে-বলে আলো ছড়িয়ে হয়েছেন সিরিজ সেরা। পুরস্কার হিসেবে পাওয় পাঁচ লাখ পাকিস্তানি রুপি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে প্রাণ হারানো এক রিকশাচালকের পরিবারকে উপহার হিসেবে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে উপস্থাপকের বেশ কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার পর মিরাজ বলেন, 'আলহামদুলিল্লাহ, প্রথমবারের মতো আমি দেশের বাইরে ম্যান অব দ্য সিরিজ হয়েছি। সবাই জানেন যে বাংলাদেশে সম্প্রতি সমস্যা গেছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অনেকে শহীদ হয়েছেন এবং ওখানে একজন রিকশাচালক আহত হয়েছিলেন এবং মারা গেছেন। তার পরিবারকে আমি এই উপহারটা দিতে চাই।'
দুই টেস্টেই দারুণ সময় গেছে মিরাজের, ব্যাটে বলে রীতিমতো কাণ্ডারীর ভূমিকা পালন করেছেন। প্রথম টেস্টে পাকিস্তানের প্রথম ইনিংসে এক উইকেট নিয়ে পরে ৭৭ রানের দারুণ ইনিংস খেলেন তিনি। পাকিস্তানের দ্বিতীয় ইনিংসে বল হাতে দেখান আরও দাপট, নেন ৪ উইকেট। দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে পাকিস্তানকে সবচেয়ে বেশি বেগ দেন মিরাজ, শিকার করেন ৫ উইকেট।
পরে ব্যাট হাতে নেমে দলের বিপর্যয় সামলে খেলেন ৭৮ রানের অসাধারণ ইনিংস। যে ইনিংস দিয়ে রেকর্ড বইয়ে নাম তোলেন তিনি। টেস্টের দীর্ঘ ইতিহাসে ৩০ রানের নিচে ৬ উইকেট হারানো দলের পক্ষে আটে নেমে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস খেলা ব্যাটসম্যান এখন মিরাজ। দুই টেস্টের দুই ইনিংসে দুটি হাফ সেঞ্চুরিসহ ৭৭.৫০ গড়ে ১৫৫ রান করেছেন তিনি। চার ইনিংসে উইকেট নিয়েছেন ১০টি, যা দুই দলের মধ্যে সর্বোচ্চ।
দলের জয়ে সিরিজ সেরার পুরস্কার জিতে উচ্ছ্বসিত মিরাজ। এই মুহূর্তে কোনোদিন ভুলবেন না জানিয়ে তিনি বলেন, 'দেশের বাইরে প্রথমবারের মতো সিরিজ সেরা হওয়ায় আমি খুবই খুশি। এখানে বল স্পিন করানো কঠিন, আমি ৫ উইকেট নিয়েছিল প্রথম ইনিংসে। আমার পারফরম্যান্স নিয়ে দলের সবাই খুশি। এই মুহূর্ত আমি কোনোদিন ভুলবো না।'