‘সাকিব অধিনায়কত্ব পেলে দলের জন্য খুবই ভালো হবে’
অধিনায়কত্বের চাপে নিজের ব্যাটিং সত্তা হারিয়ে ফেলার উপক্রম, মুমিনুল হক আর বোঝা বইতে পারছেন না। ব্যাট হাতে নিজেকে ফিরে পেতে টেস্ট অধিনায়কত্ব ছাড়তে চান তিনি। মুমিনুলের এমন ঘোষণার আগে থেকেই অবশ্য নতুন টেস্ট অধিনায়ক নিয়ে আলোচনা শুরু হয়ে যায়। যেখানে সাকিব আল হাসানের নাম সবচেয়ে বড় করে উচ্চারিত হচ্ছে। আর অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটার যদি অধিনায়কত্ব পান, সেটা বাংলাদেশ দলের জন্য খুবই ভালো হবে বলে মনে করেন বিসিবি পরিচালক ও জাতীয় দলের টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন।
ঘরোয়া ক্রিকেটে কোচ-অধিনায়ক জুটি বেধে বেশ কয়েকবার সাকিব করেছেন খালেদ মাহমুদ-সাকিব। তাদের রসায়ণ জমে বেশ। জাতীয় দলের টিম ডিরেক্টর হিসেবেও খুব কাছ থেকে বিশ্বের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডারকে দেখেন খালেদ মাহমুদ। তাই অভিজ্ঞতায় ঠাসা সাকিবের হাতে নেতৃত্ব গেলে দলের জন্য তা দারুণ হবে বলে বিশ্বাস জাতীয় দলের সাবেক এই অধিনায়কের।
নতুন টেস্ট অধিনায়ক নিয়ে বিসিবিতে অনেক আলোচনা। ২ জুন বোর্ড সভাতে বিষয়টি উত্থাপন করা হবে, ফয়সালা হয়ে যেতে পারে এখানেই। সবার মতো খালেদ মাহমুদও সেই অপেক্ষায়। দারুণ সম্পর্ক থাকলেও অধিনায়কত্ব নিয়ে সাকিবের সঙ্গে কোনো কথা হয়নি তার। তিনি বলেন, 'সাকিবের সঙ্গে অধিনায়কত্ব নিয়ে আমার কোনো কথা হয়নি। তবে অন্যান্য বিষয়ে আমাদের কথা হয়।'
'টেস্ট ম্যাচ নিয়ে গতকালও কথা বলেছি বেশ কিছু। ম্যাচের অবস্থা বা অন্যান্য কিছু নিয়ে। খেলার প্রতি তার জ্ঞান অনেক, সব সময় যেটা হয়; ওর সাথে কথা বলে সেই আরামটা পাওয়া যায়। ও যেভাবে সবার সাথে মিশতে পারে, আমার মনে হয় ও যদি অধিনায়কত্ব পায়; তাহলে সেটা দলের জন্য খুবই ভালো হবে।' যোগ করেন খালেদ মাহমুদ।
সাকিব অধিনায়ক হলে টেস্টে আগামী দুই বছরে উন্নতি হবে কিনা? এমন প্রশ্নের উত্তরে টিম ডিরেক্টর বলেন, 'অবশ্যই। ইনজুরি, ফিটনেস এগুলো অনেক ব্যাপার থাকে। সাকিব খুবই অভিজ্ঞ একজন ক্রিকেটার। আমার মনে হয় সে টেস্ট ম্যাচ উপভোগ করে। দুটি টেস্ট ম্যাচে সাকিব যে পরিমাণ বল করেছে, এটাই তার প্রমাণ। কবে সাকিব একটানা এতো বোলিং করেছে আমার মনেও নেই। আমাদের ভয় ছিল দুটি টেস্ট ম্যাচে সাকিব বেশি বোলিং করবে না, কিন্তু সে প্রমাণ করেছে নিজেকে।'
বল হাতে সাকিবকে সব সময়ই সেরা মনে হয় খালেদ মাহমুদের। সাকিবের মতো ক্রিকেটারদের দেশকে আরও উপরে নিয়ে যাওয়া উচিত জানিয়ে তিনি বলেন, ' ম্যাচের আগে ওর ফিটনেস নিয়ে অনেক কথা উঠেছিল। আমি মনে করি বল হাতে সাকিব সব সময় সেরা। ব্যাট হাতে তেমন বড় কিছু করতে পারেনি। ও তো এখনও ক্রিকেট খেলতে চায়, দুই-তিন বছর খেলবে। যতদিনই খেলে, ওদের উচিত বাংলাদেশের জন্য কিছু করা। বাংলাদেশকে অনেক উঁচুতে নিয়ে যাওয়া। সিনিয়র যারা আছে তামিম, মাহমুদউল্লাহ, মুশফিক তাদের দায়িত্ব বাংলাদেশকে অনেক উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া।'
গত কয়েক বছরে টেস্টে নিয়মিত নন সাকিব। বাংলাদেশের সর্বশেষ ১৩ টেস্টের মধ্যে বাঁহাতি এই অলরাউন্ডার খেলেছেন মাত্র ৫টি। বিদেশে টেস্ট হলে প্রায়ই ছুটি নেন তিনি। তবে খালেদ মাহমুদ মনে করেন সাকিব এখনই টেস্টই নিয়মিত খেলতে চান, 'সাকিব সব সময় টেস্ট খেলতে চায় এখন। আমি জানি না কেন কথাটা বারবার আসে, সাকিব টেস্ট খেলতে চায় না।'
'সাকিবের সঙ্গে যতবার কথা বলেছি, সে বলে "আমি অন্য ফরম্যাটের থেকে টেস্ট বেশি উপভোগ করি। আমি সব সময় বেশি টেস্ট খেলতে চাই।" যদি সাকিব খেলতে চায়, সাকিব দিতে চায়, আমি মনে করি সেটা সাকিবেরও একটা পরিবর্তন আসতে পারে। আমি বলছি না সাকিবই টেস্ট অধিনায়ক হবে, তামিমও আছে। মাহমুদউল্লাহ যেহেতু ছেড়ে দিয়েছে, মুশফিকও আছে।' যোত করেন তিনি।