আকাশের আত্মহত্যা: মিতুর জামিন স্থগিত চেয়ে আপিল
ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে আত্মহত্যাকারী চট্টগ্রামের চিকিৎসক মোস্তফা মোরশেদ আকাশের স্ত্রী তানজিলা হক চৌধুরী মিতুকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিনের আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করেছে রাষ্ট্রপক্ষ।
সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকির অবকাশকালীন চেম্বারে আদালতে শুনানির জন্য তালিকায় ছিল। ৯ অক্টোবর এ বিষয়ে শুনানি হবে বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল গিয়াস উদ্দিন আহমেদ।
মিতুর পক্ষের আইনজীবী ছিলেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ এম আমিন উদ্দিন।
২৮ আগস্ট মিতুর জামিন প্রশ্নে জারিকৃত রুল যথাযথ ঘোষণা করে হাইকোর্ট তাকে জামিন দেন।
বত্রিশ বছর বয়সী আকাশ ফেসবুকে নিজের টাইমলাইনে স্ট্যাটাস, ছবি ও ভিডিও দিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্কের অবনতির ঘটনাবলী তুলে ধরেন। তার সবশেষ স্ট্যাটাস ছিল এ রকম-- ‘ভালো থেক আমার ভালোবাসা তোমার প্রেমিকদের নিয়ে’।
চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই আলাউদ্দিন তালুকদার জানান, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের (১৩ নম্বর ওয়ার্ড) চিকিৎসক ছিলেন ডা. আকাশ।
তিনি চন্দনাইশ উপজেলার বরকল বাংলাবাজার এলাকার আবদুস সবুরের ছেলে। পরিবারসহ চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার বি-ব্লক ২ নম্বর রোডের ২০ নম্বর বাড়িতে ভাড়া থাকতেন।
ডা. আকাশের সঙ্গে তানজিলা চৌধুরী মিতুর পরিচয় ২০০৯ সাল থেকে। ২০১৬ সালে বিয়ে হয় তাদের।
এ বছরের ৩১ জানুয়ারি সকালে আকাশকে তার বাসা থেকে তার ভাই নেওয়াজ মোরশেদ গুরুতর অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন। ধারণা করা হচ্ছে, ইনজেকশনের সাহায্যে তিনি আত্মহত্যা করেন।
১ ফেব্রুয়ারি বিকেলে তানজিলা হক চৌধুরী মিতুসহ ছয় জনকে এজাহারনামীয় আসামি ও ৩/৪ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে চান্দগাঁও থানায় দণ্ডবিধির ৩০৬ ধারায় মামলা দায়ের করেন ডা. আকাশের মা জোবেদা খানম।
মামলার আসামিরা হলেন, তানজিলা হক চৌধুরী মিতু (২৯), তার মা শামীম শেলী (৪৯), বাবা আনিসুল হক চৌধুরী (৫৫), বোন সানজিলা হক চৌধুরী আলিশা (২১), তানজিলা মিতুর দুই ছেলেবন্ধু উত্তম প্যাটেল ও ডা. মাহবুবুল আলম (২৮)। এছাড়া ৩/৪ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
এর আগে, ৩১ জানুয়ারি রাতে নগরের নন্দনকানন এলাকায় মিতুকে তার খালাতো ভাইয়ের বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে সিএমপির কাউন্টার টেররিজম ইউনিট।
গ্রেপ্তারের পর মিতুর স্বীকারোক্তি অনুযায়ী আমানত শাহ (র.) মাজার এলাকা থেকে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করে পুলিশ।
পরে নিম্ন আদালতে জামিন চেয়ে ব্যর্থ হওয়ার পর হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন মিতু। আদালত জামিন প্রশ্নে রুল জারি করেন। সেই রুলের শুনানি শেষে তাকে জামিন দেন হাইকোর্ট।
তানজিলা হক চৌধুরী মিতু যুক্তরাষ্ট্রে থাকতেন। ১৩ জানুয়ারি তিনি বাংলাদেশে আসেন।