আগামী সপ্তাহে শুরু হচ্ছে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন
মিয়ানমারের রাখাইন থেকে সেনা নিপীড়নের মুখে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে নতুন প্রচেষ্টা শুরু করছে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার। আগামী সপ্তাহে প্রায় সাড়ে তিন হাজার জনকে ফিরিয়ে নেওয়ার কথা জানিয়েছে মিয়ানমার।
বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) মিয়ানমার ও বাংলাদেশের একাধিক সরকারি কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্স।
দু’দেশের কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, ২২ হাজারের বেশি রোহিঙ্গাদের নামের তালিকা থেকে মিয়ানমার তিন হাজার ৫৪০ জনকে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য বাছাই করেছে। এই বাছাই করা রোহিঙ্গাদের প্রথম দলটিকে আগামী সপ্তাহে মিয়ানমারে ফিরিয়ে নেওয়া হবে।
মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মিন্ত থু রয়টার্সকে বলেন, ‘আমরা আগামী ২২ আগস্ট তিন হাজার ৫৪০ জনের পুনর্বাসনের বিষয়ে একমত হয়েছি।’
প্রত্যাবাসনের বিষয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রথমে ‘ছোট আকারে’ প্রত্যাবাসন শুরু হবে। তবে কোনো রোহিঙ্গাকে তাদের ইচ্ছার বাইরে প্রত্যাবাসিত করা হবে না বলেও জানান তিনি। বাংলাদেশ একটি নিরাপদ, স্বেচ্ছামূলক, মর্যাদাপূর্ণ ও টেকসই প্রত্যাবাসন ছাড়া আর কিছুই চায় না।
কক্সবাজারের আশ্রয় শিবিরে থাকা কয়েকজন রোহিঙ্গা রয়টার্সকে বলেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে তারা এখনও ভীত। এর চেয়ে বাংলাদেশেই অধিক নিরাপদ বোধ করছেন তারা।
এর আগে জাতিগত নিধন ও গণহত্যার প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশ-মিয়ানমার প্রত্যাবাসন চুক্তি সম্পন্ন হয়। একই বছরের ৬ জুন নেপিদোতে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে মিয়ানমার ও জাতিসংঘের সংস্থাগুলোর মধ্যেও সমঝোতা চুক্তি হয়।
২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইন রাজ্যে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী জাতিগত নিধন শুরু করলে প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। এরপর মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে চুক্তি এবং বিভিন্ন সময় আশ্বাস দিলেও তা শুরু করেনি। জাতিসংঘের একাধিক কর্মকর্তার অভিযোগ, মিয়ানমারে এখনও রোহিঙ্গাদের ওপর বর্বর নির্যাতন চলছে।