‘পুঁজি হারিয়ে’ পেশা বদল করছে বগুড়ার চামড়া ব্যবসায়ীরা
নগদ টাকা দিয়ে মাঠ পর্যায় থেকে চামড়া কিনে সেগুলো বাকিতে ট্যানারি মালিকদের কাছে বিক্রি করতেন বগুড়ার চামড়া ব্যবসায়ীরা। তবে ব্যবসায়ীরা সে টাকা ‘পরিশোধ না করায়’ বিপাকে পড়ে এখন পেশা বদল করতে বাধ্য হচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন এই ব্যবসায়ীরা।
তারা বলছেন, ট্যানারী মালিকদের কাছে টাকা আটকে যাওয়ায় বগুড়ায় চামড়া ব্যবসায়ীদের অনেকেই পেশা বলদ করে রিক্সা চালাচ্ছেন, কেউ বা কাজ করছেন দিন মজুরের। দীর্ঘদিন পাওনা টাকা না পেয়ে অনেকে আবার প্রহরীর কাজও নিয়েছেন ঢাকায়।
চামড়া ব্যবসায়ী নেতারা এসব তথ্য দিয়ে আরও জানিয়েছেন, যারা এ ব্যবসায় এখনো টিকে আছেন তারাও মুলধনের অভাবে আগের মতো আর ব্যবসা করতে পারছেন না।
বগুড়া জেলা চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো: মুকুল হোসেন জানান, নগদ টাকায় কেনা কাঁচা চামড়া বাকিতে ঢাকায় ট্যানারী মালিকদের কাছে বিক্রি করে বিপাকে পড়েছেন বগুড়ার ক্ষুদ্র, মাঝারী আর বড় চামড়া ব্যবসায়ীরা।
তিনি বলছেন, গত ৩/৪ বছর ট্যানারী মালিকদের কাছে বিপুল অংকের টাকা আটকে যাওয়ায় কেউ চালাচ্ছেন রিক্সা কেউ বা চাকরি করছেন নিরাপত্তা কর্মীর। অনেকেই আবার দিনমজুরের কাজ করছেন।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বগুড়া শহরের চকসূত্রাপুর এলাকার ক্ষুদ্র চামড়া ব্যবসায়ী মো: নাসিম সর্দার কয়েক বছর আগেও চামড়া বেচা-কেনা করতেন দিনে গড়ে ১৫ হাজার টাকার। আড়তদারদের মাধ্যমে ঢাকায় চামড়া বিক্রি করলে আটকে যায় তার বড় অংকের টাকা। অর্থ সংকটে পড়ে এখন তিনি ব্যাটারি চালিত ত্রি-হুইলার চালাচ্ছেন বগুড়া শহরে।
আরেক ক্ষুদ্র চামড়া ব্যবসায়ী টি.এ সোহেল পুঁজি হারানোর পর এখন প্রহরীর কাজ নিয়েছেন ঢাকায়। আর একই এলাকার আপেল মাহমুদ ব্যবসা করছেন কসমেটিকসের।
মো. মুকুল হোসেন নামে একজন সাবেক চামড়া ব্যবসায়ী জানান, ট্যানারী মালিকদের কাছে তার ৫ কোটি টাকা আটকে যাওয়ায় পাওনাদারে টাকা পরিশোধ করতে পারছেন না। তিনি জানান, তার মতো অবস্থা অনেকেরই।
বগুড়া জেলা চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মতিন জানান, বগুড়ার ব্যবসায়ীদের প্রায় ৪০ কোটি টাকা দীর্ঘদিন ধরে আটকে আছে ট্যানারী মালিকদের কাছে।
এ অবস্থা থেকে বাঁচতে সরকারি হস্তক্ষেপ চেয়েছেন বগুড়ার চামড়া ব্যবসায়ীরা, একই সাথে কাঁচা চামড়া রপ্তানীতে সরকারি সিদ্ধান্তে খুশিও হয়েছেন তারা।