আসলামের বিরল বাদ্যযন্ত্রের সংগ্রহশালা
লোকসংগীত আমাদের গ্রামগঞ্জের প্রাণ; প্রজন্ম থেকে প্রজান্মন্তরে বয়ে চলে এই সুরের ধারা। কালের যাত্রায় গ্রামীণ মানুষের সঙ্গীতে যুক্ত হয়েছে নানা কথা সুর, আর বাদ্যযন্ত্র। ইংরেজ শাসনামলে পেয়েছে হারমোনিয়াম, বেহালা, গিটার, বিউগলসহ পশ্চিমা বাদ্যযন্ত্র। কালের যাত্রায় নানান বাদ্যযন্ত্র দেশে প্রবেশ করলেও দেশীয় বাদ্যযন্ত্রগুলোর কদর কখনোই লোকশিল্পীদের কাছে কমেনি। আর আমাদের লোকজ বাদ্যযন্ত্র বরাবর তৈরি হয় সহজপ্রাপ্য দ্রব্যাদি দিয়েই। লাউ, কুমড়োর খোল, মাটির হাড়ি, কলসি, চামড়া, বাঁশ, কাঠ ইত্যাদিই ছিল লোকজ বাদ্যযন্ত্র তৈরির প্রধান উপাদান। তবে অন্য সংস্কৃতির অনুপ্রবেশ ও কালের বিবর্তনে আমাদের ঐতিহ্যবাহী বাদ্যযন্ত্রের অনেকগুলোই হারিয়ে গেছে, আর টিকে থাকা বাদ্যযন্ত্রের ব্যবহারও লোক সংগীতে এখন আর নাই বললেই চলে।
আমাদের দেশের জাদুঘরগুলোয় কিছু লোকজ বাদ্যযন্ত্র রাখা আছে। তবে সব নয়। এর বাইরে বিচ্ছিন্নভাবে কিছু লোকজ বাদ্যযন্ত্র ব্যক্তিগত সংগ্রহে আছে। এরকমই একজন ময়মনসিংহের রেজাউল করিম আসলাম, তার সংগ্রহ বিশাল। তার নেশাই দেশি-বিদেশি বিরল বাদ্যযন্ত্র সংগ্রহ করা। ইতোমধ্যে তার লোকজসহ বিরল বাদ্যযন্ত্র সংগ্রহ প্রায় ৬০০ ছাড়িয়ে গেছে।
রেজাউল করিম আসলামের বাবা জালাল উদ্দিন, দাদা নবাব আলী। তিন পুরুষ ধরেই এই বাদ্যযন্ত্র বেচাবিক্রির সঙ্গে জড়িত আসলামের পরিবার। ময়মনসিংহ শহরের দূর্গাবাড়ি সড়কে রয়েছে 'নবাব এন্ড কোং' নামে আসলামের একটি বাদ্যযন্ত্রের দোকান। ১৯৪৪ সালে দাদা নবাব আলী বাদ্যযন্ত্রের ব্যবসা শুরু করেন। আসলামের দাদার পর তার বাবা জালাল উদ্দিন ব্যবসার হাল ধরেন। ছোটবেলা থেকেই লোকজ বাদ্যযন্ত্র্রের প্রতি আগ্রহ তৈরি হয় রেজাউল করিম আসলামের। পরে ২০০৬ সাল থেকে শুরু করেন বিরল বাদ্যযন্ত্র সংগ্রহ। সংগ্রহের পাশাপাশি রেজাউল করিম আসলাম এসব নিয়ে গবেষণাও করছেন। হারিয়ে যাচ্ছে যে যন্ত্রগুলো, কারিগরদের দিয়ে ওই যন্ত্রের আদলে নতুন করে আবার বাদ্যযন্ত্র তৈরি করার কাজও করছেন তিনি।
তার সংগ্রহের কিছু দুলর্ভ বাদ্যযন্ত্র
এখনপর্যন্ত তার সংগৃহীত বাদ্যযন্ত্রগুলোর মধ্যে অন্যতম-
সারিন্দা
বাংলাদেশের গ্রামীণ লোকসমাজে সারিন্দা জনপ্রিয় বাদ্যযন্ত্র। প্রাচীন ও দেশীয় সংগীতে এটি ব্যবহৃত হয়। সারিন্দা তৈরি করা হয় কাঠ দিয়ে,এর পেটের কাছটা কিছুটা চওড়া এবং চামড়া দিয়ে ঢাকা থাকে, বাকি অংশ ফাঁকা। দৈর্ঘ প্রায় দুই ফুট।এর মাথার অংশ খুব কারুকাজ করা থাকে। এতে তিনটি তার ব্যাবহিরত হয়। ছড়ে ঘোড়ার লেজের চুল ব্যাবহার করা হয়। বিচার এবং মুর্শিদী গানে সারিন্দার ব্যবহার করা হয়।
মেকুড়
প্রচলিত নাম মহেুর। মেকুড় তামা ও পিতলের তৈরি পায়ে ব্যবহারের বাদ্যযন্ত্র। জারিগান ও পালাগানে ব্যবহার হয়। পা নড়াচাড়ার মাধ্যমে এটি বাজানো হয়। শুধু এক পায়ে গোরালির উপর এটি পরতে হয়। লোকজ পালা ও দলবদ্ধ গ্রামীন গানে প্রত্যেক সদস্য এটি পরে। ঘেটু গানেও এটি ব্যাবহিরত হয়।
সুর সংগ্রহ
গাজীপুরের ভাওয়াল রাজার বাড়িতে লোক সঙ্গীতের আসরসহ গাজী কালু চম্পাবতীর পালায় একসময় ব্যবহার হতো 'সুর সংগ্রহ' নামের বাদ্যযন্ত্র। কাঠ দিয়ে তৈরি এই বাদ্যযন্ত্রের ওপরে তার ব্যবহার করা হয়।
প্রেমজুড়ি
প্রচলিত নাম চটি,লোকজ ও ভক্তিমূলক সংগীতে ব্যবহার হয়। তেমনি জারি ও সারি গানসহ নৌকাবাইচে একসময় ব্যবহার ছিল প্রেমজুরি বাদ্যযন্ত্রের। প্রেমজুড়ি হচ্ছে কাঠের ফ্রেমের ভেতর ঝুনঝুনির ব্যবহার সম্বলিত বাদ্যযন্ত্র।
কাড়া ও দুন্দভি (নাকাড়া)
কাড়া ও দুন্দভি প্রাচীন লোকবাদ্যযন্ত্র। কাড়ার আকৃতি বাটির মতো। যা আদিকালে মাটি দিয়ে বানানো হতো। পরে এটি কাঠ ও ধাতু দিয়ে নির্মান করা হয়। গলায় ঝুলিয়ে বা মাটিতে রেখে দুইটি কাঠি দিয়ে এটি বাজানো হয়। আর দন্দভি মাটির হাড়ির পাশাপাশি তামা বা পিতল অনেকসময় কাঠ দিয়েও এর খোল তৈরি করা হয়। যুদ্ধে, বিপদ সংকেত দিতে বা বিভিন্ন ঘোষনার সময় লোক জমায়েত করতে এর ব্যাবহার হতো
আনন্দ লহরি
প্রচলিত নাম গুবগুবি-খমক,বাউল ও ভিক্ষুক সম্প্রদায় বেশি ব্যবহার করে। কাঠ দিয়ে ঢোলকের আদলে তৈরি, কিন্তু একপাশ খোলা। এই খোলা অংশ দিয়ে বের হওয়া সুতোয় ধরে বাজানো যন্ত্রের নাম খমক/আনন্দ লহরী। জারি ও ভাটিয়ালি গানে এর ব্যবহার ছিল দীর্ঘদিন।
মৃদঙ্গ
প্রচলিত নাম খোল। বাংলাদেশের এক ঐতিহ্যবাহী বাদ্যযন্ত্র। এটি একটি পোড়ামাটির খোল। বাদ্যযন্ত্রের প্রধান অংশটি পোড়ামাটির তৈরি। মাটির তৈরি খোলটির দু'প্রান্ত কিছুটা সরু। দুই মুখের দু'দিকে গরু বা মহিষের মোটা চামড়া দেয়া থাকে। কীর্তনসংগীতে ও মনিপুরী নৃত্যে ব্যবহার হয়
সুরবাহার
সুরবাহার হচ্ছে সেতারের মতো দেখতে একটি তারযন্ত্র। সেতারের মতো দেখতে হলেও এটি ভিন্ন একটি যন্ত্র। সুরবাহার লম্বায় ৫১ ইঞ্চি,শুকনো লাউয়ের তুম্বাটি সুর কম্পনের জন্য ব্যবহৃত হয়। লম্বা অংশটি সাধারণত সেগুন কাঠের হয়ে থাকে।
একতন্ত্রী বীণা
প্রচলিত নাম একতারা,বাউল, বৈরাগী ও ভিক্ষুকরা যন্ত্রটি বেশি ব্যবহার করেন। বাঊল গানের সাথে অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক এই একতারার। লাউ বা পাকা মিষ্টি কুমড়োর খোলের সাথে, তার সংযুক্ত করে তৈরি করা হয় এই যন্ত্রটি। এর তারের সংখ্যা একটি থাকায় নাম হয়েছে একতারা'।
গোপী যন্ত্র
অনেকেই এটিকে একতারা বলে ভুল করেন। লম্বাটে লাওয়ের খোল কেটে তার মধ্যে বাশ ব্যাবহার করে একটি তার সংযোজন করা হয়। এটি বহুল ব্যাবহিরত ও এই বাংলার একান্ত নজিস্ব প্রযুক্তিত সৃষ্টি প্রাচিন বাদ্যযন্ত্র।
সারেঙ্গি
পৌরাণিক কাহিনী, ধর্মীয় ও ভক্তিমূলক গানের সঙ্গে ব্যবহৃত হয়। প্রায় দুই ফুট লম্বা একখণ্ড খোদাই করা কাঠে সারেঙ্গীর অবয়ব নির্মিত হয়। কাঠ খণ্ডের নীচের দিকটা খোলের মতো খোদাই করা হয়। খোলটি চামড়ায় ছাওয়া হয়ে থাকে। খোলের ছাউনির মাঝখানে বসানো হয় একটি সওয়ারী।
তুবড়ি
প্রচলিত নাম বীণ,গ্রাম্য গান ও সাপুরিয়াদের সাপ খেলায় ব্যবহার হয়। ছোট লাঊয়ের খোলের মধ্যে এক জোড়া বাঁশের নল যুক্ত করে তৈরি করা হয় তুবড়ি।
ডুগডুগি
ডুগডুগির অপর নাম ডমরু, শাস্ত্র অনুযায়ী এটি হিন্দু দেবতা শিবের বাদ্যযন্ত্র। সাধারণত শিবের গাজন, সাপখেলা, বানর নাচ ও ভল্লুকের খেলায় ডমরু ব্যবহৃত হয়। বাদ্যযন্ত্রটি ছোট, সরু মধ্যভাগে রশি পেঁচানো থাকে। রশির দুই প্রান্তে থাকে দুটো সিসার গুলি। বাদ্যটির মধ্য ভাগ ধরে নাড়ালে এই গুলি দুই প্রান্তের চামড়ায় লেগে শব্দ তৈরি করে।
পাখোয়াজ
লহর ও নৃত্যে একক যন্ত্র হিসেবে ব্যবহার হয়। এটি একটি শাস্ত্রীয় বাদ্যযন্ত্র। পাখোয়াজের দুইটি মুখ আছে। এর একটি মুখ অন্যটির তুলনায় সামান্য বড়। কোলের ওপরে নিয়ে বামহাতে বড় মুখ ও ডানহাতে ছোটো মুখটি বাজানো হয়। এর উভয় মুখের চামড়া আচ্ছাদন থাকে।
বাঁশি
বাংলার প্রাচীনতম এবং জনপ্রিয় বাদ্যযন্ত্র গুলোর মধ্যে অন্যতম হলো, বাঁশি। মুলতঃ গানের সাথে বাজানো হয় এটা। তরলা বাঁশ দিয়ে তৈরি বাঁশির আকার ও প্রকারভেদে বাঁশির বিভিন্ন নাম আছে, যেমন: আড়বাঁশি, কদবাঁশি, টিপরাবাঁশি, হরিণাবাঁশি ইত্যাদি। মু্রলী বাঁশি, এটি কৃষ্ণের বাদ্যযন্ত্র হিসেবে গণ্য করা হয়। এই বাঁশির জন্যই কৃষ্ণের অপর নাম মুরলিধর। প্রায় এক হাত লম্বা মুরলিতে ছিদ্র থাকে সাতটি। বেশির ভাগ লোক সঙ্গীতে এবং কীর্তনে মুরলির আবশ্যক ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। এর অপর নাম আড় বাঁশি।
কাঁসর এবং কাঁসি
ঘনযন্ত্র বাদ্যযন্ত্রের মধ্যে প্রধান হলো কাঁসর, এটিও বাংলার একটি প্রাচীন বাদ্যযন্ত্র । এটি কাসা দিয়ে তৈরি সামান্য কানাতোলা থালার মতো আকারের একটি বাদ্যযন্ত্র। এই বাদ্যযন্ত্রের মাথায় দুটি ছিদ্র থাকে, এখানে দড়ি বেঁধে বাম হাতে ঝুলিয়ে ডান হাতে কাঠির সাহায্যে বাজানো হয়।
খঞ্জনী এবং ডফ
জারি ও ঘাটু নাচ-গানের আসরে ঢোলের সঙ্গে এটি বাজানো হয়। খঞ্জনীর মতোই আরেকটি বাদ্যযন্ত্র আছে যা ডফ বা ডমজ্ঞ নামে পরিচিত। তবে ডফ আকারে অপেক্ষাকৃত বড়। মুসলমানরা এদেশে ডফ আমদানি করেছিল।
ডুগি বা বায়া
বাঁয়া বাটির আকারবিশিষ্ট একটি যন্ত্র। এর মুখে চামড়ার ছাউনি থাকে। বাউলরা বামপাশে কোমরের সঙ্গে শক্ত করে বেঁধে বাম হাতের তালু ও তর্জনী দিয়ে এটি বাজায়।
মাদল
মাদল আদিবাসী সাঁওতালদের একটি জনপ্রিয় বাদ্যযন্ত্র। এটিও বাংলার অন্যতম প্রাচীন বাদ্যযন্ত্র গুলোর মধ্যে একটি, ষোড়শ শতকের 'গোরক্ষ বিজয়' কাব্যে মাদলের উল্লেখ পাওয়া যায়। মৃদঙ্গের মতো মাদলও মাটির তৈরি, তবে কিছুটা স্থুলাকার।আদিবাসী সাঁওতালদের মধ্যে এবং ঝুমুর নাচ-গানে এর ব্যাপক ব্যবহার দেখা হয়।
শিঙ্গা
বাদ্যযন্ত্র হিসেবে শিঙ্গার উপস্থিতিও অনেক প্রাচীন, হিন্দু দেবতা শিবের বাদ্য যন্ত্র হিসেবে গন্য করা হয় একে। প্রাচীনকালে শিঙ্গা যুদ্ধের বাদ্যযন্ত্র ছিল, তাই এর অপর নাম রণশিঙ্গা। আগে অতীতে মহিষের শিং থেকে তৈরি হতো শিঙ্গা; বর্তমানে ধাতু নির্মিত শিঙ্গা ব্যবহৃত হয়। বড় আকারের শিঙ্গাকে বলা হয় রামশিঙ্গা; এগুলি পেতল বা তামার
খরতাল
লোহা দিয়ে তৈরি একটি বাদ্যযন্ত্র। সাত আট-ইঞ্চি লম্বা দুইটি পৃথক লোহা দন্ড দিয়ে তৈরি করা হয় এই বাদ্যযন্ত্র। দন্ডদুটি ডান হাতে ধরে শব্দ তৈরি করতে হয়। খরতাল ছন্দ, তাল, লয় ধরে রাখতে সাহায্য করে। ফকির এ সাধকরা এটি বেশি ব্যাবহার করে।
করতাল
বৈষ্ণব সংকীর্তনে খোলের অনুষঙ্গ হিসেবে করতাল ব্যবহারের কথা জানাযায়। করতাল পিতলের তৈরি ছোট থালার আকৃতিবিশিষ্ট একটি যন্ত্র; এর বাদনরীতি মন্দিরার মতোই। করতালের সুতা বা দডি় তর্জনীতে জড়িয়ে হাতের তালুতে চাপ ও ছাড়ে এটি বাজাতে হয়।
এছাড়াও রয়েছে, কৃষ্ণকাঠি, চেম্পারেঙ,দভন্ডি,চিকারা,যোগী সারঙ্গী,মুগরবন,অ্যাকোর্ডিয়ান,ঘেরা,পেনাসহ আরো বেশ কিছু যন্ত্র।
এর বাইরে জলসা ঘরের নানান জিনিসপত্রও আসলামের সংগ্রহে আছে। এগুলো হলো-ফুলের সাজি, ফুলদানি, পেঁচানো ফুলদানি, পানি সাকি, সুরাপাত্র, ঘণ্টা, নর্তকি, হুঁকো, তামাপাত্র, পানিপাত্র, মোমদানি, দেয়াল নকশি, খানদানি হুঁকো, পিকদানি, ছাইদানি জুতা, ছাইদানি প্লেট ও দুধপাত্র। সংগ্রহের পাশাপাশি রেজাউল করিম বাদ্যযন্ত্র নিয়ে কিছুটা গবেষণাও করছেন। এশিয়ান মিউজিক মিজিয়াম' নামে একটি জাদুঘর তৈরির কাজে হাত দিয়েছেন রেজাউল করিম আসলাম। ইতোমধ্যে নগরীর আঞ্জুমান ঈদগাম মাঠের বিপরীত দিকে একটি গীর্জার নিজের তলায় মিউজিয়াম নির্মাণের কাজ চলছে। এই মিউজিয়ামে কালের আবর্তে হারিয়ে যেতে বসা বাধ্যযন্ত্রসহ অন্তত ৬০০ প্রজাতির বাদ্যযন্ত্র রাখা হবে।
এছাড়া আসলাম প্রতিষ্ঠা করেছেন একটি সাংস্কৃতি সংগঠন, নাম 'নোভিস ফাউন্ডেশন'। নোভিন আর্টিস্টিক এডুকেশন সেন্টার নামের একটি শিক্ষালয়ও পরিচালনা করেন তিনি। উপমহাদেশীয় ও পাশ্চাত্য রীতির সমন্বয়ে সংগীত, নৃত্য, চারুকলা, গিটার, বেহালা এবং দোতারা প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় এখানে।
রেজাউল করিম আসলাম বলেন, ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার জনপ্রিয় হয়ে ওঠার কারণেই তরুণ প্রজন্মের শিল্পী এবং কলাকুশলীদের কাছে পুরনো দিনের বাদ্যযন্ত্রের কদর কমে গেছে। অথচ একসময় এসব ছাড়া বাংলা গানের কথা চিন্তাও করা যেতোনা। দীর্ঘ দিন ধরে বিরল প্রজাতির এসব বাদ্যযন্ত্র সংগ্রহ করেছেন তিনি। বাদ্যযন্ত্র সংগ্রহের উদ্দেশ্য হলো লোকসংস্কৃতিকে ধারণ করে রাখা ডিজিটাল যুগে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে অতীত জানাতে এই প্রচেষ্টা তার। তিনি বলেন ঐতিহ্য হিসেবে এগুলো সংরক্ষণ করা আমাদের উচিত। সরকারি বা বিশেষ কোনো প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগে এসব করা হলেও নিজের দায়িত্ববোধ থেকে আমি এটি করছি। ঐহিত্য ধরে রাখা ও প্রজন্মকে জানানোর জন্যই সংগ্রহ ও জাদুঘর একদিন শুধু ময়মনসিংহের না দেশ বিদেশের গবেষকদেরও এগুলো কাজে লাগবে।
জেলা কালচারাল অফিসার আরজু পারভেজ বলেন রেজাউল করিম আসলাম দেশিয় বাদ্য যন্ত্রের যে সংগ্রহ তৈরি করেছেন তা দেশিয় সংস্কৃতি লালনের অক অপূর্ব নিদর্শন। তিনি বলেন আমি নিজেও তার সগ্রহে থাকা বাদ্যযন্ত্রগুলো দেখতে ও এসবের ব্যাপারে জানতে আসলামের কাছে যাই। ব্যাক্তি পর্যায়ে এমন সংগ্রহ খুব একটা দেখা যায়না। আসলাম শুধু এসব সংগ্রহই করেনা এসব যন্ত্রের আদ্যপান্ত জানে ও গবেষণা করে। বর্তমান প্রজন্মের আগ্রহীরা তার কাছ থেকে এসব যন্ত্রের ব্যাবহার ও ইতিহাস নিমিষেই জানতে পরে। আমরাও আসলামকে উৎসাহিত করছি।