ইন্দোনেশিয়ার জঙ্গলে হবিটের সন্ধান
ইন্দোনেশিয়ার ফ্লোরেস দ্বীপের বাসিন্দারা প্রাচীনকাল থেকেই ‘ইবু গোগো’র কিংবদন্তির সঙ্গে পরিচিত। বংশ পরম্পরায় তারা স্থানীয় লোকগাথায় এক ধরনের জংলী বুড়ির কথা শুনেছেন যারা নাকি সবকিছু খেতেই অভ্যস্ত। এমনকি সুযোগ পেলে মানুষ খেতেও তাদের কোনো অরূচি নেই।
তাদের উপকথা অনুসারে ক্ষুদ্রাকৃতির এই বামনেরা এক সময় আমাদের পূর্বপুরুষ বা স্বাভাবিক আকৃতির মানুষের সঙ্গেই পৃথিবীতে বিচরণ করতো। সুযোগ পেলেই ফসল চুরি করতো এবং জঙ্গলে পথ হারিয়ে ফেলা মানুষকে দলবদ্ধভাবে শিকার করে খেতো।
প্রাচীন উপকথার বর্ণনা অনুসারে ইবু গোগোরা খানিকটা তোতলানোর মতো উচ্চারণে নিজেদের মাঝে ভাব বিনিময় করতো। পুরো শরীর বড় বড় লোমে ঢাকা ইবুদের উচ্চতা ছিল একজন সাধারণ উচ্চতার মানুষের কোমরের সমান বা তার চাইতেও কম। খবর স্ক্রল ডটইনের।
এতদিন এসব গল্পকে নিছক রূপকথা বলেই উড়িয়ে দিয়েছেন অধিকাংশ মানুষ। তবে দীর্ঘদিন ধরেই নৃতত্ত্ব বিজ্ঞানীরা এসব উপকথার বর্ণনা রেকর্ড করেছেন। এবার ইন্দোনেশিয়ার ফ্লোরেস দ্বীপের এক গুহায় মিলেছে প্রাচীনকালে ইবু গোগো অস্তিত্বের অকাট্য প্রমাণ, কিছু বামন মানুষের কঙ্কাল। এসব কঙ্কালের সঙ্গে ইবু গোগোদের আকৃতি এবং অনান্য দৈহিক গঠনের যে বর্ণনা আছে তার হুবহু মিল রয়েছে।
এই প্রমাণ এতটাই অবিশ্বাস্য যে বিজ্ঞানীরা একে আরেক রূপকথার বর্ণনার সঙ্গে যোগ করেছেন। ইতোপূর্বে আবিষ্কৃত কোনো মানব প্রজাতির কঙ্কালের সঙ্গে এর মিল নেই। তবে বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত এগুলো বনমানুষ নয় বরং মানুষেরই ভিন্ন একটি প্রজাতি। নতুন প্রজাতির বৈজ্ঞানিক নাম হোমো ফ্লোরেন্সিস। কিন্তু আধুনিক মানুষের সঙ্গে একই সময়ে পৃথিবীতে বিচরণ করায় বিজ্ঞানীরা এদের ডাকনাম দিয়েছেন হবিট। জেআরআর টকিংসের বিখ্যাত কল্প উপন্যাসের দুনিয়ায় এমন একদল বামন মানুষের উল্লেখ রয়েছে।
বিজ্ঞানীদের ধারণা আজ থেকে ১২ হাজার বছর আগে হোমো ফ্লোরেন্সিস (ইবু গোগো) পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে যায়।