প্রযোজক সোহানা সাবার পরিকল্পনা
কিছুদিন আগে ওটিটি প্লাটফর্ম বিঞ্জ এ মুক্তি পেয়েছে 'টুইন রিটার্নস'। এটির গল্প ও চিত্রনাট্য অভিনেত্রী সোহানা সাবার। প্রধান চরিত্রে অভিনয়ও করেছেন তিনি। দর্শকরা বেশ পছন্দ করেছেন ওয়েব কনটেন্টটি।
এ সূত্র ধরে কথা হয় এই অভিনেত্রীর সঙ্গে। শুরুতেই জানতে চাই, নিজের লেখা এই ওয়েব কনটেন্টটির গল্পটা কেমন?
সাবা বলেন, এটি যমজ দুই বোনের গল্প। যমজ বোনের রহস্যময় মনস্তাত্ত্বিক জীবনের গল্প নিয়ে নির্মিত হয়েছে এটি। প্রেমা ও দিমা নামের যমজ দুই বোনের চরিত্রে অভিনয় করেছি আমি। গল্পটি আমার হলেও, পরিচালনা করেছেন অলোক হাসান। আমি ছাড়াও এতে অভিনয় করেছেন মনোজ প্রামানিক, মাজনুন মিজান, রুনা খান, সুষমা সরকার, রিধিস চৌধুরী, রাহাত, দিশা প্রমুখ।
টুইন রিটার্নস এর পর নতুন কি কাজের পরিকল্পনা করছেন সাবা? নতুন নতুন কাজের পরিকল্পনা করলেও এখনই সব কিছু প্রকাশ করতে চান না তিনি। সব কিছু চূড়ান্ত না হওয়া অবধি সেটা প্রকাশ না করাই ভালো বলে মনে করেন তিনি।
আপাতত নিজের প্রোডাকশন হাউস 'খামারবাড়ি' নিয়ে ব্যস্ত তিনি। অভিনয়ের পাশাপাশি নিয়মিত হচ্ছেন প্রযোজনাতেও। খামারবাড়ি থেকেই তিনটি নতুন চলচ্চিত্রের পরিকল্পনা করেছেন সাবা। 'জয়িতা' নামে নতুন ছবিটি নির্মাণ করছেন বিঞ্জের জন্য। বাকি দুটি মুক্তি পাবে প্রেক্ষাগৃহে। এরমধ্যে একটি নিজেই পরিচালনা করার পরিকল্পনাও করে রেখেছেন তিনি। সবকিছু ঠিক থাকলে খুব তাড়াতাড়ি কাজ শুরু হচ্ছে জয়িতার।
নিজের প্রযোজনার বাইরে নতুন চলচ্চিত্রে অভিনয় করতে যাচ্ছেন তিনি। তার বিপরীতে অভিনয় করার কথা রয়েছে কলকাতার জনপ্রিয় অভিনেতা প্রসেনজিতের। খবরটি প্রসঙ্গে সাবা চুপচাপই থাকলেন। বললেন, সময় হলেই সব প্রকাশ পাবে। তবে ছবিতে অভিনয়ের ব্যাপারে অনেকদূর এগিয়েছে। পরিচালক শামীম আহমেদ রনি ও প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান শাপলা মিডিয়া আমার চেয়ে ভালো বলতে পারবে।'
ছোটবেলা থেকেই অভিনয় করেন সোহানা সাবা। শুরুতে নাটক নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়লেও দর্শকের কাছে বেশি পরিচিত পেয়েছেন চলচ্চিত্রে অভিনয় করে। আয়না চলচ্চিত্র দিয়েই তার যাত্রা শুরু হয়। তারপর খেলাঘর, চন্দ্রগ্রহন, বৃহন্নলা, প্রিয়তমেশুর পাশাপাশি কলকাতার ষড়রিপু নামে একটি ছবিতেও অভিনয় করেছেন এই অভিনেত্রী।
২০০৬ সালে সিনেমার যাত্রা শুরু হলেও সমসাময়কি অনেক অভিনেত্রীর চেয়ে কি পিছিয়ে আছেন সাবা? তিনি বলেন, আমি যে প্রচুর নাটকে অভিনয় করেছি এমন নয়। তবে ব্যস্ত থাকতাম। কিন্তু গত কয়েকবছর ধরে আমি নাটকের গল্প ও পরিচালক নিয়ে হতাশ। হয়তো চিত্রনাট্য পড়ে একধরনের প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে কিন্তু কাজে গিয়ে দেখি তার উল্টো। এ কারণে অনেক কাজই ছেড়ে দিয়েছি। নতুন কোন কাজে আগ্রহ পাইনি।'
তিনি সম্প্রতি দীপ্ত টিভির সিরিয়ালে অভিনয়ের অভিজ্ঞতাও শেয়ার করেন। বলেন, আমি তাদের খেলাঘর ও মধ্যবর্তিনী নামে সিরিয়ালে অভিনয় করেছি। দেশে এই প্রথম একটা প্রফেশনাল কাজের জায়গা দেখলাম। তাদের সবকিছু এত গোছানো যে কাজ করতে গিয়ে মুগ্ধ হয়েছি।'
উদাহরণ হিসেবে বলেন, আমাদের নাটকগুলোতে যদি খাওয়ার কোন দৃশ্য থাকে; সেটার দৃশ্য ধারন যদি সন্ধ্যা বা রাতে হয়, তাহলে দুপুরের খাবার রেখে দেওয়া হয় ওই দৃশ্য ধারন করার জন্য। সে খাবারটা কোনভাবেই মুখে দেওয়া যায় না। কিন্তু খেয়ে ঠিকই অভিনয় করতে হয়। কিন্তু দীপ্ত টিভি বা প্রফেশনাল কোন কাজ হলে যেটা হয় শুটিং যখনই হোক, একেবারে ফ্রেস খাবার দিয়ে করা হয়। এই হলো পার্থক্য।'
এসব কারণেই নিজে প্রযোজনায় এসেছেন বলেন জানান। আমি যে প্রফেশনালিজম পাচ্ছি না সেই অভাবটা যেন না থাকে এ কারনেই প্রযোজনায় আসা। তবে আনন্দের বিষয় হলো, এখন অনেকেই দারুন সব কাজ করছেন। নিজেদের প্রফেশনালিজম নিয়ে কাজ করছেন। এ কারণেই আমাদের কাজগুলো আন্তজার্তিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে।' বলেন সাবা।
এবার নিজের ব্যক্তিগত বিষয় নিয়েও কথা বলেন সাবা। বলেন, আমার জীবনে অনেক ভয়ংকর ভয়ংকর ঘটনা ঘটেছে। সেগুলো সামাল দিয়ে সামনে এসেছি। আমার মনে হয় ওসব কারণেই আমি এখন পরিণত সাবা হতে পেরেছি। তবে এটা সত্যি, মাঝে মধ্যে ধাক্কা লাগে। খারাপ সময় আসে। সেটা যদি কাটিয়ে উঠি এবং তিন চার মাস পরে মনে হয় ওটা না ঘটলে হয়তো জীবন অন্যরকম হতো। আর আমি জীবনের বেশিরভাগ জিনিস পজিটিভলি নিই। আমি মনে করি, এই খারাপ সময় এসেছে বলেই সামনে ভালো সময় আসবে।'