মহাবিশ্বে দানব কৃষ্ণগহ্বর
মহাবিশ্বে এক দানব কৃষ্ণগহ্ববরের খোঁজ পাওয়া গেছে। দিনে একটা গোটা সূর্যের সমান ভর গিলে ফেলে সে! সূর্যের চেয়েও ৩৪ বিলিয়ন গুণ বড় এই কৃষ্ণ গহ্বর কেবলই বড় হচ্ছে, এমনকি মহাবিশ্বে এখন পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া কৃষ্ণগহ্বরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে দ্রুতগতিতে নিজের ভর বাড়িয়ে চলেছে এই গহ্বরটি।
সম্প্রতি রয়্যাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটির সাময়িকীতে এসংক্রান্ত গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ার ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির জ্যোতির্বিজ্ঞানী ক্রিস্টোফার ওঙ্কেন জানান, আমাদের মিল্কিওয়ে বা আকাশগঙ্গা ছায়াপথের কেন্দ্রে অবস্থিত কৃষ্ণগহ্বরের চাইতেও ৮ হাজার গুণ বড় এই দানব গহ্বরটি।
২০১৮ সালে এই রাক্ষস কৃষ্ণগহ্বরের অস্তিত্ব আবিষ্কার করেন বিজ্ঞানীরা। আমাদের সৌরজগত থেকে কয়েকশ কোটি আলোকবর্ষ দূরে এক ছায়াপথের কেন্দ্রে বসে আছে সে।
২০ বিলিয়ন সৌর ভরের এই আলট্রাম্যাসিভ (১০ বিলিয়নের সৌরভরের বেশি) কৃষ্ণগহ্বরের নাম J2157।
ক্রমপ্রসারমাণ মহাবিশ্ব মাত্র ১০% প্রসারিত হয়েছে। এই প্রাথমিক অবস্থায় এত বিশাল ভরের কৃষ্ণগহ্বর কিভাবে তৈরি হলো তা নিয়ে বিজ্ঞানীরা শঙ্কিত।
তারা বলছেন, বিগ ব্যাং বা মহাবিস্ফোরণের এত কম সময়ের মধ্যেই এত বিশাল কৃষ্ণগহ্বর তৈরি হবার কথা নয়। এর জন্য আরও অনেক বেশি সময়ের প্রয়োজন।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই আবিষ্কারটি আমাদের মহাজাগতিক মডেলগুলোর কাছে একটি বিশাল চ্যালেঞ্জ, কারণ আমরা জানি যে এই জাতীয় কিছু গঠনে কমপক্ষে আরও অনেক বেশি সময় নেওয়া উচিত। আমাদের কসমোলজিকাল বা মহাজাগতিক জ্ঞানের খাতায় এই দানব গহ্বরটি মহাজাগতিক ধাঁধাঁর একটি নতুন অংশ হয়ে দেখা দিয়েছে।
তবে ওঙ্কন জানান, আমাদের মহাবিশ্ব ক্রমেই প্রসারিত হচ্ছে। আর বিষয়টি নিয়ে গবেষণার ক্ষেত্রে এই বিশাল কৃষ্ণগহ্বরটি আমাদের সহায়তা করবে।
তিনি বলেন, "এই ছায়াপথটি কি আদি মহাবিশ্বের অন্যতম চিহ্ন, নাকি ব্ল্যাকহোলটি তার চারপাশের একটি বিশাল পরিমাণকে কেবল গ্রাস করে ফেলেছে? আমাদের এটি খুঁজে বের করতে হবে।"
সূত্র: সায়েন্স অ্যালার্ট