৮৪ বছরের ক্যামেরার ব্যবসা গুটিয়ে নিচ্ছে অলিম্পাস
বিশ্বে একসময়কার অন্যতম জনপ্রিয় ক্যামেরার ব্র্যান্ড অলিম্পাস তাদের ৮৪ বছরের ক্যামেরার ব্যবসা গুটিয়ে নিচ্ছে।
প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, ডিজিটাল ক্যামেরার এই ব্যবসাকে টিকিয়ে রাখার জন্য নানাভাবে চেষ্টা করলেও, এটি এখন আর লাভজনক না হওয়ায় বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে তারা।
তারা বলছে, আধুনিক প্রযুক্তির স্মার্টফোনের কারণে আলাদাভাবে বানানো ক্যামেরার বাজারে পতন নামায় এ সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। গত তিন বছর যাবত ক্ষতির মুখোমুখি হয়েও ব্যবসা চালিয়ে গিয়েছিল তারা।
মাইক্রোস্কোপ আবিষ্কার হওয়ার পরের বছর ১৯৩৬ সালে জাপানিজ কোম্পানি অলিম্পাস প্রথমবারের মতো ক্যামেরা তৈরি করে। জুইকো ব্র্যান্ডের লেন্স দিয়ে বানানো সেমি-অলিম্পাস ১ নামে ওই ক্যামেরাটি ছিলো বেশ ব্যয়বহুল।
এর পরবর্তীতে একের পর এক ক্যামেরা বের করতে থাকে অলিম্পাস কোম্পানি, যে কারণে মার্কেট শেয়ারের দিক থেকে এটি বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ক্যামেরার ব্র্যান্ড হয়ে ওঠে।
সত্তরের দশকে অলিম্পাসের ক্যামেরার ব্যবসা যখন তুঙ্গে, তখন ডেভিড বেইলি এবং লর্ড লিচফির্ল্ডের মতো আলোকচিত্রীরা অলিম্পাসের ক্যামেরার বিজ্ঞাপন করতেন টেলিভিশনে।
অলিম্পাস ক্যামেরার ব্যবসা গুটিয়ে নেওয়ার খবরে অ্যামেচার ফটোগ্রাফার ম্যাগাজিনের সম্পাদক নাইজেল অ্যাথারটন বিবিসিকে বলেন, "অলিম্পাস ক্যামেরার প্রতি আমাদের অনেক আবেগ পেছনে ফেলে আসছি। ওই ক্যামেরাগুলো ছিলো যুগান্তকারী। খুব ছোট ছিল, হালকাও ছিল। সেগুলোর ডিজাইন ছিলো বেশ চমৎকার এবং খুবই ভালো মানের লেন্স থাকতো সেগুলোতে।"
আর্থারটনের মতে, বিগত কয়েকবছর ধরেই কোম্পানির ভুল সিদ্ধান্ত আর ভুল পদক্ষেপের কারণে এখন ব্যবসা গুটিয়ে ফেলতে হচ্ছে তাদের।
তিনি জানান, প্রতিদ্বন্দ্বী অন্যান্য ক্যামেরার ব্র্যান্ডগুলোর মতো ভিডিওর মানের উন্নতি করতে না পারায় বাজার থেকে ছিটকে পড়েছিল এই প্রতিষ্ঠানটি।
এছাড়াও ২০১১ সালে কোম্পানির সিইওর আর্থিক কেলেঙ্কারির কারণে প্রতিযোগিতা থেকে পিছিয়ে যায় অলিম্পাস।
ব্যবসা গুটিয়ে নেওয়া সংক্রান্ত এক বিবৃতিতে জাপানি এই কোম্পানিটি বলেছে, "আমরা বিশ্বাস করি সঠিক পদক্ষেপ নেওয়ার মধ্য দিয়েই এই ব্র্যান্ডটির গৌরবোজ্জ্বল অতীত টিকে থাকবে।"
তবে ক্যামেরার ব্যবসা বন্ধ হলেও অলিম্পাস কর্পোরেশনের মাইক্রোস্কোপ, অপটিক্যাল যন্ত্রপাতি এবং মেডিকেল সরঞ্জামাদি তৈরির অন্যান্য ব্যবসাগুলো চলবে।