টিভি শো, ম্যাগাজিন এবং পডকাস্টের মাধ্যমে বাড়তে পারে ইংরেজির দক্ষতা
একটি নতুন ভাষা আয়ত্ত করতে হলে প্রয়োজন দৃঢ়তা, সংকল্প এবং ধৈর্য। তবুও অনেক শিক্ষার্থীই উপযুক্ত দিকনির্দেশনা না পেয়ে লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে যান এবং দিশেহারা হয়ে অথৈ সাগরে পড়েন। তেমনই, সাংবাদিক সাদমানের হকও ইংরেজি শিখতে গিয়ে রীতিমতো সংগ্রাম করেছেন। বর্তমানে একটি বাংলা সংবাদপত্রে কর্মরত সাদমান ভবিষ্যতে ইংরেজি সংবাদপত্রে কাজ করার স্বপ্ন দেখেন।
ইংরেজি শেখার জন্য প্রচলিত সব কৌশল প্রয়োগ করার পরেও তেমন অগ্রগতি হচ্ছিল না তার। "তিন বছর যাবত আমি ইংরেজিতে দক্ষতা অর্জনের চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমি বিভিন্ন কোচিং সেন্টারে ভর্তি হয়েছি, অনলাইন ক্লাসে সাবস্ক্রাইব করেছি এবং অনেকের কাছ থেকেই উপদেশ নিয়েছি, কিন্তু কিছুতেই যেন কাজ হচ্ছিল না", বলেন সাদমান।
এমনকি এক পর্যায়ে তার নিজেরই সন্দেহ জেগেছে যে তিনি কি আদৌ এই ভাষায় দক্ষ হতে পারবেন?
তবে মাস ছয়েক আগে সাদমান একটি ডিকশনারি ব্যবহার করে ইংরেজি ম্যাগাজিন পড়তে এবং ইংরেজি টিভি সিরিজ দেখতে শুরু করেন। এখন তার মনে হয়, তিনি আগের চেয়ে এই ভাষাটি আরও ভালো বুঝতে পারছেন। "আমি নিজেই ভেবে পাই না আরও আগে কেন এই পদ্ধতি অবলম্বন করিনি আমি! এখন আমি ইংরেজি আরও ভালো বুঝতে পারি এবং আমার শ্রবণ দক্ষতাও (লিসেনিং স্কিল) বেড়েছে", বলেন তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে 'ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ টিচিং (ইএলটি)' বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিয়েছেন সৈয়দ নকীব সাদী। বর্তমানে তিনি সিলেট মেট্রোপলিটন বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রভাষক এবং যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের 'ফুলব্রাইট ফরেইন ল্যাঙ্গুয়েজ টিচিং অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রোগ্রাম'-এর একজন অংশগ্রহণকারী।
সাদী একটি ভাষা শেখার ক্ষেত্রে কনটেক্সট বা বাক্যপ্রসঙ্গের গুরুত্বের দিকে জোর দিয়েছেন।
"ভাষা আসলে কনটেক্সটের উপর নির্ভর করে, আর তাই ভাষা শিখতে হলে শিক্ষার্থীদের অবশ্যই বাস্তব প্রেক্ষাপটে অথবা তারা যে ধরনের পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে পারেন তার সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ প্রেক্ষাপটে ভাষা ব্যবহার করতে হবে", বলেন সাদী।
"সেক্ষেত্রে ম্যাগাজিন পড়লে, টিভি শো দেখলে এবং পডকাস্ট শুনলে ভাষার প্রাসঙ্গিক ব্যবহার বোঝা যাবে এবং শিক্ষার্থীকে কার্যকরীভাবে সেই ভাষাটি আত্মস্থ করতে সাহায্য করবে", যোগ করেন তিনি।
কথ্য ইংরেজিতে দক্ষতার জন্য টিভি সিরিজ দেখা
ইঞ্জিনিয়ার ও গবেষক মাকসুদ উর রহমান জানান, তিনি টিভি সিরিজ দেখে ইংরেজিতে দক্ষতা বাড়িয়েছেন।
"প্রচুর টিভি সিরিজ দেখার পর আমার শ্রবণ দক্ষতা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং আমি বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে নিজের মনের ভাব ইংরেজিতে প্রকাশ করতে শিখেছি", বলেন তিনি। এছাড়াও, তিনি সাবটাইটেল চালু রেখে টিভি শো দেখার দিকে জোর দেন।
কথপোকথনের সময় ইংরেজি ব্যবহারের ক্ষেত্রে টিভি সিরিজ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। কারণ টিভি সিরিজ দেখার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ধরনের উচ্চারণ, সাংস্কৃতিক রেফারেন্স, শব্দগুচ্ছ বা বাক্যাংশ শিখতে পারে এবং সাধারণ কথপোকথনের বিষয়টিও সেখানে উঠে আসে। সাদী গতানুগতিক কেতাবি ইংরেজি এবং বাস্তবে মানুষের সঙ্গে যোগাযোগের উদ্দেশ্যে ইংরেজি শেখার মধ্যে পার্থক্যের কথা উল্লেখ করেন। প্রথমটি হলো লেখ্য ভাষা বা কেতাবি ভাষা এবং অন্যটি হলো কথ্য ভাষা।
"টিভি শো এই শূন্যস্থানটুকু পূরণ করতে সাহায্য করে এবং প্রকৃত ভাষার ব্যবহারের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে কথপোকথন চালিয়ে যাওয়ার দক্ষতা বৃদ্ধি করে।
নিচে কিছু টিভি শো-এর তালিকা দেওয়া হলো:
ফ্রেন্ডস: ১৯৯৪ সাল থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত সম্প্রচারিত জনপ্রিয় আমেরিকান সিটকম 'ফ্রেন্ডস' হাল আমলে আধুনিক প্রজন্মের কাছেও বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। নিউ ইয়র্ক শহরে বসবাসরত ছয় বন্ধুর জীবনকে কেন্দ্র করে এই শো-এর গল্প। মূলত হাস্যরস এবং মজার চরিত্রগুলোর জন্য সিটকমটি জনপ্রিয়তা পেয়েছে, এবং এটি শিক্ষার্থীদের জন্য কথপোকথনমূলক ইংরেজি শেখার একটা বড় সুযোগ। আপনার যদি 'টোফেল' দেওয়ার পরিকল্পনা থাকে তাহলে 'ফ্রেন্ডস' দিয়েই শুরু করতে পারেন। ভাষার শেখার পাশাপাশি এই টিভি শো'টি আপনাকে যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূলের সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিবে।
দ্য ক্রাউন: নেটফ্লিক্সের এই ড্রামা সিরিজে রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের শাসনামলকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। দ্য ক্রাউন আপনার শ্রবণ দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি ব্রিটিশ সংস্কৃতি ও ইতিহাস শেখার সুযোগ করে দেবে। এছাড়াও, দ্য ক্রাউন দেখতে গিয়ে আপনি 'কুইন'স ইংলিশ'-এর সঙ্গে পরিচিত হবেন। কুইন'স ইংলিশ হলো ইংরেজি ভাষার এমন একটি মানদণ্ড যা ব্রিটিশ ইংরেজির সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ এবং প্রাতিষ্ঠানিক ভাষা হিসেবে বিবেচিত।
আওয়ার প্লানেট: ডেভিড অ্যাটেনবোরোর বর্ণনায় নেটফ্লিক্সের এই তথ্যচিত্রে মানুষের কর্মকাণ্ডের ফলে প্রাকৃতিক পরিবেশের ওপর কী কী প্রভাব পড়ছে তা দেখানো হয়েছে। এতে বন্যপ্রাণী এবং ল্যান্ডস্কেপের সৌন্দর্য্য তুলে ধরার পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তন এবং সংরক্ষণের মতো পরিবেশগত সমস্যাগুলোর দিকেও মনোযোগ আকর্ষণ করা হয়েছে। এই শো'টি শিক্ষার্থীদের কথ্য ইংরেজি শ্রবণ ও অনুধাবন দক্ষতা বাড়াতে, শব্দভাণ্ডার সমৃদ্ধ করতে এবং পরিবেশ-সংক্রান্ত জটিল বিষয়গুলো বুঝতে সাহায্য করতে পারে।
ডেভিড অ্যাটেনবোরো এমনভাবে বিষয়গুলো বর্ণনা করেন যা শ্রোতাদের আকৃষ্ট করে; একইসঙ্গে অ্যাটেনবোরো তার স্পষ্ট এবং সাবলীল উচ্চারণের জন্যও বিশেষ পরিচিত- যা ইংরেজি উচ্চারণ এবং স্বরের ওঠা-নামা চর্চার জন্য একটি আদর্শ মডেল হিসেবে কাজ করতে পারে। এর বাইরে, তথ্যচিত্রটি ভূগোল এবং প্রাকৃতিক পরিবেশ সম্পর্কে আমাদের জ্ঞানকে আরও সমৃদ্ধ করতে পারে।
ফিনিস অ্যান্ড ফার্ব: শিশুদের জন্য নির্মিত এই অ্যানিমেশন শো'তে গ্রীষ্মকালীন ছুটিতে দুই সৎ ভাইয়ের নতুন নতুন জিনিস উদ্ভাবন এবং গড়ে তোলার অ্যাডভেঞ্চার দেখানো হয়েছে। চতুর হাস্যরস এবং চিত্তাকর্ষক গানগুলোর জন্য এই শো-এর খ্যাতি রয়েছে এবং এটি ইংরেজি শিক্ষার্থীদের জন্য ইংরেজি শোনা এবং অনুধাবনের চর্চা করার একটি উপায়। আবার এই শো'তে দ্রুতগতির ইংরেজি বাক্যলাপের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার মাধ্যমে শ্রবণ দক্ষতা বাড়তে পারে, বিশেষ করে নিয়মিত দেখার ফলে শিক্ষার্থী যখন শো-এর কথাবার্তার গতির সঙ্গে মানিয়ে নেবে।
আইইএলটিএস-এ ব্যান্ড স্কোর ৯ এর মধ্যে ৮ স্কোর করা সলিকা আক্তার এ ধরনের শো'গুলোকে ভাষা শেখার ক্ষেত্রে বেশ সহায়ক মনে করেন। বলে রাখা ভালো, সলিকা আইইএলটিএস-এ লিসেনিংয়ে পেয়েছেন ৯। তার ভাষ্যে, "কার্টুনের মতো কন্টেন্টগুলোর ভিজ্যুয়ালাইজেশন তরুণ শিক্ষার্থীদের মজার সাথে দ্রুত একটা ভাষা আয়ত্তে আনতে সাহায্য করে।"
ভাষায় নৈপুণ্য আনতে ম্যাগাজিন
সলিকা মনে করেন, ম্যাগাজিন বা সাময়িকী শুধুমাত্র শব্দভাণ্ডারই সমৃদ্ধ করে না, একইসঙ্গে দ্রুত পঠন দক্ষতাও বৃদ্ধি করে- যা আইইএলটিএসের মতো পরীক্ষাগুলোর জন্য অত্যাবশ্যক। "এ ধরনের পরীক্ষাগুলোতে সাফল্য পাওয়ার জন্য 'ফাস্ট রিডিং স্কিল' থাকা খুবই জরুরি", বলেন তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইএলটি'র শিক্ষক বিজয় লাল বসু মনে করেন, ম্যাগাজিন বা বই পড়ার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা কোনো নিয়ম মুখস্থ না করেই ব্যকরণগত শুদ্ধতা অর্জন করতে পারে। "আপনি যদি আমায় জিজ্ঞাসা করেন কেন আমরা শব্দবিন্যাস বা ব্যাকরণ অধ্যয়ন করি, উত্তর হবে- সঠিক বাক্য তৈরি করার জন্য; তাহলে পড়ার মাধ্যমে কেন সেই কাঠামোকে আত্মস্থ করা যাবে না?" বলেন তিনি।
এছাড়াও, খ্যাতনামা সাময়িকীগুলো পড়ার মাধ্যমে ইংরেজির দক্ষতা এবং বিষয়বস্তু বিশ্লেষণ-মূল্যায়নের ক্ষমতা তৈরি হয়। সাদী যেমনটা বলেছেন, "ভালো মানের জার্নাল এবং ম্যাগাজিন পড়ার মাধ্যমে পাঠকরা ভাষার আভিজাত্যের সঙ্গে পরিচিত হয়, অর্থাৎ কিভাবে ভাষার মাধ্যমে নান্দনিকভাবে মনের ভাব ফুটিয়ে তোলা যায় এবং এর ফলে পাঠকের নিজেরও ভাষাগত দক্ষতা বাড়ে।"
ইংরেজি শেখার জন্য সহায়ক কিছু ম্যাগাজিনের নাম নিম্নে উল্লেখ করা হলো:
রিডার'স ডাইজেস্ট: বিখ্যাত মার্কিন সাময়িকী রিডার'স ডাইজেস্টের নাম হয়তো অনেকের কাছেই বেশ পরিচিত। এই সাময়িকীতে স্বাস্থ্য ও সুস্থতা থেকে শুরু করে সংস্কৃতির অসংখ্য বিষয় তুলে ধরা হয়। রিডার'স ডাইজেস্টে থাকা আর্টিকেলগুলো পাঠকদের বোধগম্যতার জন্য সহজ-সাবলীলভাবে লেখা হয়, তাই এটি ইংরেজি শিক্ষার্থীদের শব্দভাণ্ডার সমৃদ্ধ করতে এবং পাঠ অনুধাবনের একটি উৎস হতে পারে। "আমি রিডার'স ডাইজেস্ট পড়ি, বিশেষ করে কৌতুক এবং অ্যানিমেল স্টোরিগুলোর জন্য", বলেন সাদমান। আপনি যদি দীর্ঘ নিবন্ধ বা ভারিক্কি ধরনের কোনো বই পড়তে না চান, তাহলে রিডার'স ডাইজেস্ট হতে পারে একটি ভালো বিকল্প।
দ্য ইকোনমিস্ট: সংবাদ ও কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স বিষয়ক এই সাপ্তাহিক ম্যাগাজিনে বৈশ্বিক ঘটনাবলি এবং বিভিন্ন ট্রেন্ডের বিস্তারিত আলোচনা তুলে ধরা হয়। দ্য ইকোনমিস্টের আর্টিকেলগুলো তুলনামূলক একাডেমিক স্টাইলে এবং কেতাবি ভাষায় লেখা হয়, ফলে এগুলো ইংরেজি শিক্ষার্থীদের পড়ার এবং অনুধাবনের দক্ষতা অর্জনের একটি ভালো উৎস। আপনি যদি আইইএলটিএসের জন্য প্রস্তুতি নিয়ে থাকেন, তাহলে আজই দ্য ইকোনমিস্টের একটা কপি সংগ্রহ করুন!
ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক: এটি এমন একটি ম্যাগাজিন যা মূলত ভূগোল, বিজ্ঞান এবং বিষয়ক আর্টিকেল প্রকাশ করে। তবে লেখার সঙ্গে উচ্চমানসম্পন্ন ছবি জুড়ে দেওয়ায় লেখাগুলো পাঠকদের আকর্ষণ করে। ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক ইংরেজি শিক্ষার্থীদেরকে এই বিশ্ব সম্পর্কে জানার এবং তাদের শব্দভান্ডার ও অনুধাবন দক্ষতা বাড়ানোর সুযোগ করে দেয়।
দ্য নিউইয়র্কার: দ্য নিউইয়র্কার ম্যাগাজিন সংস্কৃতি, রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলির ওপর আর্টিকেল প্রকাশ করে। সুদীর্ঘ আর্টিকেল এবং সাহিত্যশৈলীর জন্য এটি বিশেষ পরিচিত। দ্য নিউইয়র্কারের একজন নিয়মিত পাঠক আবরার আওসাফ বলেন, "দ্য নিউইয়র্কারের আর্টিকেলগুলো প্রায়ই কিছুটা জটিল হয়, যে কারণে পাঠকের কাছে এটি চ্যালেঞ্জিং কিন্তু পূর্ণ মনোযোগের সহিত যারা পড়তে চান তাদের জন্য এটি খুবই ভালো উৎস। পঠন ও লিখন দক্ষতা বাড়ানোর জন্য দ্য নিউ ইয়র্কার অবশ্যই একটি চমৎকার উৎস।
এই ম্যাগাজিনগুলোর নতুন সংখ্যা না পেলেও উদ্বিগ্ন হবার কোনো কারণ নেই। কারণ সবগুলো ম্যাগাজিনেরই পুরনো কপি ঢাকার নীলক্ষেতে সহজলভ্য।
শ্রবণ দক্ষতা অর্জনে পডকাস্ট
সলিকা আইইএলটিএসে লিসেনিংয়ে দুর্দান্ত ফলাফল করার কৃতিত্ব দিয়েছেন পডকাস্টকে। "আমি ইংরেজি শোনার মাধ্যমেই বেশি শিখেছি, কারণ আমি এর সঙ্গে বেশি পরিচিত। তাই পডকাস্ট শোনার মাধ্যমে কথা বলার অভিব্যক্তি বোঝা যায় এবং তা দৈনন্দিন জীবনে ইংরেজির চর্চা করার সময় ব্যবহার করা যায়। এছাড়াও, পডকাস্ট থেকে ট্রেন্ডি শব্দ বা ভাষার ট্রেন্ডি স্টাইলগুলো ধরা যায়, যা মাঝেমধ্যে আমি ইংরেজি বলা ও লেখার সময় ব্যবহার করতে পারি", বলেন তিনি।
এছাড়াও, পডকাস্ট আমাদের কথ্য ভাষা শুনে তা বোঝার দক্ষতা বাড়ায়। অনেক পডকাস্টে জটিল জটিল শব্দ, বাগধারা এবং 'ফাস্ট-পেসড ডায়লগ' ব্যবহৃত হয়, যেগুলো শুনে অর্থ উদ্ধার করা শ্রোতাদের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ। এসব পডকাস্ট শোনার মাধ্যমে একজন শিক্ষার্থী তার কথ্য ইংরেজি এবং সাংস্কৃতিক রেফারেন্সগুলো বোঝার ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারে।
যারাই নিজেদের ইংরেজি দক্ষতা বাড়াতে আগ্রহী, তাদের জন্য পডকাস্ট হতে পারে এক মোক্ষম হাতিয়ার।
যেসব পডকাস্ট শুনতে পারেন:
রিভিশনিস্ট হিস্টোরি উইথ ম্যালকম গ্লাডওয়েল: ইতিহাসের যেসকল আইডিয়া নিয়ে ভুল ধারণা প্রচলিত রয়েছে কিংবা যেগুলো উপেক্ষিত হয়েছে, সেগুলো পুনঃনিরীক্ষণ করা হয় এই পডকাস্টে। কৌতূহলোদ্দীপক ও চিন্তা-উদ্রেককারী নানা বিষয়ে জানার পাশাপাশি এ পডকাস্ট শিক্ষার্থীদের শ্রবণ ও অনুধাবন ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করবে।
বিবিসি গ্লোবাল নিউজ পডকাস্ট: এটি একটি ডেইলি নিউজ পডকাস্ট যা বিশ্বজুড়ে সাম্প্রতিক ঘটনা ও ট্রেন্ডগুলো সম্পর্কে তথ্য পরিবেশন করে। এ পডকাস্ট থেকে শ্রোতারা অসংখ্য বিষয়ের সঙ্গে পরিচিত হতে পারেন, জ্ঞানলাভ করতে পারেন এবং এটি তাদেরকে সাম্প্রতিক ঘটনাবলি-সম্পর্কিত শব্দভাণ্ডার সমৃদ্ধ করার সুযোগ করে দেয়। একইসঙ্গে ইংরেজির বিভিন্ন উচ্চারণ ও উপভাষা শেখারও সুযোগ করে দেয়। দিনের শুরুতে যদি জানার আগ্রহ হয় যে বিশ্বজুড়ে কী কী ঘটছে এবং একইসঙ্গে খানিকটা ইংরেজি দক্ষতাও বাড়াতে চান, তাহলে বিবিসির এই পডকাস্ট হতে পারে আপনার সঙ্গী।
টিফো ফুটবল পডকাস্ট: ফুটবল দুনিয়ার সব খবর নিয়ে হাজির হয় টিফো ফুটবল পডকাস্ট। ফুটবল ম্যাচ, খেলোয়াড় এবং খেলার কৌশল বিশ্লেষণ করা হয় এখানে। ক্রীড়া-সংক্রান্ত শব্দকোষ সমৃদ্ধ করতে সাহায্য করে এই পডকাস্ট। ফুটবলপ্রেমী শাহনূর রব্বানির ভাষ্যে, "টিফো ফুটবল পডকাস্ট ইংরেজি ভাষায় ফুটবলের বিষয়গুলো এমনভাবে বিশ্লেষণ করে যা জটিল নয়, কিন্তু বেশ সমৃদ্ধ।"
ন্যাচার পডকাস্ট: বিজ্ঞান ও প্রকৃতি বিষয়ে অতি-সাম্প্রতিক গবেষণা ও সংবাদ নিয়ে তথ্য দেয় এই পডকাস্ট। বিজ্ঞান বিষয়ক শব্দভাণ্ডার ও পরিভাষা শেখাতে এটি বেশ কার্যকরী। এই পডকাস্ট শুধু যে বিজ্ঞান নিয়ে উৎসাহীদের জন্য সহায়ক তা নয়, এখানে জটিল বিষয়গুলোকেও সহজ ভাষায় উপস্থাপন করা হয় যাতে সকলের বোধগম্য হয়।
এই পডকাস্টগুলো গুগল পডকাস্ট কিংবা অ্যাপল পডকাস্টে বিনামূল্যে পাওয়া যাবে।