আড়াই মাস বয়সী তামিমের করোনা জয়
এমন সময় জন্মগ্রহণ করেছে তামিম যখন একজন মানুষ আরেকজন মানুষের সংস্পর্শে যাওয়া নিষেধ। কিন্তু কারো সংস্পর্শ উপেক্ষা করার সুযোগ নেই তার। আর কারো না হোক অন্তত মায়ের সংস্পর্শে তো যেতেই হয়েছে আড়াই মাস বয়সী তামিমের। শুধু মা নয়; পেয়েছে বাবার আদরও।
জন্মের পর বাড়ির বাইরে যাওয়া হয়নি তামিমের। তবে বাবা আর নানির মাধ্যমেই করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয় সে। গত ১৩ জুন আড়াই মাস বয়সী তামিমের শরীরে করোনাভারাসের উপস্থিতি শনাক্ত করে বরগুনার স্বাস্থ্য বিভাগ। এরপর বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে টানা ১০ দিন চিকিৎসা শেষে করোনা জয় করে বাড়ি ফিরেছে তামিম।
তামিম বরগুনা পৌরসভার চার নম্বর ওয়ার্ডের পিটিআই এলাকার মো. সাগরের একমাত্র ছেলে। সে করোনাভাইরাসে আক্রন্ত হওয়ায় দু'দিন আগে তার বাবার শরীরে এ ভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত করে স্বাস্থ্য বিভাগ।
বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে আইসোলেশন ওয়ার্ডে কর্মরত চিকিৎসক ও নার্সদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তামিমের জয়টা অন্যসব করোনা রোগীদের মতো সহজ ছিল না। তামিমের যুদ্ধটা ছিল কষ্টের ও হতাশার।
করোনা ইউনিটে ছিল না কোনো শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। তারপরও বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে করোনা ইউনিটের প্রধান ডা. কামরুল আজাদের প্রচেষ্টায় তামিম আবার তার পরিবারে ফিরে যেতে পেরেছে।
তারা জানান, একজন প্রাপ্তবয়স্ক কোভিড-১৯ পজেটিভ রোগীর সেবায় আমাদের যতটা না ঝুঁকি ছিল তার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি ঝুঁকি ছিল তামিমকে চিকিৎসায়। কারণ সে বোঝে না মাস্ক পরা, বোঝে না মাথাটা অন্যদিকে ঘুরিয়ে রাখা।
''তামিমকে স্যালাইন দিয়ে ক্যানুলা করাতে গিয়ে চিকিৎসক ও নার্সদের পড়তে হয়েছে মহা ঝুঁকিতে। কারণ ওই সময়টায় তামিম চিৎকার দিয়ে কান্না করতো। সঙ্গে ছিল বিরামহীন কাশি।" বলেন তারা।
এ বিষয়ে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডের প্রধান ডা. কামরুল আজাদ বলেন, তামিম মূলত ওর বাবা এবং নানির মাধ্যমে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিল। কিন্তু কাকতালীয়ভাবে ওর মায়ের শরীরে করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি।