করমজলে আবারও ডিম দিয়েছে বিলুপ্ত প্রজাতির বাটাগুর বাসকা
সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণি প্রজনন কেন্দ্রে আবারও ডিম দিয়েছে বিলুপ্ত প্রজাতির কচ্ছপ বাটাগুর বাসকা। রবিবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বন্যপ্রাণি কেন্দ্রে কচ্ছপ লালন-পালন কেন্দ্রের পুকুর পাড়ে একটি কচ্ছপ ২৭টি ডিম দিয়েছে। ডিমগুলো ইনকিউবেটরে রাখা হয়েছে। ৬৫ থেকে ৬৭ দিন শেষে এই ডিম থেকে বাচ্চা ফুটে বের হবে বলে জানিয়েছেন সুন্দরবনের করমজল কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ কবির।
আজাদ কবির বলেন, বিলুপ্ত প্রায় প্রজাতির এই কচ্ছপ আমরা খুব গুরুত্বের সাথে লালন পালন করি। বংশ বৃদ্ধির জন্য আমরা সার্বক্ষণিক নজরে রাখছি। এর আগে আমাদের এখানে কচ্ছপ ডিম দিয়েছে। সেই ডিম থেকে বাচ্চাও ফুটেছে। রবিবার বিকেলে একটি কচ্ছপ ২৭টি ডিম দিয়েছে।সেই ডিমগুলো থেকে বাচ্চা ফুটানোর জন্য ইনকিউবেটরে রেখেছি। আশা করি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ডিম থেকে বাচ্চা ফুটে বের হবে। বর্তমানে আমাদের এখানে ৩ শতাধিক কচ্ছপ রয়েছে।
২০১৭ সালে দুটি কচ্ছপের ৬৩টি ডিম থেকে ৫৭ টি বাচ্চা হয়। ২০১৮ সালে দুটি কচ্ছপের ৪৬ ডিম থেকে ২১টি বাচ্চা পাওয়া যায়। ২০১৯ সালে একটি কচ্ছপের ৩২ টি ডিম থেকে ৩২টি বাচ্চা পাওয়া যায়।২০২০ সালে ১০ মে একটি কচ্ছপের ৩৫টি ডিম থেকে ৩৪টি বাচ্চা পাওয়া যায়। এসব বাচ্চা থেকে ২০১৭ সালে ২ টি, ২০১৮ সালে ৫টি, ২০১৯ সালে ৫ টি কচ্ছপ সুন্দরবনের বিভিন্ন নদীতে অবমুক্ত করে বন বিভাগ।
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ২০২১ সালের মধ্যে ১০ টি কচ্ছপ সুন্দরবনে অবমুক্ত করার কথা রয়েছে বলে জানিয়েছে বন বিভাগ।
উল্লেখ্য, ২০০০ সালের দিকে বন্যপ্রাণি গবেষকরা মনে করেন পৃথিবীতে আর বাটাগুর বাসকার কোন অস্তিত্ব নেই। পরে ২০০৮ সালে গবেষকরা প্রকৃতিতে বাটাগুর বাসকা আছে কিনা তা খুঁজতে শুরু করেন। খুঁজতে খুঁজতে নোয়াখালি ও বরিশালের বিভিন্ন জলাশয়ে ৮টি বাটাগুর বাসকা পাওয়া যায়। যার মধ্যে ৪টি পুরুষ ও ৪টি স্ত্রী। প্রজননের জন্য গাজীপুরে নিয়ে যাওয়া হয় কচ্ছপগুলোকে।
বনবিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত লোকেরা নিবিড়ভাবে লালনপালন ও প্রজননের চেষ্টা করে বাটাগুর বাসকাগুলোকে। তারপরও তেমন সাফল্য পাওয়া যায়নি। তবে কয়েক বছরে গাজিপুরে প্রায় ৯৪টি বাচ্চা দিয়েছিল ৮টি মা কচ্ছপ। সেখানে ভাল সাড়া না পাওয়ায় ২০১৪ সালে মূল ৮টি বাটাগুর বাসকা ও তাদের জন্ম দেয়া ৯৪টি ছানাসহ করমজল কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়।