করোনার ঝুঁকিতে চট্টগ্রামে চলছে নির্বাচনী প্রচারণা
স্বাস্থ্য বিভাগ চট্টগ্রামকে করোনার সর্বোচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে ঘোষণা করলেও আতঙ্কের মধ্যে চলছে সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রচারণা। বুধবার দেশে প্রথম করোনা আক্রান্ত রোগীর মৃত্যু সংবাদ পাওয়া গেছে। আক্রান্ত ১৪ জন। এর মধ্যেই প্রতিদিন ভোটারের দুয়ারে দুয়ারে যাচ্ছেন প্রার্থীরা।
সারাদেশে সভা-সমাবেশ আয়োজন বন্ধ রাখতে বলা হলেও নির্বাচন কমিশন চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচন চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে। এখনো প্রচারণায় কোনো ধরনের নিষেধাজ্ঞা জারি করেনি ইসি। উল্টো পরিস্থিত স্বাভাবিক বলে শনিবার চট্টগ্রামে একটি অনুষ্ঠানে দাবি করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা।
ঝুঁকি উপেক্ষা করে প্রতিদিন ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে প্রচারণা চালাচ্ছেন প্রধান দুই দল আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী ও বিএনপির মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেনসহ কাউন্সিলর প্রার্থীরা।
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, চট্টগ্রাম করোনার সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। যদি কোনোভাবে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে, তাহলে নিয়ন্ত্রণ কঠিন হয়ে পড়বে। বাংলাদেশে রোগী শনাক্তের আগে আমরা চসিক নির্বাচনে প্রচারণা চালাতে নিষেধ করেছি। অনুরোধ জানিয়ে চিঠিও দিয়েছি। কিন্তু প্রচারণা চলছে।
ভোটাররা জানিয়েছেন, করোনা আতঙ্কে মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছে না। কিন্তু কমিশন নির্বাচন আয়োজন নিয়ে ব্যস্ত। প্রতিটি প্রচারণায় শত শত মানুষের সমাগম হচ্ছে।
জামালখান ওয়ার্ডের ভোটার সাবিত আলম বলেন, মানুষ আতঙ্কের মধ্যে দিনযাপন করছে। অনেকে প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছে না। তার মধ্যে ইসি নির্বাচন স্থগিত না করে মানুষকে ঝুঁকিতে ফেলছে। করোনার জীবাণুবাহী কেউ যদি প্রচারণায় অংশ নেন, তাহলে এই ভাইরাস দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বুধবার পূর্ব মাদারবাড়ি ওয়ার্ডসহ কয়েকটি ওয়ার্ডের প্রচারণা চালিয়েছেন নৌকার প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী। এ সময় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের শত শত নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।
রেজাউল করিম বলেন, ভোট চাইতে মানুষের কাছে যেতে হচ্ছে। যেহেতু কোনো নিষেধাজ্ঞা জারি হয়নি, তাই আমরা প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি। তবে প্রচারণার মাত্রা আগের চেয়ে কমিয়ে আনা হয়েছে। ইসি কোনো নির্দেশনা দিলে আমরা সেটি মেনে চলব।
বিএনপির মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন বুধবার প্রচারণা চালিয়েছেন মোহরা ওয়ার্ডে। তার সঙ্গে বিএনপির শতাধিক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।
ডা. শাহাদাত বলেন, নিয়ম অনুযায়ী প্রচারণা চালানো হচ্ছে। যদিও করোনার ঝুঁকি রয়েছে। তবে ইসি কোনো নির্দেশনা এখনো দেয়নি। নির্দেশনা পেলে আমরা সেটি অনুসরণ করব।
এদিকে নির্বাচন পেছানোর সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান। তবে প্রচারণার কিছু নিয়ম করে দেওয়া হবে। একসঙ্গে বেশি লোকের সমাগম করা যাবে না।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন প্রার্থীদের প্রচারণা সীমিত এবং নিয়ম অনুযায়ী করার নির্দেশনা দেবে। সে অনুযায়ী প্রার্থীদের প্রচারণা চালাতে হবে। তবে নির্বাচন পেছানোর সম্ভাবনা নেই।
২৯ মার্চ চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।