খুলনায় খোলা বাজারে ৫ টাকায় ডিম
করোনাকালে খুলনায় প্রতি পিস ডিম ৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পিকআপ ভ্যানে করে নগরীর বিভিন্ন স্থানে খোলা বাজারে এ দামে বিক্রি করা হচ্ছে ডিম। এভাবে ২০ লাখ ডিম বিক্রির পরিকল্পনা রয়েছে উদ্যোক্তাদের।
এদিকে, ডিমের মূল্য কম থাকায় ক্রেতাদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। দাম কম থাকায় একেক জন ক্রেতা ২০ থেকে ৪০টি পর্যন্ত ডিম কিনছেন। মহামারি করোনা পরিস্থিতিতে জনসাধারণের প্রাণিজ পুষ্টি নিশ্চিতকরণে ন্যায্যমূল্যে ভ্রাম্যমাণ দুধ, ডিম ও মাংস বিক্রির এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থায়নে খোলা বাজারে ডিম বিক্রির উদ্যোগ বাস্তবায়ন করছে বিপিআইএ'র খুলনা বিভাগীয় কমিটি ও খুলনা পোল্ট্রি ফিশ ফিড শিল্প মালিক সমিতি।
গতকাল বুধবার দুপুরে নগরীর ডালমিল মোড়ের খুলনা পোল্ট্রি ফিশ ফিড শিল্প মালিক সমিতির সামনে থেকে শুরু হয় ন্যায্যমূল্যে ডিম বিক্রির এ কার্যক্রম। ভ্রাম্যমাণ এ কেন্দ্র থেকে ডিম কেনেন শেখ আইনুল হক। তিনি বলেন, 'বাজারে ডিমের দাম একটু বেশি। কিন্তু এখানে প্রতিটি ডিমের দাম মাত্র ৫ টাকা। এ জন্য ১০টি ডিম কিনেছি'। করোনার সংকটকালে এ ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করায় তিনি সরকার ও পোল্ট্রি ফিশ ফিড শিল্প মালিক সমিতিকে ধন্যবাদ জানান।
নগরীর ময়লাপোতা মোড় থেকে ডিম ক্রয়কারী দিন মজুর মো. আকাশ মোল্লা এবং তার চাচা মো. মোস্তফা বলেন, তারা দিনমজুরির কাজ করেন। তাই স্বল্পমূল্যে পেয়ে ২০টি করে দু'জনে ৪০টি ডিম কিনেছেন। এ ধরনের উদ্যোগ 'ভালো' বলে মন্তব্য করেন তারা।
খুলনা পোল্ট্রি ফিশ ফিড শিল্প মালিক সমিতির মহাসচিব এস এম সোহরাব হোসেন বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে কঠোর লকডাউনে গত ১২ এপ্রিল থেকে তারা পিকআপে করে ভ্রাম্যমাণ ডিম বিক্রি করছেন। প্রাথমিক পর্যায়ে ২০ দিন এবং পরবর্তীতে মোট ৪৫ দিন ডিম বিক্রির একটি পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত গত ১১ দিনে ৫ লাখ ডিম বিক্রি করা হয়েছে। এভাবে ২০ লাখ ডিম বিক্রির লক্ষ্য রয়েছে। মাইকিং করে সবাইকে দেওয়া হচ্ছে। একজন ২০ থেকে ৩০টি ডিম নিতে পারছেন।
তিনি বলেন, 'প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে পিকআপ ভ্যান ভাড়া দেওয়া হচ্ছে। আর আমরা স্বেচ্ছাশ্রমে প্রান্তিক খামারিদের কাছ থেকে স্বল্প মূল্যে ডিম কিনে বিক্রি করছি। সরকার ন্যায্যমূল্যে দরিদ্র মানুষের মাঝে ডিম বিক্রির একটি ভালো উদ্যোগ নিয়েছে। যেটি আমরা বাস্তবায়নে কাজ করছি'।
সোহরাব হোসেন বলেন, 'করোনা উপেক্ষা করে ঝুঁকি নিয়ে আমরা পথে পথে ডিম বিক্রি করছি। আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে, এ লকডাউনে মানুষের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করা। বটিয়াঘাটা, ডুমুরিয়া ও ফুলতলা উপজেলার প্রান্তিক ১৩ জন খামারির কাছ থেকে ডিম আনা হচ্ছে। তিনি খামারিদের ন্যায্যমূল্য পাওয়ার ব্যবস্থা করতে সরকারের প্রতি আহবান জানান'।
প্রসঙ্গত, খুলনায় ১৬ হাজার প্রান্তিক খামারি রয়েছে। এছাড়া ১ হাজার ৩৬৭ পোল্ট্রি খামার রয়েছে। হাঁসের খামার রয়েছে ২টি।