চট্টগ্রামের ‘ফুসফুস’ রক্ষার দাবি পরিবেশবাদীদের
চট্টগ্রামের `ফুসফুস' খ্যাত সিআরবিতে হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজ স্থাপনের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বৃক্ষরোপণ করেছে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম, ক্যাব যুব গ্রুপ, লায়ন্স ক্লাব অব প্রগ্রেসিভ ওয়েস্টসহ বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠন। শনিবার নগরীর সিআরবির সাত রাস্তা মোড়ে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে পরিবেশবাদীরা বলেন, সিআরবি চট্টগ্রামের প্রাকৃতিক অক্সিজেন কারখানা। নগরীর ঐতিহাসিক স্থান, ঐতিহ্য, প্রতিবেশ, বন, পাহাড় ধ্বংস করে শুধু হাসপাতালই নয়, কোনো ধরনের স্থাপনাই করা উচিত নয়। হাসপাতাল, মেডিকেল কলেজ ও বিভিন্ন শিল্পের নামে পাহাড়, রেলওয়ের ভূমি দখলে ব্যবসায়ীদের ষডযন্ত্র বন্ধ করার জন্য প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা। একই সঙ্গে চট্টগ্রামের ফুসফুস ও বুকভরে নিঃশ্বাস নেয়ার স্থানটিকে ঐতিহ্য হিসেবে সংরক্ষণের দাবি জানিয়ে অবিলম্বে এ ধরনের হটকারী সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের আহবান জানানো হয় মানববন্ধন থেকে।
বক্তারা আরও বলেন, চট্টগ্রামে হাজার বছরের গাছগাছালিতে আচ্ছাদিত নয়নাভিরাম এই উন্মুক্ত প্রাকৃতিক পরিসরটি নগরীর লাখ লাখ মানুষকে সতেজ শ্বাস নিতে সহায়তা করছে। যার কারণে সংস্কৃতি অঙ্গন ও বিনোদনের অন্যতম তীর্থস্থানে পরিণত হয়েছে এই সিআরবি। যা চট্টগ্রামের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সংগে মিশে আছে। হাসপাতাল করতে হলে বন্দর হাসপাতাল, টিভি হাসপাতাল, হাজী ক্যাম্প ও রেলওয়ের অনেক অবৈধ দখলী ভূমিতে করা যায়।
বক্তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সরকার ব্যবসায়ীদের শিল্প স্থাপনের নামে প্রতিনিয়তই বিপুল পরিমাণ সরকারি ভূমি, পাহাড়, স্থাপনা নামমাত্র মূল্যে বরাদ্দ দিচ্ছে। এক্ষেত্রে পাহাড়, টিলা ও মানুষের শ্বাস নেয়ার স্থানটুকুও বাদ যাচ্ছে না। সিআরবি চট্টগ্রামের কার্বন শোষণের প্রাকৃতিক কারখানা। হাসপাতাল করার জন্য চট্টগ্রামে অনেক জায়গা থাকলেও শতবর্ষী গাছ, পাখির কোলাহল, বসার জায়গা, হাঁটাহাঁটির পথ, প্রাণ-প্রকৃতি ধ্বংস করে কংক্রিটের ভারী স্থাপনা নির্মাণের অনুমোদন খুবই দুঃখজনক। আর প্রকৃতি ধ্বংস করে হাসপাতাল কেন শহরের মাঝখানে স্থাপন করতে হবে, তা কোন ভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় বলে তারা মতপ্রকাশ করেন। পরে নেতারা হাসপাতালের প্রস্তাবিত স্থানে বৃক্ষরোপণ করেন।
মানববন্ধনে সংহতি জানিয়েছেন ক্যাব চট্টগ্রামের উপদেষ্টা ও বিশিষ্ট পরিবেশ গবেষক ড. ইদ্রিস আলী, ক্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, লায়ন্স ক্লাব অব প্রগ্রেসিভ ওয়েস্ট এর সভাপতি অধ্যাপিকা ববি বড়ুয়া, ক্যাব মহানগরের সভাপতি জেসমিন সুলতানা পারু, ক্যাব কর্নেলহাট থানা সভাপতি ডা. মাসবাহ উদ্দীন তুহিন, সাধারণ সম্পাদক দিদার প্রদান, ক্যাব পাচলাইশের সাধারণ সম্পাদক সেলিম জাহাঙ্গীর, ক্যাব সদরঘাটের সভাপতি শাহীন চৌধুরী, ক্যাব চান্দগাঁও সভাপতি মো. জানে আলম, ক্যাব হালিশহর সভাপতি এমদাদুল করিম সৈকত, ক্যাব বন্দর-পতেঙ্গার সমন্বয়কারী মোহাম্মদ আলী, ক্যাব জামালখানের সাধারণ সম্পাদক নবুয়াত আরা সিদ্দীকি, ক্যাব চকবাজারের হেলাল চৌধুরী, ক্যাব নেতা সেলিম সাজ্জাদ, শাহীন শিরিন প্রমুখ।