চট্টগ্রামে করোনাভাইরাসের ওষুধ নিয়ে গুজব
''স্বপ্নেপ্রাপ্ত ওষুধ খেলে সেরে যাবে করেনা। সাদা রঙ্গের গোল আকৃতির গাছের বিচি খেলে অথবা ভিজিয়ে পানি পান করলে মহামারি থেকে বাঁচা যাবে।'' তাই এই ফল কুড়াতে রাত-দিন গাছতলায় ভিড় করছে লোকজন। চট্টগ্রামের মিরসরাই, সীতাকুণ্ড, বোয়ালখালী, পটিয়া, রাঙ্গুনিয়া, লোহাগাড়াসহ কয়েকটি উপজেলায় মঙ্গলবার রাত থেকে ছড়িয়ে পড়েছে এই গুজব।
এ দিকে চিকিৎসকরা বলছেন, এখন পর্যন্ত করোনা ভাইরাসের কোনও ওষুধ আবিষ্কার হয়নি। তাই ওষুধ মনে করে গাছের বিচি ভিজিয়ে পানি খেলে উল্টো অসুস্থ হয়ে পড়ার শঙ্কা রয়েছে।
মিরসরাইয়ের বাসিন্দা মাঈন উদ্দিন লিটন বলেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গ্রামের নারী-পুরুষ টর্চলাইটের আলো জালিয়ে কি যেন খোঁজাখুজি করতে দেখে সামনে এগিয়ে যাই। সাদা মার্বেল আকৃতির গোটা জাতীয় বিচি সংগ্রহ করার কারণ জিজ্ঞেস করতেই তারা বলে, 'এগুলো ভিজিয়ে পানি খেলে করোনাভাইরাস থেকে বাঁচা যাবে।' তারা এই ওষুধধের কথা স্বপ্নে দেখেছে। আমি এর প্রতিবাদ করলে উল্টো আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়।
মিরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, করোনার ওষুধ পাওয়ার গুজবের বিষয়টি স্থানীয় লোকজনের কাছে শুনেছি। এ ধরনের খবর ভিত্তিহীন। কিছু অসচেতন লোক এ ধরনের গুজব ছড়াচ্ছে। এতে উল্টো অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি আছে।
সীতাকুণ্ড উপজেলার বাসিন্দা- নির্দেশ বড়ুয়া বলেন, বাড়বকুন্ড এলাকায় কিছু নারীকে সাদা আকৃতির গাছের বিচি কুড়াতে দেখি। এই বিচি খেলে করোনা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে এমনটাই তাদের বিশ্বাস। অনেক বোঝানোর পরও তাদের ভুল ভাঙ্গাতে পারলাম না।
নির্দেশ বড়ুয়া আরো বলেন, স্থানীয় ভাষায় এগুলোকে মেন্দা এবং হরবা গাছের বিচি হিসেবে অভিহিত করা হয়।
বিভিন্ন্ এলাকায় খোজ নিয়ে জানা যায়, মঙ্গলবার রাত থেকে থেকে এই গুজব ছড়িয়ে পড়ে। স্বপ্নে প্রাপ্ত সাদা আকৃতির গাছের বিচি সংগ্রহ করতে বাড়ির আশাপাশ থেকে শুরু করে ঝোপ-জঙ্গলও বাদ যায়নি।
সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিল্টন রায় বলেন, সীতাকুণ্ডে এ ধরনের গুজব ছড়ানোর বিষয়টি আমি শুনেছি। গাছের বিচি খেলে অথবা ধুয়ে পানি খেলে করোনা ভালো হয়ে যাবে এমন ধারণা অযৌক্তিক এবং বিজ্ঞান সম্মত নয়। জাতীয় সংকটময় মহুর্ত্বে এমন গুজবে প্রভাবিত না হওয়ার জন্য নাগকিরদের প্রতি আহবান জানান তিনি।