চট্টগ্রামে নষ্ট হয়ে যাওয়া ১৫ হাজার চামড়া ফেলা হলো ময়লার ভাগাড়ে
বিক্রি না হওয়ায় চট্টগ্রামে প্রায় ১৫ হাজার পশুর চামড়া নষ্ট হয়ে গেছে। এসব চামড়া রোববার ভাগাড়ে ফেলে দিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা। বিক্রি করতে না পেরে চামড়াগুলো মৌসুমী ব্যবসায়ীরা ফেলে চলে গেছেন বলে জানা গেছে।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা শেখ শফিকুল মান্নান সিদ্দিকী দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, আনুমানিক ১৫ হাজার নষ্ট চামড়া সংগ্রহ করা হয়েছে। পরে এসব চামড়া বায়েজিদ বোস্তামী এলাকার আরেফিন নগরে ভাগাড়ে ফেলে দেওয়া হয়েছে।
'এরমধ্যে আতুরার ডিপো এলাকা থেকে প্রায় ১০ হাজার নষ্ট চামড়া সংগ্রহ করা হয়েছে। বাকি চামড়া ষোলশহর জামেয়া আহমদিয়া সুন্নীয়া আলিয়া মাদ্রাসা মাঠ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। এসবের মধ্যে গরু, খাসি, মহিষের চামড়া ছিল। তবে বেশিরভাগ গরুর চামড়া,' বলেন তিনি।
গত বছর ঈদুল আজহায় চট্টগ্রামে প্রায় ১ লাখ চামড়া নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। দাম না পেয়ে চামড়া রাস্তায় ফেলে চলে গিয়েছিলেন মৌসুমী ব্যবসায়ীরা। এই ঘটনায় দেশজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছিল। কিন্তু এবারও সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটল।
মৌসুমী ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেছেন, আড়তদারদের কারসাজির কারণে চট্টগ্রামে এবারও চামড়ার প্রকৃত মূল্য পাননি তারা।
মৌসুমী চামড়া ব্যবসায়ী জাগির হোসেন দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'আমি ৭২টি চামড়া কিনেছি গড়ে ২০০ টাকা দামে। কিন্তু আড়তদাররা ১০০ টাকার বেশি দামে চামড়া কিনেননি। কিছু চামড়া লোকসান দিয়ে বিক্রি করেছি। রাতের দিকে আড়তদাররা চামড়া কেনা বন্ধ করে দেন। তাই অবিক্রিত চামড়াগুলো ফেলে এসেছি।'
আড়তদাররা জানিয়েছেন, নষ্ট চামড়াগুলো বিভিন্ন উপজেলা থেকে এসেছে। বিক্রি করতে না পেরে এসব চামড়া ফেলে চলে গেছেন ব্যবসায়ীরা। এবার চট্টগ্রামে পশু কোরবানির সংখ্যা কমেছে বলে ধারণা করছেন আড়তদাররা। কারণ অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার চামড়া কম এসেছে।
বৃহত্তর চট্টগ্রাম কাঁচা চামড়া আড়তদার সমিতির সাবেক সভাপতি মো. মোসলেম উদ্দিন বলেন, 'এবার প্রায় ৪ লাখের মতো চামড়া এসেছে। অন্যান্যবার ৫ থেকে সাড়ে ৫ লাখ চামড়া আসে। উপজেলা থেকে আসা কিছু চামড়া নষ্ট হয়ে গেছে, তবে গতবারের তুলনায় সেই সংখ্যা কম।'
একসময় বন্দরনগরীতে ২২টি ট্যানারি ছিল। এখন রয়েছে মাত্র একটি। পরিবেশ অধিদফতরের নিয়ম না মানার কারণে বাকি ট্যানারিগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
মূলত ট্যানারি বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে চট্টগ্রামে চামড়া শিল্পে দুর্দিন নেমে এসেছে। এজন্য চট্টগ্রামের চামড়াগুলো বিক্রি করার জন্য ঢাকার ট্যানারির ওপর নির্ভর করতে হয়।
চট্টগ্রামে আড়তদার রয়েছেন প্রায় ২৫০ জন।