জেএসসি ও সমমানের পরীক্ষা বাতিলের সুপারিশ পরীক্ষা উন্নয়ন ইউনিটের
বাংলাদেশ পরীক্ষা উন্নয়ন ইউনিট (বেদু) সরকারের প্রতি জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) এবং সমমানের পরীক্ষা অনুষ্ঠান বাতিলের পরামর্শ দিয়েছে। চলতি বছর কোভিড-১৯ মহামারির কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেওয়ার কোনও সম্ভাবনা যদি দেখা না যায়- তবেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুপারিশ করে সংস্থাটি।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রনালয় আসন্ন একাডেমিক কার্যক্রম, ক্লাস এবং পরীক্ষা সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে। এ প্রেক্ষিতেই সুপারিশটি করা হয়।বেদু'র সুপারিশটি বিশ্লেষণ করতে ইতোমধ্যেই সংশ্লিষ্ট নানা মহলের সঙ্গে বেশ কয়েকটি বৈঠকও করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
মাধ্যমিক এবং উচ্চশিক্ষা বিষয়ক সচিব মাহবুব হোসেইন- দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে জানান, উপযুক্ত সমাধান খুঁজে বের করার লক্ষ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন,''এখন পর্যন্ত আমরা চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেইনি। তবে বিশেষজ্ঞদের মতামতের উপর ভিত্তি করে অচিরেই আমরা একটি সমাধান বের করব।''
এনিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তারা সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব এবং তার কার্যালয়ের অন্যান্য শীর্ষ কর্মকর্তাদের সাথেও বৈঠক করেছেন।
''বেদুর সুপারিশ নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। আলোচনার বিষয়বস্তু প্রধানমন্ত্রীকে জানাবেন তার কার্যালয়ের কর্মকর্তারা। এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য আমরা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে আসা নির্দেশনার উপর নির্ভর করছি'' বলেন মাহাবুব হোসেইন।
জাতীয় পাঠ্যক্রম এবং পাঠ্যপুস্তক বোর্ডও নতুন শিক্ষাবর্ষের পাঠ্যসূচি প্রণয়নে কাজ করছে।
বোর্ড চেয়ারম্যান প্রফেসর নারায়ণ চন্দ্র সাহা- দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে জানান, আগামীকাল বুধবার (১২ আগস্ট) থেকে পাঠ্যপুস্তক বিশেষজ্ঞদের অংশগ্রহণে একটি ওয়ার্কশপ চালু করা হবে।
''"পাঠ্যক্রম হ্রাস করার কোন সুযোগ নেই। তবে আমরা বিশেষজ্ঞদের মতামত গ্রহণের পরে এটি প্রণয়ন করব।''
ইতোমধ্যে, জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমি একটি খসড়া পরিকল্পনা তৈরি করেছে- যা শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে আগামী পহেলা সেপ্টেম্বর থেকে প্রাথমিক শ্রেণির ক্লাস (চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত) শুরু করার পরামর্শ দিয়েছে। সেপ্টেম্বরের শুরু থেকে ৩০ নভেম্বর অবধি শ্রেণিকক্ষে পাঠদান চালু রাখার কথা বলা হয় সেখানে। পঞ্চম শ্রেণির ক্লাসও ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। পরবর্তীতে পরীক্ষার বিষয়টি মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করবে।
এপ্রসঙ্গে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমি মহাপরিচালক মো. শাহ আলম বলেন, আগামী সেপ্টেম্বর থেকে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান চালু করার লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। আগামী অক্টোবরেও ক্লাস চালুর বিষয়ে আরেকটি পরিকল্পনা করা হবে।''
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রনালয়ের সচিব আকরাম-আল-হোসেইন দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে জানান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার ব্যাপারে তাদের পরিকল্পনা চলমান থাকলেও- সবকিছুই দেশে চলমান মহামারি পরিস্থিতির উপর নির্ভর করছে।
বেদুর সুপারসিশ সমূহ:
সেপ্টেম্বর থেকে ক্লাস শুরু হলে পাঠ্যসূচি কমিয়ে আনার সুপারিশ করেছে পরীক্ষা উন্নয়ন ইউনিট। তবে পরীক্ষা পূর্ণমান ১০০-ই থাকবে। আগামী ডিসেম্বরে শিক্ষা মন্ত্রণালয় পরীক্ষা অনুষ্ঠান করলে- সেক্ষেত্রে পরীক্ষার পূর্ণ নাম্বার অর্ধেক বা ৫০ এ নামিয়ে সংক্ষিপ্ত পাঠক্রমে পরীক্ষা নিতে পারবে।
সুপারিশে আরো বলা হয়, জেএসসি পরীক্ষা চালুর আগে যে বৃত্তি পরীক্ষাগুলি নেওয়া হয়েছিল তাদের পাঠ্যক্রম অনুসারে পরীক্ষা নেওয়া যেতে পারে।
এছাড়া, শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা ছাড়াই উচ্চ শ্রেণিতে পদোন্নতি এবং সিলেবাসের অসম্পূর্ণ অংশগুলি আগামী বছরের সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করেছে- বেদু।