পিকে হালদারের অর্থ পাচার ইস্যু: বাংলাদেশ ব্যাংকের ৩৯৪ কর্মকর্তার তালিকা হাইকোর্টে দাখিল
কয়েক হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং এন্ড ফাইন্যান্স সার্ভিসের পরিচালক পিকে হালদারের অর্থপচারের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো কর্মকর্তা জড়িত কিনা সে বিষয়ে অনুসন্ধানের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তিনটি বিভাগের কর্মকর্তাদের তালিকা হাইকোর্টে উপস্থাপন করা হয়েছে।
তিনটি আলাদা বিভাগে ২০১০ সাল থেকে এ ২০১২ সাল পর্যন্ত কর্মরত ৩৯৪ জন কর্মকর্তার তালিকা হাইকোর্টে দাখিল করেছে কেন্দ্রিয় ব্যাংক। এতে বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, ডিপার্টমেন্ট অব ফিনান্সিয়াল ইনস্টিটিউশন্স অ্যান্ড মার্কেটস-১৪৭ জন, ফিনান্সিয়াল ইনস্টিটিউশন্স ইন্সপেকশন ডিপার্টমেন্ট-৫৭ জন, ইন্টারন্যাল অডিট ডিপার্টমেন্ট-১৯০ জন ২০১০ সালে থেকে কর্মরত আছেন।
সোমবার এ তালিকাটি হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মহিউদ্দিন শামীমের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চে দাখিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।
এই তালিকা উপস্থাপনের পর পাসপোর্ট জব্দের আদেশের পরও প্রশান্ত কুমার হালদার (পি কে হালদার) কীভাবে বিদেশে পালিয়ে গেলেন তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।
একইসঙ্গে পি কে হালদারের মামলার সর্বশেষ অগ্রগতিও জানাতে চেয়েছেন আদালত। এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের তিনটি বিভাগে ২০০৮ সাল থেকে কর্মরতদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা ১৫ মার্চের মধ্যে আদালতে দাখিলের আদেশ দিয়েছেন। এছাড়াও এসব কর্মকর্তার মদ্যে পি হালদারের আর্থ পাচারের সাথে জড়িতদের বিষয়ে পদক্ষেও ও তালিকা চেয়েছেন।
পি কে হালদার যেদিন দেশত্যাগ করেন সেদিন বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশনের দায়িত্বরতদের এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়িত্বে কে ছিলেন তার তালিকা দাখিলেরও আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আদালতে দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক। আর ব্যারিস্টার খান মোহাম্মদ শামীম আজিজ ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে।
ওই তিন বিভাগে গত ২০০৮ থেকে ২০২০ সালে দায়িত্বে থাকাদের নাম, পদবী, ঠিকানা সরবরাহ করতে ২১ জানুয়ারি নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ওই সময়ে অর্থপাচাররোধে এসব কর্মকর্তাদের ব্যর্থতা আছে কিনা এবং দায়িত্ব পালনে ব্যর্থদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে কিনা তা ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংককে জানাতে বলা হয়েছিল।
২০০৮ ও ২০০৯ সালে ম্যানুয়েল সিস্টেম থাকায় তাদের তালিকা প্রণয়নে সময় চেয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এছাড়া জালিয়াতি ও অর্থ পাচারে ব্যর্থ বিষয়ে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এজন্যও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সময় প্রয়োজন। এই বিষয়গুলো উপস্থাপনের পর আদেশ দেন বলে জানান ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন।
গত বছরের ১৮ নভেম্বর একটি জাতীয দৈনিকে 'পি কে হালদারকে ধরতে ইন্টারপোলের সহায়তা চাইবে দুদক' শীর্ষক প্রকাশিত প্রতিবেদন নজরে নিয়ে গত ১৯ নভেম্বর তাঁকে বিদেশ থেকে ফেরাতে এবং গ্রেপ্তার করতে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা জানতে চেয়ে স্বপ্রণোদিত আদেশ দেন হাইকোর্ট।
ওই আদেশের ধারাবাহিকতায় ২১ জানুয়ারি তিন বিভাগে ২০০৮ থেকে ২০২০ সালে দায়িত্বে থাকাদের নাম, পদবী, ঠিকানা সরবরাহের নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।