প্রশাসনের নীরবতা সংকট তৈরী করেছে: হিন্দু মহাজোট
দেশের বিভিন্ন এলাকায় হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দির ও ঘরবাড়িতে হামলার পর প্রশাসনের নীরবতা গভীর সংকটের সৃষ্টি করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের (বিজেএইচএম) নেতারা।
তারা আরও বলেন, প্রশাসনের সদিচ্ছা থাকলে এসব ঘটনা এড়ানো যেত। প্রশাসনের মধ্যে এখনোও ঘাপটি মেরে লুকিয়ে আছে মৌলবাদী চক্র। দীর্ঘদিন ধরে সংখ্যালঘু নির্যাতনের প্রশ্নে সরকারের নমনীয় নীতির কারণে আজকের এই অবস্থা তৈরি হয়েছে। বর্তমান সরকার সংখ্যালঘু নির্যাতন বন্ধে আন্তরিক নয়।
শুক্রবার সাম্প্রদায়িক হামলাকারীদের বিচারের দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সভায় এসব মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের নেতারা।
হিন্দু মহাজোটের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সুধাংশু চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, "ঘটনা ঘটার ৭ দিন পরে সরকারের এই সম্প্রীতি মিছিল হিন্দু সম্প্রদায়ের সঙ্গে প্রহসন ছাড়া কিছুই নয়। আগে হামলাকারীদের বিচারের মুখোমুখি করুন, তারপর সম্প্রীতি মিছিল করা যাবে"।
বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের প্রধান সমন্বয়কারী শ্যামল কুমার রায় বলেন, "হামলাকারীরা হিন্দুদের দেশ ত্যাগ করার জন্য চাপ দিচ্ছে। আর সরকার দলীয় লোকজন তাদের সাহায্য করছে। যার প্রেক্ষিতে মন্দির, হিন্দু বাড়ি, হিন্দু নারী, হিন্দুর জমি তাদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে"।
প্রতিবাদ সভায় হিন্দু মহাজোটের নেতারা হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত সমস্ত মন্দির ও বসতবাড়ি সরকারি খরচে পুনঃস্থাপনের দাবি জানিয়েছেন।
হিন্দু মহাজোটের মুখপাত্র পলাশ কান্তি দে আজকের অনুষ্ঠানের সময় আগামীকাল শনিবারেরও জন্য প্রতিবাদ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। কাল ভোর ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন তারা। এছাড়া ৬৪টি জেলার গুরুত্বপূর্ণ সড়কে একই সময় অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে।
উল্লেখ্য, কুমিল্লায় একটি পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন পাওয়াকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি মন্দির ও হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হামলায় দেশজুড়ে কমপক্ষে ছয়জন নিহত হয়েছে।
শারদীয় দুর্গাপূজা চলাকালে গত বুধবার (১৩ অক্টোবর) ভোরে কুমিল্লা শহরের নানুয়াদীঘির উত্তরপাড়ে দর্পণ সংঘের পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন শরীফ পাওয়া যায়। এরপর ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে ওই মণ্ডপে হামলা চালায় একদল লোক। সেখানে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়। সারাদেশেই এরপর হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর সাম্প্রদায়িক হামলা শুরু হয়।