বাংলাদেশে সন্ত্রাসবাদের উস্কানি দেয়ার অভিযোগে লন্ডন প্রবাসীর কারাদণ্ড
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দিয়ে বাংলাদেশে সন্ত্রাসবাদ ছড়াতে উদ্বুদ্ধ করায় লন্ডনে এক ব্যক্তিকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
শুক্রবার উলউইচ ক্রাউন আদালত মুন্না হামজা নামের ৫০ বছর বয়সী ওই ব্যক্তিকে তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে বলে রিপোর্ট করেছে এশিয়ান এক্সপ্রেস।
সন্ত্রাসমূলক কাজে প্রলুব্ধ করার তিনটি অভিযোগে টেরোরিজম অ্যাক্ট ২০০৬ এর সেকশন ১ (২) এর অধীনে তাকে এই সাজা দেয়া হয়। মুক্তি পাবার পর আরো এক বছর তাকে লাইসেন্সের উপরে থাকতে হবে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মুন্না বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কার্যক্রম প্রচার করছেন, জনগণের পুলিশের কাছে দায়ের করা এমন এক অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তার বিরুদ্ধে তদন্ত করে। এর পরেই মেটস কাউন্টার টেরোরিজম কমান্ড ২০১৮ সালের জুলাইয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে।
মেটস কাউন্টার টেরোরিজম কমান্ডের প্রধান, কমান্ডার রিচার্ড স্মিথ বলেন, "আমি জনগণের সদস্যদের তারিফ না করে পারছি না যে তারা মুন্নার আগ্রাসী কার্যক্রম সম্পর্কে আমাদের অবগত করেছেন। সে কারণেই আমরা তাকে এ ধরণের আরো সহিংসতামূলক পোস্ট বা তথ্য ছড়ানো থেকে বিরত রাখতে সক্ষম হয়েছি যা আমদের জনগণকে সুরক্ষা দিবে।"
স্মিথ জানান, তিনি আশা করেন এই ঘটনা জনগণকে বার্তা দিবে যে তারা সহিংসতা ও উগ্রবাদী ধারণা প্রচার করা যে কাউকেই শাস্তি দিতে সক্ষম।
"প্রতিবছর জনগণের কাছ থেকে আসা এমন হাজার হাজার রিপোর্ট সন্ত্রাসীদের হুমকি বন্ধ করতে পুলিশকে সাহায্য করে। আমি আরো বলবো যে সবাই এ ধরণের কর্মকান্ড সম্পর্কে সজাগ থাকবেন এবং সন্দেহজনক কিছু দেখলেই পুলিশকে জানাবেন। এমনকি অনলাইনেও যদি এমন কিছু চোখে পড়ে যা আপনার কাছে সঠিক লাগছে না, সেটিও আপনি জোর দিয়েই পুলিশকে জানান", বললেন স্মিথ।
২০১৮ সালের ১৭ মে একজন জনসদস্য মুন্নার পোস্ট সম্পর্কে পুলিশকে জানানোর পর পুলিশ তদন্ত করে বিপজ্জনক ৫ টি পোস্ট খুঁজে পায়। এই পোস্টগুলোতে মুন্না অন্যদের আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর উপর হামলা করতে।
২০১৮ এর ৪ জুলাই অফিসাররা মুন্নাকে তার সাউথ লন্ডনের কর্মস্থল থেকে গ্রেপ্তার করে । তার একটি কম্পিউটার, কিছু ফোন এবং মেমোরি স্টিক জব্দ করা হয় ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য। তখন মুন্না নিজের অপরাধ স্বীকার করেন এবং জামিনে মুক্তি পান।
কাউন্টার টেরোরিজম কমান্ডের একটি অংশ কাউন্টার টেরোরিজম ইন্টারনেট রেফারেল ইউনিট তার পোস্টগুলো বিশ্লেষণ করে জানায় যে এগুলো যুক্তরাজ্যের সন্ত্রাসবিষয়ক আইন ভঙ্গ করেছে।
২০১৯ সালের ২৮ জানুয়ারি মুন্নাকে আবার সন্ত্রাসবাদের উস্কানি দেয়ার চারটি অপরাধে টেরোরিজম অ্যাক্ট ২০০৬ এর ১(২) ধারায় অভিযুক্ত করা হয়।
উলউইচ কোর্টে ১৩ জানুয়ারি, বুধবার মুন্নার তিনটি অপরাধ প্রমাণিত হয়।
২০১৫'র ১ সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৫র ৩১ ডিসেম্বর (একটি চার্জ), ২০১৮র ৩ মে তে একটি এবং ২০১৮র ১৬ মে তে একটি, এই ছিল তার সেই তিনটি অপরাধ।