বাস মালিকদের জন্য ১০০ কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন তহবিল অনুমোদন
করোনা মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্ত বাস মালিকদের স্বল্প সুদে দীর্ঘ মেয়াদী ঋণ দিতে ১০০ কোটি টাকার একটি পুনঃঅর্থায়ন তহবিল (রিফাইন্যান্স স্কিম) গঠনের নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ।
রোববার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ৪১৪তম এবং চলতি বছরের চতুর্থ পরিচালনা পর্ষদ সভায় এই অনুমোদন দেওয়া হয়। সভায় মোট আলোচ্য বিষয়সূচি ছিল ১২টি।
এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল, করোনার অভিঘাত মোকাবেলায় পরিবহন খাতকে সহায়তার জন্য বাস মালিকদের অনুকূলে পুনঃঅর্থায়ন তহবিল অনুমোদন।
এই তহবিল থেকে ৬ শতাংশ সুদে ব্যাংক থেকে ঋণ পাবেন বাস মালিকরা। তবে কোন ধরনের বাস মালিক ঋণ পাওয়ার যোগ্য হবেন, কবে থেকে ঋণের জন্য আবেদন করবে পারবেন, আবেদনের নিয়ম কী হবে, এ সংক্রান্ত বিস্তারিত নীতিমালা পরে দেওয়া হবে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে।
পুনঃঅর্থায়ন পরিকল্পনার বিষয়ে জানতে চাইলে, ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্লাহ দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড-কে বলেন, "এই স্কিম থেকে ঋণ নিয়ে পরিবহন খাতের নতুন বিনিয়োগকারীরা উপকৃত হবেন।"
যারা বর্তমানে ব্যবসা করছে করোনায় তাদের যে ক্ষতি হয়েছে তা পুষিয়ে নেয়া সম্ভব হবে না। তার দাবি, মহামারিতে গেল বছর থেকে এখন পর্যন্ত পরিবহন মালিকরা ৫৮ হাজার কোটি টাকার ক্ষতির মুখে পড়েছেন।
তিনি বলেন, "যদি পরিবহনই বন্ধ থাকে তাহলে ঋণের টাকা নিয়ে আমরা কী করবো।"
এই পরিবহন ব্যবসায়ী বলেন, স্বল্প সুদে ঋণ দেওয়ার চেয়ে আগের নেওয়া ঋণের সুদহার কমানো হলে বরং তারা উপকৃত হবেন। এ বিষয়ে সরকারের কাছে প্রস্তাবও দেয়া হয়েছিল। পাশাপাশি পরিবহন খাতের জন্য আলাদা করে ৫ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজের দাবিও করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
শ্যামলী পরিবহন এর অংশীদার রমেন্দ্রনাথ ঘোষ ওরফে নোয়া ঘোষ দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড-কে বলেন, ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় আগের নেওয়া ঋণের কিস্তি অনেক মালিক পরিশোধ করতে পারেননি। তারা কিভাবে নতুন তহবিল থেকে ঋণ পাবেন সেই প্রশ্ন রাখেন এই পরিবহন ব্যবসায়ী।
তিনি বলেন, "ঋণের কিস্তি পরিশোধের সময় পেরিয়ে গেলে তহবিল থেকে ঋণ পাওয়া যাবে না, এমন শর্ত জুড়ে না দিলেই ভালো হবে। অন্যথায় এই তহবিল বাস্তবায়ন হবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ আছে।"
এর আগে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে চলচ্চিত্র শিল্পের উন্নয়নে ১ হাজার কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন তহবিল গঠন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এই তহিবল থেকে মেট্রোপলিটন এলাকায় ৫ শতাংশ হারে এবং মেট্রোপলিটন এলাকার বাইরে ৪ শতাংশ সুদহারে একজন মালিক নতুন হল নির্মাণ বা সংস্কারের জন্য সর্বোচ্চ ৫ কোটি টাকা ঋণ নিতে পারবেন। ঋণ পরিশোধের সময়সীমা সর্বোচ্চ ৮ বছর।