বিদ্যুৎ উৎপাদনে সব সময় ভর্তুকি দেয়া সম্ভব হবে না: প্রধানমন্ত্রী
বিদ্যুৎ ব্যবহারে সতর্ক ও অপচয় না করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার বলেছেন, বিদ্যুৎ উৎপাদনে সব সময় ভর্তুকি দেয়া সম্ভব হবে না।
তিনি বলেন, 'সব সময়ের জন্য ভর্তুকি দেয়া সম্ভব নয়, প্রত্যেকের এ বিষয়টি মনে রাখা উচিত।'
প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে সারাদেশে ১৮টি জেলার ৩১টি উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুতায়ন নিশ্চিতকরণে দুটি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, ১১টি গ্রিড সাব-স্টেশন, ছয়টি নতুন ট্রান্সমিশন লাইন উদ্বোধনের সময় এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রকৃত ব্যয় ভোক্তা স্তরের প্রতি ইউনিট দামের তুলনায় অনেক বেশি। সরকার এখনও ভোক্তা পর্যায়ে কম দামে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য ভর্তুকি দিচ্ছে।
তিনি বলেন, 'আমরা উৎপাদন ব্যয়ের তুলনায় ভোক্তাদের জন্য কম হারে বিদ্যুৎ সংযোগ দিচ্ছি।'
প্রধানমন্ত্রী বিদ্যুৎ ব্যবহারে সচেতনতা বজায় রাখার জন্য সকলকে অনুরোধ করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, সরকার দেশের উন্নয়নের জন্য ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে যাতে দেশের মানুষ তাদের অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা অর্জন করতে পারে।
'যত বেশি মানুষ তাদের অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা অর্জন করবে, তত বেশি তারা আমাদের যে মূল্য ব্যয় হচ্ছে (বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য) দিতে সক্ষম হবে,' যোগ করে প্রধানমন্ত্রী।
এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন, সরকারকে জনগণের জন্য সেই সক্ষমতা তৈরি করতে হবে।
তিনি বলেন, 'আমরা কেন দেশের মানুষের জন্য এই সুযোগগুলো দিচ্ছি তাতেই এটি নিশ্চিত হয়ে যায়।'
বঙ্গবন্ধুর কন্যা বলেন, বর্তমানে দেশের ৯৭ শতাংশ মানুষ ২৩ হাজার ৫৪৮ মেগাওয়াট বিদ্যুতের আওতায় রয়েছে এবং সরকার ২০২১ সালের মধ্যে এই অবস্থা শতভাগে বাড়ানোর লক্ষ্য নেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, 'আমরা ২০২১ সালের মধ্যে ২৪ হাজার মেগাওয়াট, ২০৩০ সালের মধ্যে ৪০ হাজার মেগাওয়াট এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা নিয়েছি।'
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার দেশ জুড়ে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করছে যেখানে শিল্পায়ন ও কর্মসংস্থান হবে। এর জন্য বিদ্যুতের প্রয়োজন হবে।
মানুষ যত বেশি ডিজিটাল বাংলাদেশ ব্যবহার করবে তত বেশি বিদ্যুতের প্রয়োজন হবে বলে, তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, 'মোট কথা আমরা পুরো দেশে অর্থনৈতিক উন্নতি করতে চাই, আমরা দেশের পল্লী এলাকায় উন্নয়ন করতে চাই, আমরা গ্রামীণ অঞ্চলে সকল সুযোগ সুবিধা দিতে চাই।'
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মস্থান টুঙ্গিপাড়ার (গোপালগঞ্জ) প্রতি বিএনপি-জামায়াত সরকারের অবহেলার কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, বর্তমান সরকার উন্নয়নের প্রক্রিয়ায় কোনো নির্দিষ্ট এলাকাকে কখনই অবহেলা করা হচ্ছে না
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দুটি নতুন নির্মিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মধ্যে একটি বগুড়ায় অবস্থিত।
১৯৭৫ এর ১৫ আগস্টের হত্যার কথা বলতে গিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, এই হত্যার মধ্য দিয়ে পুরো জাতি তার ভবিষ্যত আশা ও আকাঙ্ক্ষা হারিয়েছিল।
তিনি বলেন, সরকার দেশকে দারিদ্র মুক্ত করার জন্য জাতির পিতার আকাঙ্ক্ষা, আদর্শকে বাস্তবায়িত করতে কাজ করছে।
তিনি বলেন, 'আমাদের উদ্দেশ্য জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণ করার লক্ষ্যে প্রত্যেক মানুষের মুখে হাসি ফোটানো এবং তাদের আরও উন্নত জীবন নিশ্চিত করা।'
বিদ্যুৎ ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ তার কর্মকর্তাদের সাথে মন্ত্রণালয় থেকে সংযুক্ত ছিলেন এবং পাঁচটি জেলার সুবিধাভোগীরাও এই কার্যক্রমে সংযুক্ত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কিছু উপকারভোগীদের সাথে কথা বলেন।