বিমানে পেঁয়াজের প্রথম চালান আসছে মঙ্গলবার
দেশে পেঁয়াজের সরবরাহ ও মূল্য স্বাভাবিক রাখতে জরুরি ভিত্তিতে মিশর থেকে কার্গো বিমানযোগে পেঁয়াজ আমদানির যে ঘোষণা দিয়েছে সরকার তার প্রথম চালান মঙ্গলবার ঢাকায় এসে পৌঁছাবে।
শনিবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আব্দুল লতিফ বকসী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “এস আলম গ্রুপ বিপুল পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানি করছে, এটি তার প্রথম চালান। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য আমদানি কারক দের আমদানিকৃত পেঁয়াজ কার্গো উড়োজাহাজ যোগে ঢাকায় পৌছাবে।”
এর আগে শুক্রবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দেশে পেঁয়াজের সরবরাহ ও মূল্য স্বাভাবিক রাখতে জরুরি ভিত্তিতে কার্গো উড়োজাহাজে করে পেঁয়াজ আমদানি করার প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা হয়েছে এবং অল্প সময়ের মধ্যে পর্যাপ্ত পেঁয়াজ বাজারে সরবরাহ করা সম্ভব হবে।
সেখানে আরও বলা হয়েছিল, সমুদ্র পথেও আমদানিকৃত পেঁয়াজের বড় চালান বাংলাদেশের পথে রয়েছে, যা অতিশিগগিরই দেশে এসে পৌঁছাবে।
ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে টিসিবি’র মাধ্যমে সরাসরি তুরস্ক থেকে, এস আলম গ্রুপ মিসর থেকে, বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান আফগানিস্তান ও সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে জরুরি ভিত্তিতে কার্গো উড়োজাহাজযোগে পেঁয়াজ আমদানি করছে।
পরিস্থিতি মোকাবিলায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় হতে জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে জানিয়ে এতে বলা হয়, সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের কারণে টেকনাফ স্থলবন্দর, চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরসহ বিভিন্ন স্থানে পেঁয়াজ পরিবহনে কয়েকদিনের জন্য সমস্যা হয়েছিল।
কেউ পেঁয়াজ অবৈধ মজুত করলে, কারসাজি করে অতি মুনাফা অর্জনের চেষ্টা করলে বা অন্য কোনো উপায়ে বাজারে পেঁয়াজের সংকট সৃষ্টির চেষ্টা করলে তাদের বিরুদ্ধে আইন মোতাবেক কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে উল্লেখ করে বলা হয়, দেশের গোয়েন্দা সংস্থা ও আইনশৃ্খংলা বাহিনী এ বিষয়ে তৎপর রয়েছে।
ভারতের মহারাষ্ট্র ও অন্য এলাকায় বন্যার কারণে পেঁয়াজের ফলন ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় গত ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ ঘোষণা করে দেয়ার পর বাংলাদেশ মিয়ানমার থেকে এলসি এবং বর্ডার ট্রেডের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় পেঁয়াজ আমদানি শুরু করেছে। পাশাপাশি মিশর ও তুরস্ক থেকেও এলসি’র মাধ্যমে পেঁয়াজ আমদানি শুরু করা হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞতিতে বলা হয়, আমদানিকারকদের উৎসাহিত করতে পেঁয়াজ আমদানি ক্ষেত্রে এলসি মার্জিন এবং সুদের হার হ্রাস করা হয়েছে। স্থল ও নৌ বন্দরগুলোতে আমদানিকৃত পেঁয়াজ দ্রুত ও অগ্রাধিকার ভিত্তিতে খালাসের জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও বন্দর কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
দেশে পেঁয়াজের দাম ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ট্রেডিং করপোরেশন অফ বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে ট্রাক সেলে ঢাকা শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে ৩৫টি ট্রাকের মাধ্যমে প্রতি কেজি ৪৫ টাকা মূল্যে পেঁয়াজ বিক্রি করছে।
এছাড়াও, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাজার মনিটরিং টিম ঢাকার শ্যামবাজার ও চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের মতো বড় পাইকারি বাজারগুলোতে অভিযান জোরদার করেছে।
সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে তারা আশা করছেন, খুব কম সময়ের মধ্যে পর্যাপ্ত পেঁয়াজ বাজারে চলে আসবে এবং মূল্য স্বাভাবিক হয়ে আসবে।